ভূমিদস্যুরা রূপগঞ্জে পুতুল এমপি বানাতে চায়: গোলাম দস্তগীর গাজী
২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:৪১
নারায়ণগঞ্জ: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) বলেছেন, ‘আমি চাই রূপগঞ্জের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে। আমি তাই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেগুলো পূরণ করে কথা রেখেছি। কিন্তু এতে সমস্যা হয়েছে ভূমিদস্যুদের। তারা রূপগঞ্জের মানুষদের ঠকিয়ে জমি দখল করতে পারছে না। আর তাই রূপগঞ্জের জমি দখলের জন্য তারা এবার আমার বিপক্ষে নেমেছে।’
তিনি বলেন, ‘ভূমিদস্যুরা জমি দখলের জন্য রূপগঞ্জে পুতুল এমপি বানাতে চায়। সেজন্য তারা একাধিক প্রার্থী নামিয়ে রূপগঞ্জে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রূপগঞ্জের টানা তিন বারের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক)।
তিনি বলেন, ‘রূপগঞ্জের মানুষের অধিকার রক্ষার পাশাপাশি তাদের জীবনমান উন্নয়ন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। রূপগঞ্জের সাধারণ মানুষের ভূমি রক্ষার জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করেছি, ভবিষ্যতেও করবো। ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখছি। যতদিন আমি আছি ততদিন রূপগঞ্জের মানুষকে কেউ ঠকাতে পারবে না। কিন্তু আমি উন্নয়ন কাজেও প্রতিনিয়ত বাধা পাচ্ছি ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে।’
‘ভূমিদস্যুরা এতই ক্ষমতাবান যে তারা প্রশাসনকে পর্যন্ত হার মানিয়ে দেয়। ভূমিদস্যুদের নজর এবার রূপগঞ্জের জমির দিকে। তারা এবার আমাকে পরাজিত করার জন্য অর্থ বিনিয়োগ করছে। তাদের অর্থায়নে রূপগঞ্জে নৌকা মার্কার বিপক্ষে নির্বাচন করছেন অনেকেই’, বলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘নির্বাচনে নৌকা মার্কার বিপক্ষে যারা নির্বাচন করছে তারা মূলত ভূমিদস্যুদের সহায়তা পাচ্ছেন। ভূমিদস্যুদের পৃষ্ঠপোষকতায় ও তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ বিনিয়োগ করে তারা নির্বাচনে নেমেছে। ভূমিদস্যুরাও ওই প্রার্থীদের পেছনে কোটি কোটি টাকা খরচ করছেন। তারা একজন পুতুল এমপি বানিয়ে রূপগঞ্জকে দখল করতে চায়। আমি রূপগঞ্জের ভূমি রক্ষার জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করেছি এবং ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখছি। কিন্তু এই রূপগঞ্জের ভূমি দখলের জন্য ভূমিদস্যুরা নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভূমিদস্যুরা ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে প্রতি মাসে হাজার-হাজার, লাখ-লাখ টাকা করে দেয়। এর বিনিময়ে তারা অন্যের জমি দখল করে, জমির মালিককে আঘাত করে। জমি না পেলে তারা সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দেয়। এভাবে হাজারও মানুষকে নাজেহাল করে তারা সব জায়গা দখল করছে।’
ভূমিদস্যুরা রূপগঞ্জে ‘একচ্ছত্র আধিপত্যের’ উদ্দেশ্যে নৌকা মার্কার বিপরীতে একাধিক প্রার্থীকে দাঁড় করিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন গোলাম দস্তগীর গাজী। তিনি বলেন, ‘আমি তো ব্যবসায়ী, আমার নিজের ব্যবসা আছে। সুতরাং আমার তো অর্থ খরচ করতে কোনো সমস্যা নেই। তারা (প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী) কীভাবে অর্থ খরচ করছে? তাদের ভূমিদস্যুরা অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করছে। কারণ, ভূমিদস্যুরা রূপগঞ্জকে দখল করতে একজন পুতুল এমপি বানাতে চান। কিন্তু রূপগঞ্জের জনগণ তা হতে দেবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভূমিদস্যুরাও জানে আমার জনপ্রিয়তার বিষয়ে। আর তাই তারা একাধিক প্রার্থীর পেছনে বিনিয়োগ করেছে তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থে। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তারা অপপ্রচার করছে। কিন্তু ভোটাররা জানে এই এলাকার তাদের জানমালের নিরাপত্তার জন্য আমার কোনো বিকল্প নেই। তারা জানে শুধুমাত্র নৌকা মার্কায় ভোট দিলে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হয়। আর তাই নৌকা মার্কাতেই তারা ভোট দেবে বলে আমি আশাবাদী।’
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নানা রকমের অভিযোগ বিষয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যেকোনো ছোটখাটো বিষয়েও কেবল নালিশ করেই যাচ্ছে। তারা আমাদের ওই কাজেই ব্যস্ত রাখতে চাচ্ছেন। প্রশাসন মনে করছে, নালিশের ব্যাপারে অ্যাকশনে না গেলে কমিশনকে তাদের জবাবদিহি করতে হবে। এই কারণে তারা অ্যাকশনে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের তো নালিশ করার সময় নেই। কারণ আমাদের ভোট দেবে জনগণ। তাই আমরা জনগণকে নিয়েই ব্যস্ত, তাদের নিয়েই আছি।’
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে এবার মোট ৯জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আহসান মাহমুদ জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রূপগঞ্জের মোট ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৬১৬ জন ভোটার আছেন। সাতটি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌরসভার ১২৮টি কেন্দ্রের ৮১৭টি কক্ষে এবারের ভোট গ্রহণ হবে। শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ এবং ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিতে তারা কাজ করছেন।
সারাবাংলা/এসবি/এমও