‘সব হারিয়ে উপলব্ধি করছি জলবায়ু পরিবর্তন পরিবেশের জন্য ঝুঁকি’
১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:৪৮
রাঙ্গামাটি: অনেক ক্ষতি হয়ে যাওয়ার পর জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সবাই সচেতন হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘সবকিছু হারানোর পর আমরা উপলব্ধি করছি, জলবায়ু পরিবর্তন পরিবেশের জন্য ঝুঁকি। আগের দিনে আমাদের প্রবীণরাও মনে করতেন, টিউবওয়েলের পানি ক্ষতিকর, আর্সেনিক থাকে। এখন বাংলাদেশই কেবল নয়, সারাবিশ্ব জলবায়ু-পরিবেশ নিয়ে ভাবছে। সবাই ভাবছে কীভাবে জলবায়ুর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থা থেকে আমরা উঠে আসব এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবেশের সঙ্গে কীভাবে অভিযোজন করে বেঁচে থাকব।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উন্নয়নকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে অনুষ্ঠিত জেলা পর্যায়ের এক অবহিতকরণ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
লোকাল গভর্নমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ (লজিক) প্রকল্প নিয়ে এই অবহিতকরণ কর্মশালা রোববার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের এনেক্স কনফারেন্স হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী এতে প্রধান অতিথি ছিলেন।
কর্মশালায় অংসুই প্রু চৌধুরী আরও বলেন, ‘শান্তিচুক্তি পরবর্তী সময়ে অনেক প্রকল্পই বাস্তবায়িত হয়েছে। এর কিছু প্রকল্প দৃশ্যমান হলেও কিছু কিছু প্রকল্প দৃশ্যমান হয়নি। আমরা প্রত্যাশিত দৃশ্যমান উন্নয়ন করতে পারছি না। এর দুর্বলতা কোথায়, আমাদের খুঁজে দেখতে হবে। প্রত্যেক প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। প্রকল্পের সঠিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করলে আমরা পরিবেশ, যোগাযোগ ও শিক্ষার উন্নয়নে পরিবর্তন আনতে পারব।’
লজিক প্রকল্পের আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদ সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়ার সভাপতিত্বে কর্মশালা পরিচালনা করেন পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুদ্দীন মো. শিবলী নোমান। এতে ভিডিও প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন প্রকল্প সমন্বয়ক এ কে এম আজাদ রহমান।
এ সময় প্রকল্পের কার্যক্রম প্রসঙ্গে জানতে চান এবং বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, হেডম্যান থোয়াই অং মারমা, শিক্ষাবিদ নিরূপা দেওয়ান, নারীনেত্রী ও উন্নয়নকর্মী টুকু তালুকদার, উন্নয়নকর্মী উপাল কান্তি মুৎসুদ্দী ও বিপ্লব চাকমা, সদর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম প্রমুখ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, লজিক প্রকল্পটি জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত স্থানীয় সরকার উদ্যোগ এবং সরকার, ইউএনডিপি, ইউএনসিডিএফ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, সুইডেন ও ডেনমার্কের সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে দেশের ৯ জেলায় প্রকল্পটির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে পার্বত্য দুই জেলা রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান। ২০১৭ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হচ্ছে ২০২৪ সালের জুনে। অর্থাৎ আর মাত্র ছয় মাসের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে।
কর্মশালায় জানানো হয়, দেশের ৯ জেলায় সাড়ে ৪২ হাজার পরিবারকে উপকারভোগী হিসেবে প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। এর অন্তর্ভুক্ত হবেন রাঙ্গামাটির সাড়ে তিন হাজার ও বান্দরবানে চার হাজার পরিবার। প্রত্যেক পরিবারকে ৩০ হাজার টাকা হারে অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা। মূলত প্রকল্পটি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট উত্তরণে কাজ করবে।
সারাবাংলা/এনএস/টিআর