পুলিশের ‘এসপি’ পরিচয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া যুবক গ্রেফতার
২ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:১৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ‘আমি এসপি মামুন বলছি, আমার জরুরি বিকাশে টাকা পাঠানো প্রয়োজন। আপনার দোকানের সামনেই পুলিশ বক্সে আমি আছি। ১০ মিনিট পর আমি কনস্টেবল দিয়ে নগদ টাকা পাঠাচ্ছি।’- শুরুটা এভাবেই। নিজেকে এসপি পরিচয় দিয়ে প্রথমে বিশ্বাস স্থাপন করে। সেই সুযোগ নিয়ে মোবাইলভিত্তিক অর্থ লেনদেনের অ্যাপ বিকাশ ও নগদের মাধ্যেমে টাকা হাতিয়ে নেয়।
‘এসপি মামুন’ নামধারী সেই প্রতারককে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর দামপাড়ায় সিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) লিয়াকত আলী খান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) রাতে রাজশাহীর মোহনপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার সকালে তাকে চট্টগ্রাম নিয়ে আসা হয়। গ্রেফতার মো. সাগর রিমন (২৩) নওগাঁর মান্দা থানার বাংড়া এলাকার মো. হাসানের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার লিয়াকত আলী খান বলেন, ‘গ্রেফতার রিমন নিজেকে পুলিশের এসপি, এডিশনাল এসপি পরিচয় দিয়ে বিকাশ ও নগদ একাউন্ট ব্যবহার করে এজেন্টদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত। এরা তিন থেকে চারজন মিলে এ কাজ করত। রিমন মোবাইলে কথা বলত। আর বাকিদের মধ্যে কেউ টাকা ক্যাশ আউট করত আর কেউ সিমের যোগান। এরপর তারা নিজেদের মধ্যে টাকার ভাগ-বাটোয়ারা করে নিত।’
উপ-কমিশনার লিয়াকত আলী খান আরও বলেন, ‘রিমনের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া নেই, কিন্তু তার কথাবার্তা শুনে মনে হবে সে অনার্স-মাস্টার্স পাস। এলাকায় সে মাহিন্দ্রা সিএনজি অটোরিকশা চালায়। সাড়ে তিন বছর ধরে সে এসব কাজ করছে এবং প্রায় ৪৮৩ জন থেকে প্রতারণার মাধ্যেমে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। রিমনের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় তিনটি প্রতারণা ও দুইটি মাদকের মামলা আছে।’
কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) আসিফ মহিউদ্দীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত ২৭ নভেম্বর সদরঘাট থানায় মিনহাজ উদ্দিন নামে একজন প্রতারণার শিকার হয়ে অজ্ঞাত প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তার কাছ থেকে পুলিশের এসপি পরিচয় দিয়ে বিকাশের মাধ্যমে ৫১ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র।’
প্রতারণার শিকার মিনহাজ উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার কাছে পুলিশের দুইজন কনস্টেবল এসে প্রথমে ব্যক্তিগত নম্বর নেয়। এর কিছুক্ষণ পর একটি নম্বর থেকে কল আসে। রিসিভ করতেই বলে, আমি এসপি মামুন বলছি, আমার জরুরি বিকাশে টাকা পাঠানো প্রয়োজন। আপনার দোকানের সামনেই পুলিশ বক্সে আমি আছি। ১০ মিনিট পর আমি কনস্টেবল পাঠিয়ে টাকা পাঠাচ্ছি। এরপর আমি বিশ্বাস করে চার দফায় প্রায় ৫২ হাজার টাকার মতো পাঠাই। পরে ওই নম্বরে কল দিলে সেটা বন্ধ পাওয়া যায়। পুলিশ বক্সে গিয়ে এ কথা জানালে তারা বলে আমি প্রতারণার শিকার হয়েছি।’
সারাবাংলা/আইসি/এমও