বড় দেশগুলো তাদের জিনিস কিনতে পীড়াপীড়ি করে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:২৫
ঢাকা: বড় দেশগুলো সবসময় তাদের জিনিস কেনার জন্য পীড়াপীড়ি করে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের দায়িত্বেরই একটি অংশ এটি।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন।
নির্বাচনের আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তার দেশের উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং-এর উড়োজাহাজ বিক্রির জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত নির্বাচনের আগে নয়, অনেক দিন ধরেই বোয়িং বিক্রির প্রস্তাব দিচ্ছেন। আমরা কিছু উড়োজাহাজ কিনতে চাচ্ছি, কারণ আমাদের যাত্রী অনেক বেশি। আমাদের টাকারও সমস্যা। তারা প্রস্তাব দিয়েছে, যেহেতু আমাদের অধিকাংশ বহর হচ্ছে বোয়িং। আমাদের বোর্ডিং ব্রিজগুলো বোয়িংয়ের। তারা বলেছে যে, অন্য ফ্লিট কিনলে বোয়িং বোর্ডিং ব্রিজটি ঠিকমতো লাগবে না।
তিনি বলেন, হতে পারে। আমি টেকনিক্যাল ম্যান না। তবে আমাদের এখানে বিভিন্ন দেশের ফ্লিট আসে। কাতার, ইউএই আসে। তাদের আবার বোয়িংও আছে এয়ারবাসও আছে। কিন্তু আমাদের বোর্ডিং ব্রিজ কাজ করছে। তো আমরা কিছুটা ডাইভার্সিফাই করতে চাই। সে জন্য আমরা যখন ইউরোপে গিয়েছিলাম তখন একটা সমঝোতা স্মারক করেছিলাম। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর সামনে আমরা এটা করেছি। আমরা ১০টা এয়ারবাস কিনব, এর মধ্যে দুটি কার্গো।
বাংলাদেশকে এয়ারবাস কেনার জন্য সংস্থাটির মালিক দেশগুলো অনুরোধ করছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শুধু ব্রিটিশ সরকার নয়, ফ্রান্স এবং ইতালিও বলেছে, আপনারা যেটা অঙ্গিকার করেছেন সেটা কিনেন। আমরা কিনব। কোনো অসুবিধা নেই। এয়ারবাসের মালিক দেশগুলোকে আমরা বলেছি আমরা ১০টা উড়োজাহাজ কিনব। তখন আবার বোয়িং আমাদের বলেছে, আরও সস্তায় দেবে। এটা আমাদের জন্য ভালো খবর।
এমন কেনাবেচার সঙ্গে আমেরিকার চাপের কোনো সম্পর্ক আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, এগুলা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। ইলেকশনের সময় হয়ত মনে করে আপনি একটু দুর্বল। যেমন দেখা যায়, বিভিন্ন দেশে ইলেকশনের সময় বেতন বাড়ানো, এটা-সেটা দাবি করে। কিন্তু ওদেরটা ইলেকশনের সময় করে লাভ নেই। কারণ তাদের ভোট তো আমাদের দরকার নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে কোনো টানাপড়েন চলছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সম্পর্কের কোনো টানাপড়েন নেই। এগুলা মিডিয়ায় আপনারা করেন। আপনারা ওদের ত্যক্ত করেন।
তার দল আওয়ামী লীগ আবারও সরকার গঠন করলে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, আগে এমপি হতে হয়। এমপি হওয়া ছেলের হাতের মোয়া নয়। আমাদের দেশের লোক খুব পরিপক্ব। ভোটের সময় তারা ঠিক কাকে ভোট দেবে নিজেরা সিদ্ধান্ত নেয়। আমার আসনে সাতজন ক্যান্ডিডেট (প্রার্থী); সো ইটস নট এ ইজি জব (এটা সহজ কাজ নয়)। যত সহজ মনে করেন ততো সহজ নয়।
তিনি আরও বলেন, আমার এখানে একজন অত্যন্ত নিবেদিত কর্মী, যিনি ৪৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ করেছেন। আওয়ামী লীগের সম্মানিত ও পাওয়ারফুল পজিশনে ছিলেন। তিনি এখানে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন। অবশ্যই তার এখানে ভোটার থাকবে। কারণ এত বছর ধরে তাদের সঙ্গে ওঠাবসা করেছেন। সো ইটস নট সিম্পল জব। আমরা কোনোভাবে এটাকে সহজভাবে নেই না। প্রথম ইলেকশন জিততে হবে। বাকিটুকু প্রধানমন্ত্রীর হাতে।
সারাবাংলা/আইই/এনইউ