Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এক দিনে ১৩ সমাবেশ, টানটান উত্তেজনা ঢাকায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৫৬

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসতে আসতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক অঙ্গন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। অন্যদিকে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। দুই পক্ষের সমমনা দলগুলোও রাজপথের আন্দোলন-লড়াইয়ে সক্রিয়।

এ অবস্থায় আজ শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকায় সমাবেশ নিয়ে মুখোমুখি রাজনৈতিক বিভিন্ন পক্ষ। আওয়ামী লীগ আর বিএনপির আয়োজনে ‘মহাসমাবেশ’ রয়েছে আজ। এর বাইরে সমাবেশের ঘোষণা রয়েছে জামায়াতে ইসলামীরও। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমমনা বিভিন্ন দল ও জোটের সমাবেশ রয়েছে আরও ১০টি। সব মিলিয়ে গুনে গুনে ১৩টি সমাবেশ হওয়ার কথা আজ রাজধানীতে।

বিজ্ঞাপন

স্বাভাবিকভাবেই এসব সমাবেশ ঘিরে ঢাকাসহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনা। কী হবে সমাবেশে, কী ঘোষণা আসতে পারে, আওয়ামী লীগের সমাবেশ থেকে কী বার্তা আসবে, বিএনপি কী কর্মসূচি দেবে, কোন দলের সমাবেশে জনসমাগম বেশি হবে— এসব নিয়ে এখন সারাদেশের মানুষের দৃষ্টি ঢাকাতে। পাশাপাশি শনিবার দিনভর এসব সমাবেশের মধ্যে রাজধানীবাসী তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম কতটা সুষ্ঠুভাবে করতে পারবেন, তা নিয়েও চাপা দুশ্চিন্তা কাজ করছে তাদের মধ্যে।

এদিকে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি ঘটবে কি না, তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে সবার মনে। তবে ঢাকা মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত। সব সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে যে শেষ হয়, তা নজরদারিতে মোতায়েন থাকবে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য। পাশাপাশি অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও থাকবেন সতর্ক অবস্থানে। সমাবেশস্থল কেন্দ্রীয়ভাবে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরা) পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকবে।

বিজ্ঞাপন

যে ১৩ সমাবেশ আজ ঢাকায়

শনিবার তথা ২৮ অক্টোবর সবচেয়ে বড় দুটি সমাবেশ রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির। বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে দুপুর ২টায় সমাবেশ ডেকেছে আওয়ামী লীগ। একই সময়ে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে বিএনপি। দুটি দলই জানিয়েছে, সমাবেশে তাদের টার্গেট ১০ লক্ষাধিক মানুষকে সমবেত করা।

এদিকে ওই একই সময়ে শাপলা চত্বরে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ নানা শর্তে সমাবেশের অনুমতি দিলেও জামায়াতকে সে অনুমতি দেয়নি। জামায়াত নেতারা বলেছেন, অনুমতি না পেলেও তারা সমাবেশ করেই ছাড়বেন।

এর বাইরে আজ বিকেল ৩টায় কারওয়ান বাজারে এফডিসিসংলগ্ন নিজস্ব কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ডেকেছে কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। এই সময়েই মালিবাগ মোড়ে সমাবেশ ডেকেছে ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)।

এদিকে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকের মোড়ে আজ সমাবেশ রয়েছে দুটি। সকাল ১১টায় এখানে সমাবেশ করবে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের রাজনৈতিক দল গণ অধিকার পরিষদ। তিন ঘণ্টা পর দুপুর ২টায় সেখানেই সমাবেশ করবে ১২-দলীয় জোট। বিএনপির সমমনা দলগুলো নিয়ে মূলত এই জোটটি গঠিত।

এদিকে গণঅধিকার পরিষদের রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বাধীন অংশটিও সমাবেশ ডেকেছে আজকেই। পুরানা পল্টন কালভার্ট রোডে তাদের সমাবেশ হবে বিকেল ৩টায়। আবার বিএনপির সমমনা দল হিসেবে পরিচিত দলগুলোর আরেক জোট জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট দুপুর ২টায় সমাবেশ করবে পুরানা পল্টন আলরাজী কমপ্লেক্সের সামনে।

