Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খুলনায় চ্যালেঞ্জের মুখে নৌকার ৪ প্রার্থী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:২০

খুলনা: আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।  নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও খুলনার ছয়টি আসনে ভোটের হাওয়া জমে উঠেছে। গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। ছয়টি আসন থেকে এবার ৩৬ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। খুলনা-২ ও ৩ আসনে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ না থাকায় নিশ্চিত নৌকার প্রার্থীরা। তবে খুলনা- ১, ৪, ৫ ও ৬ আসনে নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠে থাকায় চ্যালেঞ্জের মুখে নৌকার প্রার্থীরা।

খুলনা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ননী গোপাল মণ্ডলের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের সচিব প্রশান্ত কুমার রায়। খুলনা-৪ আসনে নৌকার আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বিপক্ষে রয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোর্ত্তজা রশিদী দারা। তিনি খুলনা-৪ আসনের সংসদের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার ছোট ভাই। দারা সুন্দরবন কলেজের সাবেক ভিপি, বিভাগীয় ক্রীড়াসহ তিনি বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন।

অপরদিকে খুলনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্রের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আকরাম হোসেন। তিনি চেম্বার জজ আদালতে প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন। ব্যাংক ঋণ খেলাফি সংক্রান্ত জটিলতায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উচ্চ আদালতে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। গত বৃহস্পতিবার চেম্বার জজের রায়ে বৈধতা পান শেখ আকরাম হোসেন। প্রার্থীতা ফিরে পাওয়াই ডুমুরিয়া ফুলতলা উপজেলায় তার সমর্থকদের মধ্যে উদ্দীপনা বিরাজ করছে। এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ নির্বাচন হবে বলে এলাকাবাসী ধারণা করছেন। এছাড়া খুলনা-৬ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামানের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ জি এম মাহবুবুল আলম।

খুলনার ৬টি আসনের বিপরীতে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন ৫৯ জন। এর মধ্যে থেকে ৫৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাইয়ের পর রিটার্নিং কর্মকর্তা ২৯ জনকে বৈধ ও ২৪ জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেছিলেন। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল, হাইকোর্টে রিট ও সুপ্রিমকোর্টে রিট পিটিশন করে আরও ১২ জন প্রার্থিতা ফিরে পান। এই ৪১ জনের মধ্যে থেকে ৫ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর প্রতীক পেয়েছেন ৩৬ জন।

খুলনা-১ (বটিয়াঘাটা-দাকোপ) আসন থেকে এবার লড়ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী ননী গোপাল মণ্ডল, জাতীয় পার্টির (লাঙল) প্রার্থী কাজী হাসানুর রশিদ, তৃণমূল বিএনপির (সোনালী আঁশ) প্রার্থী চন্দ্র প্রামাণিক ও (ঈগল) স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রশান্ত কুমার রায়।

খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসন থেকে লড়ছেন আওয়ামী লীগের (নৌকা) প্রার্থী শেখ সালাহউদ্দিন, জাতীয় পার্টির (লাঙল) মো. গাউসুল আজম, বাংলাদেশ কংগ্রেসের (ডাব) দেবদাস সরকার, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটে (ছড়ি) বাবু কুমার রায়, বিএনএমের (নোঙর) প্রার্থী মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন ও (ঈগল) স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাঈদুর রহমান।

খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী) আসনে লড়ছেন আওয়ামী লীগের (নৌকা) প্রার্থী এস এম কামাল হোসেন, জাতীয় পার্টির (লাঙল) মো. আব্দল্লাহ আল মামুন, জাকের পার্টির (গোলাপ ফুল) এসএম সাব্বির হোসেন ও (ঈগল) স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাতেমা জামান সাথী।

খুলনার-৪ (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া) আসনে লড়ছেন আওয়ামী লীগের (নৌকা) প্রার্থী আব্দুস সালাম মুর্শেদী, জাতীয় পার্টির (লাঙল) মো. ফরহাদ আহমেদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (আম) প্রার্থী মো. মোস্তাফিজুর রহমান, তৃণমূল বিএনপির (সোনালি আঁশ) শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের (ডাব) মনিরা সুলতানা, ইসলামী ঐক্যজোটের (মিনার) রিয়াজ উদ্দীন খান, বিএনএম প্রার্থী (নোঙর) এস এম আজমল হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী (কেটলি) মোর্ত্তজা রশিদী দারা, (ট্রাক) মো. জুয়েল রানা, (সোফা) এমডি এহসানুল হক ও (ঈগল) মো. রেজভী আলম।

খুলনার-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে লড়ছেন আওয়ামী লীগের (নৌকা) সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান এমপি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, জাতীয় পার্টির (লাঙল) মো. শাহীদ আলম ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির (হাতুড়ি) শেখ সেলিম আকতার। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে (ঈগল) লড়ছেন শেখ আকরাম হোসেন।

খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে লড়ছেন আওয়ামী লীগের (নৌকা) প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামান, জাতীয় পার্টির (লাঙল) মো. শফিকুল ইসলাম মধু, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (আম) মো. আবু সুফিয়ান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের (ডাব) প্রার্থী মির্জা গোলাম আজম, বিএনএম প্রার্থী (নোঙর) এস এম নেওয়াজ মোরশেদ, তৃণমূল বিএনপির (সোনালী আঁশ) মো. নাদির উদ্দিন খান। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) জি এম মাহবুবুল আলম।

খুলনা জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা খন্দকার ইয়াসির আরেফিন বলেন, ‘কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনি আইন অমান্য করার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতীক পেয়ে সকল প্রার্থী নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত। রিটানিং কর্মকর্তা হিসাবে আমি সকল প্রার্থীর প্রচারসহ ভোটে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করেছি।’

নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, খুলনা-১ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৯০ হাজার ২৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৬৭ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৯৮ জন। খুলনা-২ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২০ হাজার ২১৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৯ হাজার ২৭০ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৬০ হাজার ৯৪৯ জন। খুলনা-৩ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৪৫ হাজার ৭০৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৪ হাজার ৪৫৭ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ২৫২ জন। খুলনা-৪ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫৫ হাজার ১৫৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৯২ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮১ জন। খুলনা-৫ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৮৩ হাজার ২১৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯০ হাজার ৪৪৯ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯২ হাজার ৭৭০ জন। খুলনা-৬ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৫ হাজার ৩১৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪০ হাজার ৪৯ জন ও নারী ভোটার ২ লাখ ১২ হাজার ৬৭ জন।

সারাবাংলা/আরআইটি/এনএস

খুলনা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বাংলাদেশ-ভারত টেস্টে হামলার হুমকি!
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৫

সম্পর্কিত খবর