Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিল্প-সাহিত্যে আরও বেশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরার আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:৪৮

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক বই লেখা হয়েছে, বানানো হয়েছে অসংখ্য চলচ্চিত্র। তবে তা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন আরও বেশি বেশি বই, চলচ্চিত্র, ও অন্যান্য শিল্প মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধকে তুলে ধরা। এর জন্য তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান।

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস স্মরণে রাজধানীর ঢাকা গ্যালারি মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশের আয়োজনে ‘মিট দ্য সোসাইটি’ অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মা, শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শহীদজায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জহির (অব.) সহ অনেকে। সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব, অধ্যাপক ড.মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধার, ভালোবাসার। একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অভিন্ন যাত্রাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। আমাদের নীতি প্রতিবেশীরা আগে, তার মধ্যে বাংলাদেশ সবার আগে। ৫২ বছরে রাজনৈতিক মানচিত্র বদল হয়েছে, কিন্তু, সংস্কৃতি এক রয়েছে। আমরা ১৯৭১ এ বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ইতিহাসের সঠিক দিকে অবস্থান নিয়েছিলাম। আগামীতেও এটি অব্যাহত থাকবে। পরস্পরের প্রতি হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা, একাত্তরের আত্মিক বন্ধন আজীবন অমর থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫২ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্য বিশ্বনন্দিত। আমরা বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার। কোভিড মহামারি, ক্লাইমেট চেঞ্জসহ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা একসঙ্গে কাজ করি। এবং করে যাবো। আমাদের অতীত একাত্তরকে ভুলে গেলে চলবে না। শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা অব্যহত রাখতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, ‘পাকিস্তান পরাজয় নিশ্চিত জেনে, বুদ্ধিজীবী হত্যার নীল নকশা করল। আল বদর, আল শামস বাহিনী গঠন করেছিল। নভেম্বরের দিকে এই হত্যাকাণ্ডের শুরু করেছিল। বুদ্ধিজীবী হত্যার এখনও বিচার হলো না। আশরাফুজ্জামান, মঈনুদ্দিন এখনও বহাল তবিয়তে বিদেশে পলাতক। অন্য খুনিরা ভিন্ন নামে আছে। বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন ব্যানারে তারা নিরাপদে বহাল তবিয়তে আছে। এদের দখলে যাতে দেশটা চলে না যায় সেটা মাথায় রাখতে হবে।’

লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জহির (অব.), বীর প্রতীক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত শহিদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়ন না হওয়াটা একটা বড় কষ্টের। মুক্তিযোদ্ধারা ভাতা পায়, কিন্তু শহিদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবারের কোন ভাতা এখনও রাষ্ট্র চালু করতে পারেনি। একটা পাকিস্তানি সৈনিকের ধর্ষনের বিচার হয়নি। আশি শতাংশ শিক্ষক, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। বুদ্ধিজীবী হত্যার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান একটা রেকর্ড করেছে। পাকিস্তান যুদ্ধের ময়দানে নয়, ইতিহাসের পাতায় পরাজিত হয়েছিল। ভারতের সৈনিকরা আমাদের পরম বন্ধু। এই মানুষগুলোকে আমাদের স্মরণে রাখতে হবে।’

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘ডিসেম্বরের এক তারিখ আসলেই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ফিরে আসে। পাকিস্তানিরা অমানুষিক নির্যাতন করেছিল আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের উপর। হার্টের ডাক্তারের হার্ট তুলে নিয়েছিল, চোখের ডাক্তারের চোখ তুলে নিয়েছিল, লেখকের হাত কেটে দিয়েছিল। স্বাধীনতাযুদ্ধের একদম সূচনালগ্ন থেকেই তারা এদেশের সূর্য সন্তানদের হত্যা শুরু করেছিলো যা জানুয়ারি ২০ তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। মুক্তিযুদ্ধ ত্যাগের, দুঃখের, বীরত্বের কাহিনী। বাংলাদেশে লাখ লাখ এ ধরনের গল্প আছে। রাজাকার, আলবদর এদেশে মন্ত্রী হয়। এটা কোনভাবে মেনে নেয়া যায় না। ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে সুন্দর হতেই হবে। এদেশের ইতিহাসের সব বইপত্র কে সাইবার প্লাটফর্মে ছড়িয়ে দিতে হবে। বিশ্বের মানুষের কাছে, পৌঁছাতে হবে।’

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.) বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক শুধু একটা কথার কথা নয়। যুদ্ধের ময়দানে দুই দেশের বীর সেনাদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে এটার গতি প্রকৃতি নির্ধারিত হয়েছিল। যতদিন থাকবে, এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে হবে।’

পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাঙালি তলিয়ে যেতে যেতে আবার জেগে ওঠে। এটিই আমাদের ইতিহাস। সম্প্রীতির বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার ঠাই নাই। ২৫ মার্চের পর আমরা একটি দুর্বিষহ দিন পার করেছি। তখন ধর্ম নির্বিশেষে সবাই সবাইকে সাহায্য করেছে। আমাদের করিমগঞ্জ দিয়ে বর্ডার পার করতে সাহায্য করেছিল একজন ইমাম। সেই ইমামকে আমি কোনোদিন ভুলব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ শুধু একটি ইতিহাস নয়, একটি মহাকাব্য। এই স্মৃতি কথাগুলো শিল্পিতভাবে তুলে ধরা হয়নি। আরও দরকার। এ কাজটি নতুন প্রজন্মের দ্বায়িত্ব নিতে হবে। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করতে হবে। ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়গুলোতে যে সহযোগিতা করেছে, এতটা কোনও দেশে বা জাতির কাছে পাওয়া যায়নি।’

সারাবাংলা/আরএফ/ইআ

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস সম্প্রীতি বাংলাদেশ

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর