যে ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার রেলপথ খুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী
৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৫২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: লাল-সবুজ ঝকঝকে ১৯ বগি নিয়ে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন ছাড়ল একটি ট্রেন। ছুটল কক্সবাজারের দিকে। নতুন এই ট্রেনে চড়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১১ নভেম্বর খুলে দেবেন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ। এর মধ্য দিয়ে শুরু হবে ঝিনুকের শহরে স্বপ্নের ট্রেনযাত্রা।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ত্যাগ করে ট্রেনটি।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রীর জন্য যাওয়া ট্রেনটি আপাতত কক্সবাজারের রামু স্টেশনে থাকবে। উদ্বোধনের আগে সেটিকে কক্সবাজার স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হবে। কক্সবাজার থেকে প্রধানমন্ত্রী এ ট্রেনে চড়ে রামু স্টেশনে আসবেন। আপাতত প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি এভাবেই নির্ধারিত আছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘এটি আমাদের একটি স্পেশাল ট্রেন। এর জন্য ১৫টি বগি নির্ধারিত আছে। আরও চারটি বগি যুক্ত করে ১৯টি করা হয়েছে, যদি কোনো সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে পরিবর্তন করার জন্য। ট্রেনটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার আগ পর্যন্ত স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উদ্বোধনের দিন ট্রেনের সামনে-পেছনে দুটি ইঞ্জিন যুক্ত থাকবে। উদ্বোধনের ঠিক আগে রেললাইনে কোনো সমস্যা আছে কি না সেটা দেখতে একটি পাইলট ইঞ্জিন দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। এরপরই মূলত প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে উঠবেন এবং সেটি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কক্সবাজার থেকে রামু আসবে। আমাদের প্রস্তুতি শেষ। এখন উদ্বোধনের পালা।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর ১ ডিসেম্বর থেকে বাণিজ্যিকভাবে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরুর কথা রয়েছে।
এর আগে, রোববার (৫ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রথমবারের মতো একটি ট্রেন কক্সবাজার পৌঁছে। রেলপথ পরিদর্শন অধিদফতরের পরিদর্শক রুহুল কাদের আজাদের নেতৃত্বে একটি পরিদর্শন টিম নিয়ে ট্রেনটি কক্সবাজারে যায়।
২০১০ সালে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কক্সবাজারে যাতায়াত সহজ করা। পাশাপাশি মিয়ানমারসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করা। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের জন্য চট্টগ্রামের দোহাজারী পর্যন্ত আগে থেকেই রেললাইন আছে।
রেলপথ নির্মাণে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ের মধ্যে ১২ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং বাকি খরচ বহন করেছে বাংলাদেশ সরকার।
২০১৮ সালের জুলাইয়ে সরকারের অগ্রাধিকার এই প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুই ভাগে কাজটি করেছে।
প্রকল্পের আওতায় ১০০ কিলোমিটার রেললাইন ছাড়াও কক্সবাজার সদর, রামু, ইসলামাবাদ, ডুলাহাজরা, চকরিয়া, হারবাং, লোহাগড়া, সাতকানিয়া ও দোহাজারীতে মোট ৯টি স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রকল্পটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ কক্সবাজারের ‘আইকনিক’ ঝিনুক আকৃতির স্টেশন।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম
কক্সবাজার টপ নিউজ ট্রেনযাত্রা প্রধানমন্ত্রী রেললাইন শেখ হাসিনা