Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সারাদিন বন্ধ, বিকেল থেকে ছেড়েছে দূরপাল্লার বাস

রাজনীন ফারজানা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৯ অক্টোবর ২০২৩ ২০:২০

ঢাকা: বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতালে রোববার (২৯ অক্টোবর) সারাদিন বন্ধ থাকার পর বিকেল থেকে রাজধানী ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়েছে। সায়েদাবাদ, আরামবাগ ও ফকিরাপুল বাস স্টপেজগুলো ঘুরে দেখা যায়, সায়েদাবাদ থেকে বিকেল চারটার সময় বাস চলাচল শুরু হলেও আরামবাগ ও ফকিরাপুল থেকে শুরু হয় সন্ধ্যার পর।

বিকেল তিনটার দিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে যেয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন কাউন্টারের সামনে ঢাকা থেকে দূরপাল্লাগামী বাস দাঁড়িয়ে আছে। কাউন্টারের লোকজন ডেকে ডেকে যাত্রী খুঁজছেন। তবে বাসগুলোতে যাত্রী তেমন দেখা গেল না। কয়েকটি কাউন্টারে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকে বন্ধ থাকার পর বিকেল চারটা থেকে দূর পাল্লাগামী বাস চলাচল শুরু হবে।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা থেকে ফেনীগামী ড্রিম লাইন ও স্টার লাইন পরিবহনের সায়েদাবাদ কাউন্টারের ইনচার্জ সুমন জানান, সারাদিন বন্ধ থাকার পর বিকেল তিনটা থেকে তাদের পরিবহনের দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হচ্ছে। তবে তেমন যাত্রী পাচ্ছেন না।

হরতালে ক্ষতি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে সুমন বলেন, ‘একদিন বন্ধ থাকলে গাড়ি প্রতি দৈনিক ক্ষতি ১৮ হাজার টাকা। প্রতিদিন তাদের কোম্পানির ১০০ থকে ১২০টি বাস ঢাকা থেকে ছাড়ে।’

সেনবাগ, চৌমুহুনি রূটে চলাচলকারী কে কে ট্রাভেলসেরও একটি বাসও সকাল থেকে ছেড়ে যায়নি বলে জানান কলারম্যান রনি। তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে দিনে বিশটা বাস ছাড়লেও আজ একটিও ছাড়েনি। বিকেল সাড়ে চারটা থেকে চলাচল শুরু হবে। এতে বাসপ্রতি দিনে তাদের ক্ষতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।’

সায়েদাবাদে হিমাচল পরিবহনের দূরপাল্লাগামী বাসের কাউন্টারে জানা যায় তারাও বিকেল থেকে বাস ছাড়ছেন। দিনে পঞ্চাশটি বাস যায় ঢাকা থেকে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, রামগতি, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, যশোর, বেনাপোল ও কলকাতার উদ্দেশে।

বিজ্ঞাপন

আজ বিকেল থেকে পাঁচ/ছয়টি বাস ছাড়তে পারে বলে জানান কাউন্টার ম্যানেজার নুর আলম। সারাদিন এভাবে বাস বন্ধ থাকায় হিমাচলের দৈনিক আনুমানিক ক্ষতি ছয় থেকে সাত লাখ টাকা বলে জানান তিনি।

ফকিরাপুল ও আরামবাগের দূরপাল্লাগামী বাস কাউন্টারের অনেকগুলোই দেখা যায় বন্ধ। বিভিন্ন কাউন্টারে কথা বলে জানা যায় সন্ধ্যার পর বাস ছাড়বে। তবে রয়েছে যাত্রী সংকট। প্রি-বুকিংয়ের সংখ্যাও নগন্য।

চট্টগ্রামের বাসিন্দা সায়েম দুবাই থেকে ঢাকা এসেছেন। আরামবাগে চট্টগ্রামগামী বাস খুঁজছিলেন বিকেল সাড়ে চারটার দিকে। এক কাউন্টার থেকে অন্য কাউন্টারে যাচ্ছেন বিকেলে ছাড়ার মত বাস খুঁজতে। কিন্তু অধিকাংশ কাউন্টারেই বাস ছাড়বে সন্ধ্যার পর বা রাতে। হরতালে বিপাকেই পড়েছেন তিনি।

সেন্ট মার্টিন পরিবহনের আরামবাগ কাউন্টারের অফিস স্টাফ হাবিবুল বাশার রানা বলেন,  ‘রাত আটটার সময় প্রথম বাস ছাড়বে। দিনে ছয় থেকে সাতটি বাস ছাড়লেও আজ একটিও ছাড়েনি।’

একই চিত্র দেখা গেল, শ্যামলী, সোহাগ, গ্রিনলাইন, রয়েল, রবি এক্সপ্রেসসহ একাধিক চট্টগ্রামগামী বাসে। গ্রিনলাইন সকাল থেকে একটিও বাস ছেড়ে না গেলেও রাতে ছাড়বে।

শ্যামলী পরিবহনের সেলস এক্সিকিউটিভ মোহাম্মদ দিদার হোসেন বলেন, ‘সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেট পর্যন্ত একঘণ্টা পরপর গাড়ি ছাড়ে। এতে দিনে আনুমানিক পঞ্চাশটি গাড়ি চলাচল করে। কিন্তু আজ একটি বাসও ছেড়ে যায়নি।’

শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশ ছিল। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নয়া পল্টন, কাকরাইল, শান্তিনগর, রাজারবাগ, সেগুনবাগিচা এলাকায় পুলিশ ও বিএনপিকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। আগুন দেওয়া হয় একাধিক গণপরিবহনে।

বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর আজ রোববার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দেয় বিএনপি। পরে জামায়াতে ইসলামীও হরতাল ঘোষণা করে। হরতালের দিন সকাল থেকে বেশ কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়।

সকাল থেকে রাজধানীতে দূর পাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও সীমিত পরিসরে রাজধানীর আভ্যন্তরীন বাস চলাচল করতে দেখা যায়। রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি খুব কম চোখে পড়লেও রিকশা, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা যায়। এ ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পুলিশের অবস্থান ও রাস্তায় রাস্তায় বিজিবির টহল চোখে পড়ে।

সারাবাংলা/আরএফ/একে

আওয়ামী লীগ দূরপাল্লার বাস বাস বিএনপি যাত্রী হরতাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর