ফিলিস্তিনিদের জন্য সেবা খাত খুলে দেওয়ার দবি প্রধানমন্ত্রীর
৩০ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:০০
ঢাকা: ফিলিস্তিনিদের জন্য খাবার, ওষুধ কোনো কিছুই দিতে দিচ্ছে না; খাদ্য-পানি সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে অমানবিক যন্ত্রণা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি অন্তত সেখানকার সেবা খাতটা খুলে দেওয়া দাবি জানিয়েছেন, যাতে মানুষগুলো বাঁচতে পারে। পাশাপাশি মুসলিম বিশ্বের সবাইকে এক হয়ে এই অপরাধের প্রতিবাদ করারও আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরাইল কর্তৃক পরিচালিত নৃশংস গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আনা প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ দাবি জানান। পরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনবরত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, বিশেষ করে নারী-শিশু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্যালেস্টাইনের জনগণ অমানবিক কষ্টের মধ্যে জীবন যাপন করছে। সবচেয়ে জঘন্য কাজ হয়েছে ‘আল আহলে আল আরাব ব্যাপটিস’ হাসপাতাল হামলা। এই হাসপাতালে সেখানকার নারী-শিশুরা আশ্রয় নিয়ে মনে করেছিল নিরাপদ থাকবে। এ ছাড়া অনেকেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই ইসরায়েলের বিমান হামলা। জঘন্য এই হামলার নিন্দা করার ভাষা নেই। হাসপাতালে হামলা-নিন্দা জানাচ্ছি। হাসপাতালের মতো জায়গায় কি করে তারা হামলা করতে পারল? এই ধরণের ঘটনা আমরা কখনই মেনে নিতে পারি না।’
তিনি বলেন, ‘এর আগে ৯৫ সালে হেবরনে হামলা করেছিল। তখন আমরা বিরোধীদলে ছিলাম। আমরা সংসদে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ক্ষমতায় থাকা বিএনপি আলোচনা করতে দেয়নি। আমরা সংসদ থেকে বেরিয়ে চলে গিয়েছিলাম। আমরা ইতোমধ্যে শুকনো খাবার পাঠিয়েছি। সেগুলো আমরা মিশরে পৌঁছে দিয়েছি, তারা ফিলিস্তিনে পৌঁছে দেবে। সব থেকে দুর্ভাগ্য হলো- খাবার, ওষুধ কোনো কিছুই দিতে দিচ্ছে না। খাদ্য, পানি সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে অমানবিক যন্ত্রণা দেওয়া হচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানবাধিকারের কথা বলা হয়; অথচ সেখানে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। এই মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করতে হবে। কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘন হলে আমরা তার প্রতিবাদ করি- এটাই আমাদের নীতি। আমাদের নীতি সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। কিন্তু ইসরাইল যে ঘটনা ঘটাচ্ছে ফিলিস্তিনি জনগণের উপর- এটা কখনও মেনে নেওয়া যায় না।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য দাবি সেটা যেন মেনে নেওয়া হয়। তারা যেন তাদের রাষ্ট্র ফিরে পায়। আর সেখানকার সেবাটা খুলে দেওয়া উচিত। এইভাবে শিশুদের কষ্ট দেওয়া, এটা কখনই আমরা মেনে নিতে পারি না। আমার আহ্বান থাকবে মুসলিম বিশ্বের সবাই যেন এক হয়ে এই অন্যায়, অপরাধের প্রতিবাদ করে। ফিলিস্তিনিরা যেন তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পায়।’
আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন- আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আবু সাঈদ আল মাহম্মুদ স্বপন, ওয়াকার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদ’র হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদ, ডা. রুস্তম আলী ফরাজী, বিরোধী দলের চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম