বিএনপি-জামায়াতের দ্বিতীয় দফার অবরোধ শুরু
৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩২ | আপডেট: ৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:২৫
অবরোধের দিন সকাল থেকেই রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ, ছবি: সারাবাংলা
ঢাকা: ২৮ অক্টোবর পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের পর বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতাল ও প্রথম দফা অবরোধের পর দ্বিতীয় দফায় ডাকা অবরোধ শুরু হয়েছে আজ। রোববার (৫ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে দুই দিনের এই অবরোধ শুরু হয়। বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা জানিয়েছেন, এবারের অবরোধ হবে আরও বেশি কঠোর। সড়ক, রেল ও নৌ পথে এবার নেতা-কর্মীরা আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক হবে এবং অবরোধ সফল হবে।
তবে পুলিশ বলছে, অবরোধে কাউকে মাঠে নামতে দেওয়া হবে না। ঢাকাসহ সারাদেশে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর থাকবে। কোথাও কোথাও বিজিবি ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা থাকবে। অবরোধের নামে যারা জ্বালাও পোড়াও করবে তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। গতকাল শনিবার (৪ নভেম্বর) অবরোধ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) প্রথম দফা তিন দিনের অবরোধ শেষ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী দ্বিতীয় দফায় (৫ ও ৬ নভেম্বর) অবরোধের ঘোষণা দেন। ওইদিন রিজভী বলেন, অবরোধ কঠিন থেকে কঠিন হবে। বিএনপির আশা সারাদেশের মানুষ এতে সারা দেবেন।

আবরোধের আগের দিন রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে, ছবি: সারাবাংলা
একইদিন জামায়াতের পক্ষ থেকেও দুই দিনের (৫ ও ৬ নভেম্বর) অবরোধ ডাকা হয়। জামায়াত গণমাধ্যমকে জানায়, সরকারের জুলুম, নির্যাতন, দমন-পীড়ন বেড়ে যাওয়া, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি এবং হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এই অবরোধ ডাকা হয়।
প্রথম দফার অবরোধে কিশোরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের সময় গুলিতে দুই বিএনপি কর্মী নিহত হয়। তার আগে গত ২৮ অক্টোবর সমাবেশের দিন নয়াপল্টনে সংঘর্ষে এক যুবদল কর্মী নিহত হন। একই দিন বিএনপি নেতা-কর্মীদের হাতে পুলিশের এক সদস্য নিহত হন।
বিএনপির দাবি, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত সাংবাদিকসহ মোট ১০ জন নিহত হয়েছেন। আর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২৮ অক্টেবরকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারাদেশে মারা গেছে মোট পাঁচজন। এরমধ্যে একজন পুলিশ সদস্য, একজন সাংবাদিক ও তিনজন বিএনপি কর্মী।
অন্যদিকে গত ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ ও সমাবেশ পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে ১১ জন হতাহতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

অবরোধের দিন সকাল থেকেই রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ, ছবি: সারাবাংলা
গণমাধ্যমে পুলিশের পাঠানো তথ্য থেকে জানা যায়, গত ২২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় ৬ হাজার। এরমধ্যে ঢাকায় রয়েছে ২ হাজার ৫০০ মতো। গ্রেফতারদের মধ্যে সবাই বিএনপি জামায়াতের কর্মী রয়েছে। এদের কেউ পুরনো মামলার পলাতক আসামি আবার কেউ নতুন মামলার আসামি। তবে ৯০ শতাংশ আসামি জ্বালাও পোড়াও এবং পুলিশ হত্যা মামলার।
এদিকে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর সমাবেশের দিন, হরতালের দিন এবং প্রথম দফার অবরোধে ঢাকাসহ সারাদেশে মোট ৮০টির মত আগুনের তথ্য পেয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকায় মোট ৪০টি আর বাকি ৪০টি ঢাকার বাইরের। এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পায়নি সংস্থাটি।
সারাবাংলা/ইউজে/একে/এনএস