চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ভবনে বেদম পিটুনির শিকার হয়েছেন এক যুবক। সিডিএ কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গণপূর্ত সচিবের নাম ভাঙ্গিয়ে ওই যুবক নিয়মিত সেখানে গিয়ে বিভিন্ন ‘খবরদারি’ করেন। যুবকের দাবি, গণপূর্ত সচিবের নির্দেশেই তিনি সিডিএ ভবনে যান। গণপূর্ত সচিব জানিয়েছেন, ওই যুবকের সঙ্গে তার পরিচয় আছে।
বুধবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর কোতোয়ালী মোড়ে সিডিএ ভবনের তৃতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম ওবায়দুল হক।
মারধরের শিকার ইমরান হাসান (৩৪) নগরীর চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সোলাইমানের ছেলে। ইমরানের দাবি, তার বাবা নগরীর জামালখান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
সিডিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইমরান হাসান গণপূর্ত সচিব সৈয়দ ওয়াসি উদ্দিনের ঘনিষ্ঠজন পরিচয় দিয়ে একবছর ধরে নিয়মিত তাদের কার্যালয়ে ঘোরাফেরা করেন। সচিবের নির্দেশের কথা বলে কর্মকর্তাদের কাছে গিয়ে বিভিন্ন কাজের তদারকির পাশাপাশি কৈফিয়তও তলব করেন। মঙ্গলবারও তিনি সেখানে যান।
একইভাবে বুধবার সকাল থেকে সিডিএ ভবনে কয়েকজন কর্মকর্তার কাছে যান ইমরান। তিনি চেয়ারম্যানের দফতরের সামনে গিয়ে কক্ষের বাইরে থেকে ছবি তোলেন। চেয়ারম্যান অফিসে অনুপস্থিত কেন, এমন কথাবার্তা বলেন। বেলা ১২টার দিকে কয়েকজন কর্মকর্তার নাম ধরে তাদের বদলির হুমকি দেন। বিষয়টি জানাজানির পর কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। কয়েকজন কর্মী তাকে তৃতীয় তলায় নিয়ে পিটুনি দেন। প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার কক্ষে নিয়ে যান।
সিডিএ’র ইমারত পরিদর্শক আবদুর রশিদ বলেন, ‘ইমরান হাসান আজ (বুধবার) সকাল থেকে ঘুরে ঘুরে বেশ কয়েকজন প্রকৌশলী ও পরিদর্শকের প্রতিদিনের কাজের অগ্রগতি জানতে চান। দুপুরে আমার কাছে এসে দৈনন্দিন কাজের হিসাব জানতে চান। তখন বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। তিনি ঔর্দ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করলে কয়েকজন কর্মী প্রতিবাদ করেন।’
ইমরান হাসান সাংবাদিকদের জানান, ২০-৩০ জন লোক তাকে ঘিরে ধরে মারধর করেন। এতে তার পরনের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে যায়। খবর পেয়ে দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
কোতোয়ালী থানার ওসি এস এম ওবায়দুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিডিএ ভবনে এক যুবককে পেটানো হচ্ছে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়েছিল। কিন্তু ততক্ষণে ওই যুবককে তার লোকজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে যুবক আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন, চিকিৎসা শেষে থানায় এসে তিনি মামলা করবেন। তিনি এখনও আসেননি।’
ইমরান হাসান বলেন, ‘গণপূর্ত সচিব সৈয়দ ওয়াসি উদ্দিন স্যার আমাকে নিয়মিত সিডিএর কাজ তদারকির নির্দেশ দেন। সেজন্য আমি সিডিএতে আসি। নিজ থেকে এটা আমি করিনি। যা কিছু করি, স্যারের নির্দেশেই করি।’
জানতে চাইলে গণপূর্ত সচিব সৈয়দ ওয়াসি উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘যুবক আমার পরিচিত। আমি সবার কল রিসিভ করি। সেভাবেই পরিচয় হয়েছে। আমার নাম ভাঙ্গিয়ে সে সিডিএতে গিয়ে কিছু করেনি। সে তো কারও কাছ থেকে চাঁদা চায়নি। যারা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে, তারাই আমার নাম ভাঙ্গানোর চেষ্টা করে।’