ফুলে ঢাকা শহীদ মিনার, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়
১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:৫০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর এদেশীয় রাজাকার-আলবদরদের বিরুদ্ধে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী জনযুদ্ধের পর বাংলার আকাশে লাল-সবুজ পতাকা উড়ানোর দিনটিকে উৎসবমুখরতায় উদযাপন করেছে আপামর চট্টগ্রামবাসী। দেশকে শত্রুমুক্ত করে সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে স্বাধীনতা এনে দেয়ার জন্য প্রাণ দেয়া সকল বীর শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধা স্মরণ করেছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোকচিত্র প্রদর্শন, কুচকাওয়াজ, আলোচনা সভা, শোভাযাত্রাসহ নানা আয়োজনে চলছে মহান বিজয় দিবস উদযাপন। এসব আয়োজন থেকে উচ্চারিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতির বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শেখ রাসেল চত্বরে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের বার্তা দেয়া হয়। সকাল ৮টায় নগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুল প্রাঙ্গনে অস্থায়ী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নগর পুলিশের একটি চৌকস দলের ‘গার্ড অব অনারের’ মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
এরপর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে মেয়র কাউন্সিলরদের নিয়ে নগরীর টাইগারপাসে চসিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
মেয়রের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর ইউনিট কমান্ডের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো হয়। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন আসা শুরু করে। পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বেলা ১২টা পর্যন্ত শহীদ মিনারে চলে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব। এর মধ্যে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। এরপর নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক ও নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতির জনকের আহ্বানে এদেশের লাখো মানুষ জীবন দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে। কিন্তু পঁচাত্তরে জাতির জনককে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশকে পেছনে নেয়ার, স্বাধীনতাকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল, যা এখনও চলছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতি সেই ষড়যন্ত্রকে বারবার পরাস্ত করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার সংগ্রাম এখন চলছে। সেই সংগ্রামে আপামর জনতার শরিক হয়ে দেশবিরোধীদের পরাস্ত করাই হোক এবারের বিজয় দিবসের অঙ্গীকার।’
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, চট্টগ্রাম জেলা কমিটির পক্ষ থেকে নেতাকর্মীরা লাল পতাকা মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। এসময় জেলা সভাপতি অশোক সাহা, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, সহ সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য মৃণাল চৌধুরী ছিলেন। এছাড়া ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, বাসদ, ন্যাপসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
জেলা সিপিবির সহ সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল প্রকৃত অর্থে একটি জনযুদ্ধ। এদেশের সর্বস্তরের কৃষক, শ্রমিক, জনতা সংগঠিত হয়ে নয় মাসের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। কিন্তু গত অর্ধশতাব্দীতে শাসকগোষ্ঠীর ব্যর্থতার জন্য আমরা স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত সুফল পাইনি। এদেশ এখনও শোষক আর শোষিত- এ দুভাগে বিভক্ত হয়ে আছে। একভাগ ক্ষমতাকে লুটপাটের হাতিয়ার বানিয়ে জনগণের সম্পদ কেড়ে নিচ্ছে। ক্ষমতার জন্য সাম্প্রদায়িকতাকে এখনও রাজনীতির হাতিয়ার করা হচ্ছে। আমরা এমন বাংলাদেশ চাইনি। আমরা মুক্তিযুদ্ধের যে চার মূলনীতি ছিল, তার পুরোপুরি বাস্তবায়ন চাই।’
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দারুল ফজল মার্কেটে সংগঠনের কার্যালয়ে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা সভাপতি ইমরান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক টিকলু কুমার দে’র সঞ্চালনায় এতে শ্রমিক নেতা নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া বক্তব্য রাখেন।
উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের শিল্পীরা মুক্তিযুদ্ধের রণসঙ্গীত গেয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান। এসময় জেলার সভাপতি চন্দন দাশ, সহ সভাপতি বিধান বিশ্বাস, সুমন সেন ও তপন শীল, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জয় সেন, ভাস্কর রায়, ইমন সেন, ইমা বড়ুয়া এবং সাংস্কৃতিক সংগঠক শিমুল সেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উদীচীর উদ্যোগে সকাল থেকে নগরীর চেরাগি চত্বরে চলছে ‘মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র’ প্রদর্শনী। বিকেলে সেখানে বিজয়মঞ্চে আলোচনা সভার পাশাপাশি পরিবেশন করা হবে গণসঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক গান।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি সকাল ১১টায় নগরীর এনায়েত বাজার মোড়ে সমাবেশ করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। নগর বিএনপির আহবায়ক শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করও এসময় ছিলেন। সমাবেশ শেষে বিজয় শোভাযাত্রা নিয়ে নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে গিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
বোধন, প্রমা, খেলাঘর, তারুণ্যের উচ্ছ্বাস, উচ্চারক, চারণ, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহণে বেলা গড়াতেই ফুলে ফুলে ভরে ওঠে শহীদ মিনার। শ্রদ্ধা জানানোর পুরো সময় মিছিল-শ্লোগানে মুখর ছিল শহীদ মিনার এলাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নগরীর প্যারেড মাঠে শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠান হয়েছে। মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী শিক্ষার্থীদের সালাম গ্রহণ করেন। এসময় মেয়র বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশ স্বাধীন করতে শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর আদেশ-নির্দেশকে নিয়ে গিয়েছিল দেশের আনাচে-কানাচে। মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী অনিশ্চিত সময়ে ছাত্র সংগঠক হিসেবে দেখেছি ছাত্রদের সাংস্কৃতিক ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের আড়ালে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গড়ে তোলার ব্যাপক তৎপরতা।’
‘ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর যে অন্ধকার সময় এসেছিল তা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পেরিয়ে এসেছি আমরা। আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য লড়ছি তা বাস্তবায়নে ছাত্রদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে, ছাত্রদের বহন করতে হবে বিজয় মশাল।’
ছাত্রদের মাঝে সোনার বাংলা গড়ার শক্তি খুঁজে পান মন্তব্য করে মেয়র বলেন, ‘ভাষার প্রশ্নে পাকিস্তানিদের সাথে লড়াইয়ে নেমেই শিক্ষার্থীরা বুঝে গেল আমাদের স্বাধীনতা চাই। সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আমরা গোপনে পোস্টারিং করতাম, স্বাধীনতার পক্ষের বিভিন্ন বিভিন্ন বই বিতরণ করতাম। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার উপলব্ধি ছাত্রদের মধ্যে আদর্শের জন্য লড়াইর যে সৎসাহস থাকে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি ছাত্রদের নিয়েই আশা দেখি। ছাত্রদের মাঝে খুঁজে পাই সোনার বাংলা গড়ার শক্তি ও অনুপ্রেরণা।’
অনুষ্ঠানে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, কাউন্সিলর মো. জাবেদ, নেছার উদ্দিন আহমেদ, হাসান মুরাদ বিপ্লব, নাজমুল হক ডিউক, আবুল হাসনাত মো. বেলাল, আবদুস সালাম মাসুম, নূর মোস্তফা টিনু, রুমকি সেনগুপ্ত, সচিব খালেদ মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও কুচকাওয়াজের আয়োজন করে। এতে নগরীর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। সিএমপি কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক এসময় সালাম গ্রহণ করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শারীরিক কসরত প্রদর্শন করেন। জেলা প্রশাসন এবার শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র দেখানোর ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে।
তবে এবার চট্টগ্রামে বিজয় র্যালির আয়োজন করেনি মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা পরিষদ। ৩৪ বছর পর এবার চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলার আয়োজনও হয়নি। শনিবার সকালে সংক্ষিপ্ত পরিসরে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনে গোলচত্বরে বিজয়শিখা প্রজ্বলন করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী প্রজ্বলিত বিজয়শিখা তরুণ প্রজন্মের হাতে তুলে দেন। এর আগে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিজয়মেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
সকালে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম নগরীতে জাতীয় পতাকা মিছিল বের করে। নগরীর চেরাগি পাহাড় মোড়ে সকালে একটি ইজিবাইক নজর কাড়ে উপস্থিত সকলের। চার যুবকের একজন চালকের আসনে, নাম শাহপরাণ। বঙ্গবন্ধু সেজে মুজিব কোট পরিহিত জাকির নামে এক যুবক তর্জনি উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন ইজিবাইকে। পেছনে ডামি রাইফেল হাতে কাদামাখা দুই যুবক, নাম মুমিন ও আলমগীর।
শাহপরাণ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা দেওয়ান বাজার থেকে এসেছি। প্রতিবছর বিজয় র্যালিতে এভাবেই সেজে আমরা অংশ নিতাম। এবার বিজয় র্যালি হচ্ছে না। তারপরও সেই সাজেই আমরা বিজয়শিখা প্রজ্বলন কর্মসূচিতে যাচ্ছি।’
বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রামের সকল সরকারি, বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এছাড়া বর্ণিল আলোকসজ্জাও করা হয়েছে বিভিন্ন সরকারি ভবনে।
সারাবাংলার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এস এম মাহফুজ আহমেদ জানিয়েছেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ১০ টায় চবির স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। এসময় উপ উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে ছিলেন। এছাড়া উপাচার্যের সাথে বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সকল আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকরা। ফুল দেন প্রক্টরিয়াল বডিও।
সকাল ১১ টায় স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্য থেকে বঙ্গবন্ধু চত্বর পর্যন্ত বিজয় র্যালি হয়েছে। এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে চবি’র মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত প্রগতিশীল সাধারণ শিক্ষক সমাজ। সকালে স্বাধীনতা স্মারক চত্বর ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাধারণ শিক্ষক সমাজের আহবায়ক ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল হোসাইন, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সোহেল, সহযোগী অধ্যাপক রামেন্দু পারিয়াল, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সভাপতি সুমন বড়ুয়া, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সিন্ডিকেট সদস্য নঈম উদ্দিন হাছান আওরঙ্গজেব চৌধুরী, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহ আলম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এস এ এম জিয়াউল ইসলাম, ইতিহাস বিভাগের গোলাম কুদ্দুস লাবলু, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শাহরিয়ার বুলবুল তন্ময়, দর্শন বিভাগের নাসরিন আক্তার, ফার্মেসি বিভাগের রমিজ আহমেদ সুলতান, সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অনাবিল ইহসান, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের প্রভাষক শারমিন জামাল, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ইব্রাহিম খলিল আল হায়দার, অর্থনীতি বিভাগের মেজবাহ উদ্দিন আহমদ।
বেসরকারি প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে নানা আয়োজনে বিজয় দিবস উদযাপন হচ্ছে। সকালে নগরীর জিইসি ক্যাম্পাসে শহীদ মিনারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিয়ে ফুল দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেন। ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এবং বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সচিব বোরহানুল হাসান চৌধুরী, উপ-উপাচার্য কাজী শামীম সুলতানা, ট্রেজারার তৌফিক সাঈদ, রেজিস্ট্রার খুরশিদুর রহমান, কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন মোহীত উল আলম, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের মিহির কুমার রায়, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শেখ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, ব্যবসা-শিক্ষা অনুষদের সহকারি ডিন এম মঈনুল হক, গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইফতেখার মনির, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান টুটন চন্দ্র মল্লিক, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগর চেয়ারম্যান সাহীদ মো. আসিফ ইকবাল, ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান সাদাত জামান খান, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান তানজিনা আলম চৌধুরী, অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ফারজানা ইয়াসমিন চৌধুরী, প্রক্টর আহমদ রাজীব চৌধুরী, পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান মো. জাহেদুল ইসলাম, ফ্যাশন ডিজাইন এন্ড টেকনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার দাশ ও ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান কাউছার আলম।
সমবেতদের উদ্দেশে আলোচনায় উপাচার্য ড. অনুপম সেন বলেন, ‘১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। এসময় পূর্ব বাংলার জনগণ ছিল পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু, প্রায় ৫৬ শতাংশ। পাকিস্তান সৃষ্টিতে তাদের মুখ্য ভূমিকা থাকলেও পাকিস্তান সৃষ্টির পর তারা স্বাধীনতা পায় নি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তারপর মুক্তিযুদ্ধে অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে বাঙালিরা স্বাধীনতা ও বিজয় অর্জন করে। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে হবে, জানাতে হবে।’
নানা আয়োজনে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) মহান বিজয় দিবস উদযাপন হয়েছে। দিবসের প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপাচার্য এএসএম লুৎফুল আহসান। এ সময় শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর শনিবার সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/এনইউ