Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হঠাৎ সীমিত সরবরাহ, চট্টগ্রামজুড়ে গ্যাস সংকট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ অক্টোবর ২০২৩ ২০:০৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: পূর্বঘোষণা ছাড়াই চট্টগ্রামে আকস্মিকভাবে গ্যাস সরবরাহ সীমিত করেছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। এতে চট্টগ্রাম জুড়ে তীব্র ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। গ্যাসের অভাবে নগরীর অধিকাংশ ফিলিং স্টেশন থেকে গাড়িতে সরবরাহ সীমিত হয়ে পড়ে। বাসাবাড়ি, হোটেল-রেস্তোঁরায়ও দিনের বেশিরভাগ সময় চুলা জ্বলেনি। তবে বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং দু’টি সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

কেজিডিসিএল’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কক্সবাজারের মহেশখালীর দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে পাওয়া গ্যাস গ্রাহকদের সরবরাহ করে থাকে কেজিডিসিএল। এর মধ্যে একটি টার্মিনালে জরুরি সংস্কার কাজের জন্য সরবরাহ সীমিত করা হয়েছে। ফলে গ্রাহকদের মধ্যে বিশেষত, গৃহস্থালি খাতে সাময়িক ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে, যা আরও সাতদিন অব্যাহত থাকবে।

জানতে চাইলে কেজিডিসিএল’র মহাব্যবস্থাপক (বিপণণ-উত্তর) প্রকৌশলী গৌতম চন্দ্র কুণ্ডু সারাবাংলাকে বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস আমরা পাচ্ছি না। এজন্য সরবরাহ কমে গেছে। এটা সাময়িক। মাঝে মাঝে হয়, আবার ঠিক হয়ে যায়।’

শনিবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীসহ কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের চাপ আস্তে আস্তে কমতে থাকে। সকাল ৮টার দিকে কিছু কিছু এলাকায় সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। আবার বিকেলে সেসব এলাকায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলেও অন্যান্য এলাকায় বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।

সন্ধ্যা ৬টার দিকে নগরীর দেওয়ানজী পুকুর পাড়, দেওয়ান বাজার, চকবাজার, আসকার দিঘীর পাড়সহ আশপাশের এলাকায় গৃহস্থালি গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। জামালখানে দুপুর ১টার পর সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। কাজির দেউড়িতে দিনভর বন্ধ থাকার পর বিকেল তিনটার দিকে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। এ ছিল নগরীর অধিকাংশ এলাকার তুলনামূলক চিত্র!

দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের বাসিন্দা অনলাইন উদ্যোক্তা পম্পা সেন শর্মা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি বিভিন্ন খাবারের আইটেম অনলাইনে অর্ডার নিয়ে বিক্রি করি। পূজো উপলক্ষে নাড়ু, সন্দেশসহ বেশকিছু অর্ডার পেয়েছিলাম। এখন গ্যাসের ক্রাইসিসে আছি। কিভাবে সাপ্লাই দেব বুঝতে পারছি না।’

বিজ্ঞাপন

কেজিডিসিএল’র কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল থেকে কেজিডিএল-কে নিয়মিত ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দেয়া হয়, যা আবাসিক ও শিল্পখাতে সরবরাহ করা হয়। মহেশখালী থেকে যাওয়া পাইপলাইনের গ্যাস আনোয়ারা থেকে কেজিডিসিএল’র পাইপলাইনে যুক্ত হয়, সেখান থেকে ৩২০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাস নিয়মিত পাওয়া যায়। কিন্তু শনিবার সকাল থেকে একটি টার্মিনাল এবং পাইপলাইনের সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। ফলে গ্যাস মিলছে ২৬০ মিলিয়ন ঘনফুট। ঘাটতি প্রায় ৬০ মিলিয়ন ঘনফুট।

কেজিডিসিএল’র সবচেয়ে বড় গ্রাহক হিসেবে বিবেচনা করা হয় শিকলবাহা বিদ্যুৎকেন্দ্র ও চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড ও কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানিকে। এ তিনটি খাতে গ্যাসের প্রয়োজন প্রায় ১২০ থেকে ১২৫ মিলিয়ন ঘনফুট। আরও ১৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বাকি গৃহস্থালি ও শিল্পখাতে সরবরাহ করে কেজিডিসিএল।

সংকটের মধ্যেও বিদ্যুৎকেন্দ্র ও দুটি সার কারখানায় সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। কিন্তু যে ১৮০ মিলিয়ন গ্যাস গৃহস্থালি ও অন্যান্য শিল্পখাতে সরবরাহ করা হয়, সেখানে ৫০ থেকে ৬০ মিলিয়ন ঘনফুটের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সেখানে সরবরাহ করা হচ্ছে ১৩০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো।

কেজিডিসিএল’র এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ’২৮ অক্টোবর পর্যন্ত সংস্কার কাজ চলবে। এই সময়ের মধ্যে গৃহস্থালিতে কিছুটা সংকট হবে। গৃহস্থালিতে চাহিদা বেশি থাকে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে। তখন একটু চাপ হবে। বাকিসময় প্রায় স্বাভাবিক থাকবে।’ ২৮ অক্টোবরের পর ফের স্বাভাবিক নিয়মে গ্যাস পাওয়া যাবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

গ্যাস সংকট সীমিত সরবরাহ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর