Saturday 14 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অষ্টমীতে মাতৃরূপে পূজিত ১১ কুমারী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:০৩ | আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:১৮

ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: শারদীয় দুর্গাপূজার অষ্টমীতে চট্টগ্রামের এক মণ্ডপে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১১ জন কুমারীকে পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে মায়ের আসনে বসিয়ে মাতৃরূপে দেবীর আরাধনা করেছেন পূজার্থী ভক্তরা।

রোববার (২২ অক্টোবর) অষ্টমীতে প্রতিবছরের মতো এবারও নগরীর পাথরঘাটা শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দির পূজামণ্ডপে শাস্ত্রমতে কুমারী পূজা সম্পন্ন হয়েছে। নগরীসহ আশপাশের এলাকার শত, শত ভক্ত-পূজার্থী কুমারী পূজা দেখতে মণ্ডপে জড়ো হয়েছিলেন।

বিজ্ঞাপন

মণ্ডপের প্রচার বিভাগের প্রধান বলরাম দাস সারাবাংলাকে জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় শ্যামানন্দ দাস মোহন্ত মহারাজের পৌরহিত্যে কুমারী পূজা সম্পন্ন হয়। পূজারী ছিলেন রুবেল দাস, তন্ত্রধারে দেব্রবত নাথ।

শাস্ত্রের বিধান অনুযায়ী, বিভিন্ন বর্ণ ও গোত্রের অনধিক ষোলো বছর বয়সী ১১ জন কুমারী দেবীর বিভিন্ন নামে পূজিত হয়েছেন। এরা চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষুদে শিক্ষার্থী।

ছবি: সারাবাংলা

ছবি: সারাবাংলা

১১ কুমারীর মধ্যে সেন্ট স্কলাস্টিকা স্কুলের পূজা দাশ ‘ভৈরবী’, অস্মিতা সেন ‘রুদ্রাণী’, নিভৃতি দত্ত ‘মালিণী’, আদ্রিতা বিশ্বাস ‘মালিণী’, কৃত্তিকা চৌধুরী ‘অপরাজিতা’, প্রীতি ধর ‘কুজিকা’ ও অদ্রিতা চৌধুরী ‘মালিণী’ নামে পূজিত হয়েছেন।

এছাড়া মেরন সান স্কুল অ্যান্ড কলেজের সুভদ্রা বিশ্বাস ‘কালসন্দর্ভা’, সেন্টমেরিস স্কুলের তিথি দাশ ‘মালিণী’, পৌষালি রায় চৌধুরী ‘কুজিকা’ এবং সেন্টজন্স স্কুলের আনমোল বণিক ‘কালসন্দর্ভা’ নামে পূজিত হয়েছেন।

পূজার্থীদের উদ্দেশে শ্যামানন্দ দাস মোহন্ত মহারাজ বলেন, ‘কুমারী আদ্যাশক্তি মহামায়ার প্রতীক। দুর্গার আরেক নাম কুমারী। গিরিরাজ বা হিমালয়কন্যা অসুরদের বিনাশ এবং ভক্তদের দুঃখ কষ্ট দূর করতে দুর্গার আগমন। কুমারী পূজার দার্শনিক তত্ত্ব হলো পরমার্থ দর্শন ও পরমার্থ অর্জন। বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে যে ত্রিশক্তির বলে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি, স্থিতি ও লয় ক্রিয়া সাধিত হচ্ছে, সে ত্রিবিধ শক্তিই বীজাকারে কুমারীতে নিহিত রয়েছে। কুমারী পূজা মানে প্রকৃতিকে পূজা করা। প্রকৃতি মানে নারী। সকল নারীর মধ্যে বিরাজিত রয়েছে দেবীশক্তি। কুমারী রূপেই মা দুর্গা বিশেষভাবে প্রকট হয়েছিল।’

বিজ্ঞাপন
ছবি: সারাবাংলা

ছবি: সারাবাংলা

‘সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মানবজাতির ক্ষেত্রে মায়ের নীরব অবদানের পরিশোধ করা অসম্ভব। নারী শক্তির সঠিক মূল্যায়নের অভাবে দেশ ও জাতির অবক্ষয় নেমে আসে। নারী মর্যাদায় সমাজ হয় কল্যাণমুখী। যেখানে নারীর সম্মানিত হন না, সেখানে সকল কাজই নিষ্ফল। নারীর সঠিক মূল্যায়নের অভাবে সমাজে অবক্ষয় নেমে আসে। যেখানে নারীরা নিরানন্দে থাকে সেখানে দেশ ও জাতির উন্নতি আশা নেই।’

শ্যামানন্দ দাস মোহন্ত মহারাজ আরও বলেন, ‘মাটির প্রতিমায় যে দেবীর পূজা করা হয়, তারই বাস্তবরূপ কুমারী পূজা। যে জাতির মধ্যে শুদ্ধা, শিক্ষিতা, করুণাময়ী মায়ের সংখ্যা বেশি সে মাতৃজাতির সন্তানেরা সমাজের আদর্শ সন্তান। কুমারীতে সমগ্রজাতির শ্রেষ্ঠ শক্তি, পবিত্রতা, সৃজনী ও পালনী শক্তি সকল কল্যানী শক্তি সুক্ষরূপে বিরাজিতা। কুমারী প্রতীকে জগৎজননীর পূজায় পরম সৌভাগ্য লাভ হয়। এই রূপ কুমারী সমগ্র জগতের বাক্যস্বরুপা, বিদ্যাস্বরুপ। তিনি এক হাতে অভয় এবং অন্য হাতে বর প্রদান করেন।’

সারাবাংলা/আরডি/এনএস

অষ্টমী কুমারী পূজা টপ নিউজ শারদীয় দুর্গাপূজা শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৩

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর