Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মনোনয়নপত্র জমা না দিয়েও ভোটে যাচ্ছে ৩ ইসলামি দল!

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৩:৫৯

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল থেকে প্রার্থিতা নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন এক হাজার ৯৬৬ জন। তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৭৪৭ জন— নির্বাচন কমিশন থেকে এমন তথ্যই জানানো হয়েছে গণমাধ্যমকে।

কিন্তু এই ৩০টি রাজনৈতিক দলের তালিকায় থাকা বদরুদ্দোজা সুজা ও কাজী আবুল খায়েরের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (নিবন্ধন নম্বর ২১, প্রতীক হারিকেন), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (নিবন্ধন নম্বর ২৩, প্রতীক খেজুর গাছ) এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (নিবন্ধন নম্বর ৩৩, প্রতীক রিকশা) দাবি করেছে, তারা বা তাদের কোনো প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়পত্র জমা দেয়নি। দল তিনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময়ম সীমা শেষ হওয়ার আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।

আরও পড়ুন- সব আসনে নৌকা: ‘সমমনা ইসলামী দলসমূহে’র ইউটার্ন

নির্বাচন কমিশেনের দেওয়া তথ্যমতে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ (নৌকা) ৩০৩ জন, জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) ৩০৪ জন, তৃণমূল বিএনপি (পাটের আঁশ) ১৫১ জন, বিএনএম (নোঙ্গর) ৪৯ জন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাত ঘড়ি) ১৮ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (আম) ১৪২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) ১১৬ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ, প্রতীক মশাল) ৯১ জন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (একতারা) ৮২ জন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (ছড়ি) ৭৪ জন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (ফুলের মালা) ৪৭ জন, ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার) ৪৫ জন, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার) ৩৯ জন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি) ৩৭ জন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা) ৩৪ জন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) ৩৩ জন, গণফ্রন্ট (মাছ) ২৫ জন, জাতীয় পার্টি (জেপি, বাইসাইকেল) ২০ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশ (কুলা) ১৪ জন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ) ১৩ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল) ১৩ জন, গণতন্ত্রী পার্টি (কবুতর) ১২ জন, গণফোরাম (উদীয়মান সূর্য) ৯ জন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (চাকা) ছয় জন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ, কুড়েঁঘর) ছয়জন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল, পাঞ্জা) পাঁচজন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (হারিকেন) দুজন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ (রিকশা) একজন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মই) একজন এবং জমিয়তে উলিামায়ে ইসলাম (খেঁজুর গাছ) একজন প্রার্থী দিয়েছে।

তবে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (হারিকেন), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ (রিকশা) এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (খেঁজুর গাছ) শীর্ষ নেতারা এই তালিকা দেখে বিস্মিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তারা বলছেন, কোনো দল নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে একজন বা দুজন করে প্রার্থী দেবে কেন? তাদের যেকোনো দলই চাইলে শতাধিক প্রার্থী দিতে পারবে।

আরও পড়ুন- নির্বাচনে যাচ্ছে সমমনা ইসলামী ৬ দল!

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী শুক্রবার রাতে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা তো ঘোষণা দিয়েই নির্বাচন বর্জন করেছি। আমাদের একজন নেতা অন্য জায়গা থেকে প্রার্থী হয়েছেন। তাকে আমরা দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। তিনি নিজেও দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। আমাদের দল থেকে কাউকে প্রার্থী করা হয়নি। তাহলে ইসির তালিকায় আমাদের নাম থাকবে কেন?’

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জালাউদ্দীন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা তো নির্বাচনে যাচ্ছি না। প্রার্থী দেবো কেন? আর সারাদেশে আমাদের অসংখ্য যোগ্য প্রার্থী আছে নির্বাচন করার জন্য। আমরা কেন একজন প্রার্থী দেবো? আমদের নিয়ে বিতর্ক তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশন হয়তো ইচ্ছা করে এই কাজ করেছে। অথবা কোনোভাবে ভুলক্রমে হয়তো হয়ে গেছে। আমরা খবর নিচ্ছি।’

আরও পড়ুন- প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ২ ইসলামী দলের নেতাদের সাক্ষাৎ

বাংলাদেশ মুসলিম লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, “আমরা দলীয়ভাবে বৈঠক করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি। প্রার্থী দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। নির্বাচন কমিশন এই ‘দুষ্টুমী’ কেন করল? কাল আমাদের মিটিং আছে। সেখানে বিষয়টি উত্থাপন করব।”

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেউ অসৎ উদ্দেশে তিনটি ইসলামি দলের নাম ও প্রতীক ব্যবহার করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে থাকতে পারে। তবে দলগুলো থেকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া না হলে চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ের সময় নামগুলো বাদ পড়ে যাবে।

আরও পড়ুন- নির্বাচনে ৩০ দল, প্রতি আসনে প্রার্থী গড়ে ৯ জনের বেশি

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘হতেও পারে কেউ আমাদের দলের নাম ব্যবহার করে দুষ্টুমি করেছে। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’

বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। নির্বাচন কমিশনের অন্য কারও বক্তব্য পাওয়াও সম্ভব হয়নি।

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

খেজুর গাছ জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম জাতীয়-নির্বাচন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস বাংলাদেশ মুসলিম লীগ মনোনয়নপত্র জমা রিকশা সংসদ নির্বাচন হারিকেন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর