‘পত্রিকার তথ্যকে নিজেদের গবেষণা বানিয়ে দিয়েছে সিপিডি’
২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:৫০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঋণ কেলেঙ্কারি নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ-সিপিডির প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের জবাব দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, কোনো ধরনের গবেষণা না করে পত্রিকার কাটিং দেখে রিপোর্ট বানিয়ে সেটি সংবাদ সম্মেলন করে প্রচার করেছে সিপিডি।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বিটিভি-চট্টগ্রাম কেন্দ্রে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
গত ২৩ ডিসেম্বর সিপিডি এক সংবাদ সম্মেলনে নিজস্ব গবেষণার তথ্যউপাত্ত তুলে ধরে জানায়, ২০০৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি ১৯টি ব্যাংকে ২৪টি বড় ঋণ কেলেঙ্কারির মাধ্যমে ৯২ হাজার কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে।
এর জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিপিডি কোনো গবেষণা করেনি। গবেষণা করতে অনেক সময় লাগে, অনেক তথ্য-উপাত্ত লাগে। কিন্তু সিপিডি কিছু পত্রিকার কাটিং সংগ্রহ করে সেখান থেকে একটা একটা রিপোর্ট তৈরি করেছে। সেই রিপোর্টকে গবেষণার তথ্য বলে সংবাদ সম্মেলন করেছে। এ রিপোর্ট তৈরি করে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে অনেক লুকোচুরি করেছে এবং অনেক ভুল ও অসত্য তথ্য তারা পরিবেশন করেছে।’
‘যেমন সিপিডি বলেছে, আমাদের উন্নয়ন বাজেটের ৭৫ শতাংশ হচ্ছে বিদেশ-নির্ভর। আসলে আমাদের চলতি বাজেটের ৩৫ শতাংশ হচ্ছে সাহায্য-নির্ভর কিংবা বিদেশ-নির্ভর। এক সময় এটি ২০ শতাংশের নিচে নেমে গিয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য বৈদেশিক লোন নেওয়ার কারণে এটি ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অথচ সিপিডি বলেছে এটি ৭৫ শতাংশ।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিপিডি বলেছে বেসিক ব্যাংক থেকে চার হাজার কোটি টাকা লোন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চার হাজার কোটি টাকার মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা ইতিমধ্যে আদায় করা হয়েছে এবং বাকি দুই হাজার কোটি টাকার জন্য মামলা করা হয়েছে, মামলা চলমান। সেগুলো আদায়ের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। সিপিডি বলেছে নাবিল গ্রুপ ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা লোন নিয়েছে। কিন্তু সেই লোন যে সবগুলো আদায় হয়েছে, সে তথ্য সিপিডির রিপোর্টে জানানো হয়নি।’
‘ইচ্ছাকৃতভাবে এগুলোকে লুকানো হয়েছে। চট্টগ্রামভিত্তিক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে, আমি বাংলাদেশ ব্যাংকে চেক করেছি। সেই প্রতিষ্ঠানের কোনো লোনই ক্লাসিফাইড নয়। একই সাথে সিপিডি বলেছে, ভ্যাট লোন বেড়েছে। অর্থাৎ ক্লাসিফাইড লোনের আকার বেড়েছে। কিন্তু তারা আকারের কথা বলেছে, পারসেন্টেজের কথা বলেনি।’
অর্থনীতি ছয় গুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০০৯ সালে আমাদের জিডিপির সাইজ ছিল ৮০ বিলিয়ন ডলার। এখন জিডিপির সাইজ হচ্ছে ক্লোজ টু হাফ এ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৫০০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। এভাবে ছয় গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাহলে সে অনুযায়ী ব্যাংক লোনও বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যাংক লোনের আকারও বৃদ্ধি পাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পারসেন্টেজ কতো, সেটাই হচ্ছে মূল বিষয়।’
‘২০০৯ সালে ক্লাসিফাইড লোনের পারসেন্টেজ ছিল ১০ দশমিক ৫ শতাংশ, আর এখন ক্লাসিফাইড লোনের পারসেন্টেজ হচ্ছে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ তখনকার তুলনায় কমেছে। ২০০৭-২০০৮ সালে সিপিডির কেউ কেউ তো দেশ পরিচালনার সাথে যুক্ত ছিলেন । তারা যখন দেশ পরিচালনার সাথে যুক্ত ছিলেন তখন ভ্যাট লোন ১০ শতাংশের উপরে ছিল। এভাবে মিথ্যা-অসত্য তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা আসলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
সারাবাংলা/আরডি/এনইউ