এ ছাড়া বিএনপির সঙ্গে সরকার পতনের দাবিতে বছরখানেক ধরে সংহতি জানানো গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য আজ সমাবেশ করবে দুপুর ১২টায়, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে। বিএনপির সঙ্গে গত কিছুদিন ধরেই যুগপৎ আন্দোলন করে যাওয়া গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশও একই স্থানে, বিকেল ৩টায়। অন্যদিকে গণফোরাম ও পিপলস পার্টি দুপুর ২টাতেই মতিঝিলে নটরডেম কলেজের উল্টো দিকে এবং লেবার পার্টি পুরানা পল্টন মোড়ে বিকেল ৪টায় সমাবেশ করবে।

মূল নজর বায়তুল মোকাররম-নয়াপল্টনে

একদিনে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের সব মিলিয়ে ১৩টি সমাবেশ হলেও দেশের মানুষের দৃষ্টি মূলত বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগ এবং নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশের দিকে। বিএনপি দীর্ঘ দিন ধরেই আজকের সমাবেশ নিয়ে প্রচার চালিয়ে আসছে। দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বিশ্বাস, ‘সরকার পতনের দাবিতে’ এই সমাবেশ থেকেই আসবে সরকার পতনের আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচির ঘোষণা। তবে বিএনপি ও এর সমমনা জোটের নেতারা জানিয়েছেন, ‘কঠোর’ কর্মসূচি দিতে এখনো কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তাদের। তবে সমাবেশ থেকে ‘লাগাতার কর্মসূচি’র ঘোষণা আসতে পারে।

এদিকে আওয়ামী লীগের সমাবেশ অনেকটাই বিএনপির সমাবেশের পাল্টা কর্মসূচি। দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করছেন, আজকের সমাবেশ থেকে বিএনপি নাশকতার পরিকল্পনা করে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে বিএনপি যেন কোনো ধরনের ‘বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি’ তৈরি না করতে পারে, তার জন্য সতর্ক থাকতেই যুবলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিয়ে ‘শান্তি ও উন্নয়ন মহাসমাবেশ’ করবে আওয়ামী লীগ।

২০ শর্তে অনুমতি ২ দলকেই

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমাবেশের অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠালে ডিএমপি তাদের বিকল্প ভেন্যু প্রস্তাবনাসহ বিভিন্ন তথ্য জানতে চায়। দুটি দলই অবশ্য পাল্টা চিঠিতে জানায়, বিকল্প কোথাও সমাবেশ করা তাদের পক্ষে সম্ভব না। শেষ পর্যন্ত ডিএমপি দুই দলকেই তাদের পছন্দের ভেন্যুতেই সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে। তবে এর সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে ২০টি শর্তও।

আওয়ামী লীগ বিএনপিকে যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে— আদালতে সাজাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি সমাবেশে বক্তব্য দিতে পারবেন না তার কোনো বক্তব্য সমাবেশে প্রচার করা যাবে না; অনুমোদিত স্থানের মধ্যেই সমাবেশের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে; দুপুর ১২টার আগে কোনোভাবেই জনসমাগম করা যাবে না; অনুমোদিত সময়ের মধ্যে (দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা) সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম অবশ্যই শেষ করতে হবে; সমাবেশে ব্যানারের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠিসোঁটা বা রডসদৃশ কোনো বস্তু ব্যবহার করা যাবে না।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক

ঢাকা মহানহগর পুলিশ বলছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের সমাবেশ ঘিরে তৃতীয় পক্ষের কেউ অথবা রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতায় কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যেন নাশকতা চালাতে না পারে সেজন্য পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরাও থাকবেন দায়িত্বে। থাকবেন বিজিবি ও আনসার সদস্যরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দুই হাজার আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যকে স্ট্যান্ডবাই থাকতে বলা হয়েছে।

ডিএমপি জানিয়েছে, রাজধানীতে আজ শনিবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবে ১৪ হাজার পুলিশ। আমিন বাজার, বসিলা, কেরানীগঞ্জ বাবু বাজার ও পোস্তগোলা ব্রিজের ওপারে কাজ করবে ঢাকা জেলা পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ অংশে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ ও গাজীপুর অংশে গাজীপুর মহানগর পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। সমাবেশের আশপাশে ডিএমপির বিপুলসংখ্যক রিজার্ভ পুলিশ ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অবস্থান করবে। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে র‌্যাবের পক্ষ থেকেও।

রাজধানীতে প্রবেশে কড়াকড়ি

সমাবেশের আগের দিন গতকাল শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) দিনভর রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে বাস, ট্রাক, ব্যক্তিগত গাড়ি, এমনকি সিএনজিচালিত অটোরিকশাও তল্লাশি করেছে পুলিশ। একদিকে গাবতলীতে ডিএমপি ও আমিন বাজারে ঢাকা জেলা পুলিশ চালিয়েছে তল্লাশি। একই চিত্র ছিল আব্দুল্লাহপুর ও টঙ্গীতেও। সেখানেও টঙ্গী ব্রিজের এক পাশে অবস্থান নেয় ডিএমপি, এক পাশে গাজীপুর মহানগর পুলিশ।

একই ধরনের তল্লাশি ছিল রাজধানীর আরেক প্রবেশমুখ বাবু বাজারেও। বাবু বাজার ব্রিজের কেরানীগঞ্জ অংশে শুক্রবার দিনভর তল্লাশি করেছে ঢাকা জেলা পুলিশ। অন্যদিকে ব্রিজ পেরিয়ে তাঁতীবাজার অংশে তল্লাশিতে সতর্ক ছিল ডিএমপি। আর যাত্রাবাড়ী অংশ দিয়ে ঢোকার আগেই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্টে জেলা পুলিশ কঠোরভাবে তল্লাশি চালিয়েছে। এর সঙ্গে র‌্যাব-১, র‌্যাব-২, র‌্যাব-৩, র‌্যাব-৪ ও র‌্যাব-১০-এর চৌকস টিম শুক্রবার দিনভর টহল দিয়েছে রাজধানীতে।

রাত থেকেই জমজমাট জনসভাস্থল

ডিএমপি দুপুর ২টার সমাবেশে ১২টার আগে জনসমাগম না করার শর্ত দিলেও সেই শর্ত মানতে দেখা যায়নি কোনো দলকেই। বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে যেমন আওয়ামী লীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন শুক্রবার রাত থেকেই, তেমনি নয়াপল্টনেও বিএনপি-যুবদলের নেতাকর্মীরা শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই জড়ো হতে শুরু করেছেন। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি শুক্রবার রাতে তুলনামূলকভাবে কম দেখা গেছে। বিপরীতে শুক্রবার মধ্যরাত নাগাদ নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে নয়াপল্টন জমজমাট হয়ে উঠেছে।

বিএনপি বলছে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, বিশৃঙ্খলা হলে জবাব দেবে আ.লীগ

বিএনপি নেতারা শুরু থেকেই বলে আসছেন, তারা শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ করতে চান আজ শনিবার। শুক্রবারও নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এর আগে রেইড হয়েছে, অ্যারেস্ট হয়েছে। মারপিট করেছে। মেরে ফেলেছে গুলি করে। তারপরও আমাদের জায়গা থেকে আমরা এতটুকু সরিনি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে করতে চাই। শান্তিপূর্ণভাবেই এ সরকারের পতন ঘটাতে চাই। তবে যদি সরকার ও রুলিং পার্টি, তারা যদি কোনো রকমের বাড়াবাড়ি করে, অত্যাচার-নির্যাতন করে, তার দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণ সরকারকেই বহন করতে হবে।’

তবে আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন, আজকের সমাবেশ থেকে বিএনপি বিশৃঙ্খলা করতে পারে। সেরকম কিছু হলে রাজপথে মোকাবিলা করার কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও প্রয়োজনে বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন তারা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা শান্তি সমাবেশ করছি। আমরা অশান্তি করতে চাই না, বিএনপি অশান্তি করতে চায়। ২০১৩-১৪ সালের অগ্নিসংযোগের কথা ভুলতে পারি না। তারা তো আগুন ছাড়া কথা বলে না। শান্তি তারা আসলে মন থেকে চায় কি না, এটা দেখতে হবে। বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুন

সারাবাংলা/টিআর

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগের সমাবেশ ডিএমপি ঢাকা মহানগর পুলিশ নাশকতার আশঙ্কা বিএনপি বিএনপির সমাবেশ মহাসমাবেশ সমাবেশ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর