বিজ্ঞাপন

লাগাতার কর্মসূচি আসছে

October 27, 2023 | 11:53 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকার পতনের এক দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে ‘লাগাতার কর্মসূচি’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ মঞ্চ থেকে ‘লাগাতার কর্মসূচি’ ঘোষণা হতে পারে। পরিস্থিতি বুঝে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে কর্মসূচির ধরন ঠিক করবে দলটি। বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

দলীয় সূত্রমতে, শেষ পর্যায়ে এসে কী ধরনের কর্মসূচি দেওয়া যায়, সেটা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। ওইসব বৈঠকে অনেকগুলো ‘বিকল্প’ হাতে রেখে কর্মসূচির ‘ছক’ আঁটা হয়েছে। ‘এই টা হলে এই টা’— কর্মসূচির ব্যাপারে এমন পরিকল্পনা সামনে রেখে এগোচ্ছে বিএনপি। অর্থাৎ, পরিস্থিতি যেভাবে বদলাবে, কর্মসূচির গতি-প্রকৃতিও সেভাবে বদলাবে। এমনও হতে পারে, সভামঞ্চ থেকেই কর্মসূচির ধরন নির্ধারণ করবেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

বিএনপির সিনিয়র নেতারা পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা জোট ও দলের নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাতে গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। এর আগে, সমমনা ১২ দলীয় জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি দায়িত্বশীল নেতারা। বৈঠকগুলোতে লন্ডন থেকে স্কাইপে যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

কিন্তু ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ থেকে কী ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে? তা নিয়ে বিএনপি এবং সমমনা জোটের নেতারা মুখ না খুলছেন না। তবে, নানা সূত্র থেকে জানা গেছে, আগামী ৩০ অক্টোবর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শুরু হতে পারে চলমান এক দফা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্ব।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে সমমনা জোটের অন্যতম নেতা বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহদাত হোসেন সেলিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘মিটিংগুলোতে কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে অনেকগুলো বিষয় এসেছে। কিন্তু কোনোটাই চূড়ান্ত না। পরিস্থিতি বুঝে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে কর্মসূচির ধরন ঠিক হবে। তবে, যে কর্মসূচিই আসুক, সেটা হবে লাগাতার।’

সরকারি অফিস-আদালত ঘেরাও, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান, এ ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে— আভাস দেন শাহদাত হোসেন সেলিম।

দলীয় সূত্রমতে, মূলত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। সরকারের পক্ষ থেকে সেদিন যদি বাধা দেওয়া হয় এবং এর প্রেক্ষিতে সংঘাত সৃষ্টি হয়, তাহলে কঠোর কর্মসূচিতে যেতে পারে বিএনপি। এ ক্ষেত্রে সচিবালয় ঘেরাও থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও, ঢাকা অবরোধ এবং সারা দেশে হরতালের মতো কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে বিএনপি। তবে, একটা বিষয় মোটামুটি চূড়ান্ত, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ থেকে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এবার কোনো আল্টিমেটাম দেবে না বিএনপি।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার আর কোনো বিরতি দেব না। লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে এক দফা দাবি মানতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।’

দলীয় সূত্রমতে, এবার যেহেতু রাজধানীর পাশাপাশি জেলা শহরগুলোতে কঠোর আন্দোলন হবে, সেহেতু মহাসমাবেশে যোগ দিতে ঢাকায় আসা নেতা-কর্মীদের এলাকায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ রেখেই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। কর্মসূচি ঘোষণার পর কোনো বিরতি ছাড়াই চলতে থাকবে। সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি চলবে।

অবশ্য মহাসমাবেশ থেকে একবারে কর্মসূচি ঘোষণা, নাকি ধাপে ধাপে ঘোষণা করা হবে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত কর্মসূচি অনেকটাই চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। সামনে আর কোনো ঈদ-রোজা, পূজা-পার্বণ না থাকায় লাগাতার আন্দোন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সামনে কোনো প্রতিবন্ধকতা দেখছে না দলটি। সব ধরনের প্রস্তুতি শেষে এখন মাঠে নামার অপেক্ষায় তারা।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন আর পেছনে ফেরার সুযোগ নাই। মহাসমাবেশ থেকে যে কর্মসূচিই ঘোষণা করা হোক, তা সফল করার জন্য বিএনপির নেতা-কর্মী এবং সারা দেশের মানুষ বদ্ধপরিকার।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/এনইউ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন