বিজ্ঞাপন

আয়বর্হিভূত সম্পদ: গ্রেফতার দেখানো হলো আসলাম চৌধুরীকে

May 5, 2024 | 7:36 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রায় ১৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের একটি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ওই মামলায় আসলাম চৌধুরীর জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৫ মে) চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আবদুল আজিজ ভূঁইয়া দুদকের আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ দিয়েছেন। শুনানির জন্য অন্য মামলায় কারাবন্দি আসলাম চৌধুরীকে কুমিল্লা কারাগার থেকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়েছিল।

গত ২৮ এপ্রিল আসলাম চৌধুরীকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর জন্য তদন্ত কর্মকর্তা ‍দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম আদালতে আবেদন করেছিলেন। রোববার ওই আবেদনের শুনানি হয়।

দুদকের কৌঁশুলি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু সারাবাংলাকে বলেন, ‘শুনানিতে আসলাম চৌধুরীর পক্ষে আইনজীবী তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার যুক্তি তুলে ধরেন। আদালত সেটা নাকচ করলে আইনজীবী তার জামিনের আবেদন করেন। আদালত সেটাও নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’

বিজ্ঞাপন

১৫ কোটি ২৬ লাখ ৯২ হাজার ৪১৬ টাকার জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জন করে দখলে রাখার অভিযোগে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, দুদক অনুসন্ধানে তথ্য পেয়েছে, ২০০১ সালের ২১ মার্চ থেকে ২০১১ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত আসলাম চৌধুরী চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি, নডালিয়া, সলিমপুর, সোনাইছড়ি, দক্ষিণ সোনাইছড়ি, মসজিদ্দা, বাডাখালি, বাকখালি, বাঁশখালী, কলাবাড়িয়া, টেরিয়াইল, নয়াখালী, কৃষ্ণপুর, ভাটেরখীল, কাটগড়, গুলিয়াখালী, মুরাদপুর ও বোয়ালিয়া মৌজায় ১৪৬টি সাফ কবলার মাধ্যমে মোট ১৬ কোটি ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ১৮৫ টাকার স্থাবর সম্পদের মালিকানা অর্জন করেন।

এছাড়া আসলাম চৌধুরী ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যবসায় ও অংশীদারি প্রতিষ্ঠানে পুঁজি বিনিয়োগ, বিভিন্ন ব্যাংক-বীমা প্রতিষ্ঠানে একাধিক হিসাব নম্বরে জমা করা অর্থ, আসবাবপত্র ও স্বর্ণালঙ্কার মিলিয়ে ৩৬২ কোটি ৭১ লাখ ৩৮ হাজার ২৮০ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেন।

বিজ্ঞাপন

এর মধ্যে ঋণ বাদে নিট সম্পদের মূল্য ৩৩ কোটি ৫৪ লাখ ৭৭ হাজার ৬১৬ টাকা। ১৯৯৭-৯৮ সাল থেকে ২০২২-২৩ সাল পর্যন্ত তিনি আয়কর নথিতে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ৭৩ হাজার ৮৩১ টাকা আয় প্রদর্শন করেছেন। পারিবারিক ভরণপোষণসহ আনুষাঙ্গিক খাতে ব্যয় দেখিয়েছেন ৮ কোটি ২০ লাখ ৫৫ হাজার ৯১ টাকা। এর ফলে তার প্রদর্শিত সঞ্চয়ের পরিমাণ ১৯ কোটি ৩০ লাখ ১৮ হাজার ৭৪০ টাকা।

কিন্তু তিনি ঘোষিত সঞ্চয়ের মধ্যে এক কোটি দুই লাখ ৩৩ হাজার ৫৪০ টাকার আয়ের সপক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ দুদককে দেখাতে পারেননি। এর ফলে তার গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮ কোটি ২৭ লাখ ৮৫ হাজার ২০০ টাকা।

নিট সম্পদ ৩৩ কোটি ৫৪ লাখ ৭৭ হাজার ৬১৬ টাকার বিপরীতে গ্রহণযোগ্য আয় ১৮ কোটি ২৭ লাখ ৮৫ হাজার ২০০ টাকা হিসেব করলে আসলাম চৌধুরীর জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫ কোটি ২৬ লাখ ৯২ হাজার ৪১৬ টাকা। ২০০১ সালের ২১ মার্চ থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুনের এ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন, যা এখন তদন্তাধীন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৫ মে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে গ্রেফতার হন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী। ইসরাইলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তার বিরুদ্ধে ‘বাংলাদেশের সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করার’ অভিযোগ আনা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহ-নাশকতা-দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে আট বছর ধরে কারাবন্দি আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা আছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/এমও

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন