‘ক্ষমতার বাইরে গেলে জনগণ ঢিল মেরে মন্ত্রী-এমপিদের শেষ করে দেবে’
২৩ অক্টোবর ২০২৩ ২১:০২
ঢাকা: জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ক্ষমতার বাইরে গেলে জনগণ একটি ঢিল ছুড়লে শেষ হয়ে যাবেন। তাই পুলিশ ছাড়া চলতে পারবেন না। দেশবাসী কি আপনাদের আজীবন ক্ষমতায় রাখবে? এটি ভাবেন কেমন করে?
সোমবার (২৩ অক্টোবর) উপজেলা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘সম্প্রতি আমেরিকা গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ করেনি। সম্প্রতি জার্মানির এক প্রতিষ্ঠান ১২৯টি দেশের মধ্যে সার্ভে করে ২০২৩ সালের রিপোর্টে বলেছে ৪৮টি দেশে স্বৈরশাসন চলছে। তারা বলেছে বাংলাদেশ, লেবানন, মোজাম্বিক, নিকারাগুয়া ও উগান্ডা এই পাঁচটি দেশে নতুন করে স্বৈরশাসন চালু হয়েছে। বাংলাদেশে স্বৈরশাসন চলছে।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের নাম দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতাযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ। দেশে ভোগ বৈষম্য বেড়েছে, প্রান্তিক মানুষ আরও দরিদ্র হচ্ছে। গেল তিন মাসে ৪ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান কমেছে। ১ কোটি মানুষ ইউরোপের মতো জীবনযাপন করছে তাই দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। লুটপাটের জন্য মেগা প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। ১০৮ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ আর দেশি ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ ১০৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মানুষের মাথাপিছু ঋণ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। প্রবাসী আয়ের চেয়ে ব্যয় অনেক বেশি তাই রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। প্রতি মাসে ১ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। শ্রীলংকা যখন দেউলিয়া হয়েছিল তখন এমনভাবেই তাদের রির্জাভ কমেছিল। রিজার্ভ ১০ বিলিয়নে ঠেকলে দেশকে দেউলিয়া হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। তবে, শ্রীলংকা এখন আমাদের চেয়ে ভালো আছে।’
জি এম কাদের বলেন, ‘ডলারের দাম বাড়ছে তাই প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ছে। আইএমএফ এর হিসাবে দেশে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ। অন্য একটি সূত্র বলছে, দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ কোটি টাকা। ১ লাখ কোটি টাকা প্রতি বছর পাচার হচ্ছে। সরকার টাকা ছাপাচ্ছে, এতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে সেই সঙ্গে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। দেশের ব্যবসায় সিন্ডিকেট আছে, তারাই দেশ চালাচ্ছে। তারাই টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত।’
জি এম কাদের বলেন, ‘মালামালের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বলা হয় করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কথা। সারাবিশ্বে এখন মালামালের দাম কমছে। বিশ্ববাজারে গমের দাম কমেছে ৩৫ ভাগ, আমাদের দেশে আটার দাম বেড়েছে ২৫ ভাগ। পেঁয়াজের দাম কমেছে ৬৩ ভাগ, আমাদের দেশে ৯৩ ভাগ বেড়েছে। চিনির দাম বিশ্ববাজারে বেড়েছে ৩৩ ভাগ আর আমাদের বেড়েছে ৫৮ ভাগ। বিশ্ববাজারে আদার দাম বেড়েছে ১৭২ ভাগ আর আমাদের দেশে বেড়েছে ২০৫ ভাগ। সিন্ডিকেটের কারণেই আমাদের দেশে পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। এর সাথে জড়িত ওই ১ কোটি মানুষ।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষ অনেক কষ্টে আছে। দেশের ১৬ কোটি লোক কোনোভাবে বেঁচে আছে। এতে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। এখন দেশে মেগা প্রকল্প করা হচ্ছে দুর্নীতির সম্ভাব্যতা যাচাই করে। দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার জন্য দেশের ভয়াবহ অবস্থা। ১ কোটি মানুষ লাভবান হচ্ছে আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ১৬ কোটি মানুষ।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে