বগুড়া-৪ আসনে জমে উঠেছে নির্বাচন, চ্যালেঞ্জের মুখে নৌকা
৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৫৪
বগুড়া: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও নির্বাচনি প্রচার তত বেড়ে চলেছে। ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পৌষের কনকনে শীত উপেক্ষা করে শেষ মুহূর্তে পুরো নির্বাচনি এলাকায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে প্রার্থীরা কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে গণসংযোগ ও নির্বাচনি সভা সমাবেশসহ প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
নির্বাচনের সপ্তাহ খানিক বাকি থাকতেই প্রার্থীদের প্রচার তুঙে উঠেছে। নির্বাচনে অন্য প্রার্থীদের জয় লাভের খুব একটা সম্ভাবনা না থাকলেও নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঈগল প্রতীকের মধ্যে শক্ত লড়াইয়ের সম্ভবনা রয়েছে। সব মিলিয়ে বগুড়া-৪ আসনে নৌকাকে চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে হবে।
এই আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৮ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৭৩ হাজার ১৭০ জন। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের হিজড়া ভোটার রয়েছে ৬ জন।
নির্বাচনে ২ জন দলীয় প্রতীকে ও ৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য, ১৪ দলীয় জোটের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বগুড়া জেলা জাসদের সভাপতি এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন।
২০১৪ সালে তিনি এই আসন থেকে বিএনপিবিহীন নির্বাচনে ও ২০২৩ সালে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মো. মোশারফ হোসেনের ছেড়ে দেওয়া আসনে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে সামান্য ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার দলের প্রতীক মশাল হলেও তিনি আওয়ামী লীগের নৌকার উপর ভর করে এ নির্বাচনে লড়ছেন।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টানা দুই বারের সাবেক পৌর মেয়র মো. হেলাল উদ্দিন কবিরাজকে প্রথমে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দিলেও আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদ ইনুর সঙ্গে দফায় দফায় দরকষাকষি ও দেন-দরবার শেষে এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেয়। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হলে বিভক্তি ছড়িয়ে পড়ে।
আওয়ামী লীগের একটি অংশকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. জিয়াউল হক মোল্লাকে এই আসনে বিজয়ী করতে ঈগল প্রতীকের প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে। ফলে এই আসনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন ১৪ দলীয় জোটের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন। দীর্ঘদিন ধরে জাসদের রাজনীতি করলেও তিনি এই আসনে দলের সাংগঠনিক অবস্থার পরিবর্তন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাছাড়া স্থানীয় আওয়ামীলীগের সাথে তার রাজনৈতিক আদর্শিক সম্পর্কের টানা পড়নে তাকে অনেক দূরে ঠেলে দিয়েছে।
এছাড়া বিএনপির ৪ বারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ডা. জিয়াউল হক মোল্লা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এই আসনে ঈগল প্রতীক নিয়ে মাঠে অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। বিগত দিনে এমপি থাকা সময়ের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে তার হয়ে নির্বাচনি মাঠে কাজ করছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ সমর্থিত ভোটারের একটি অংশ ভোটের মাঠে ডা. জিয়াউল হক মোল্লার ঈগল প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারে নামায় তিনি নৌকার প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে।
এদিকে বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টি হতে মনোনয়ন নিয়ে (ডাব) প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন মো. আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। ইউটিউবার হিসেবে আলোচিত-সমালোচিত হিরো আলম ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এই আসন থেকে নির্বাচন করেন। ২০২২ সালের উপ নির্বাচনে হিরো আলম আবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
তবে এবার স্বতন্ত্র নয়, বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টি হতে তিনি (ডাব) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এছাড়া আগে থেকেই মনোনীত জাতীয় পার্টির মো. শাহিন মোস্তফা কামাল ফারুক (লাঙ্গল) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনি মাঠে রয়েছেন।
আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মোশফিকুর রহমান কাজল (ট্রাক) প্রতীক নিয়ে ভোটের পাল্লা ভারি করতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
সারাবাংলা/এমও
আসন সমঝোতা জিয়াউল হক মোল্লা নির্বাচন নৌকা বগুড়া-৪ আসন রেজাউল করিম তানসেন হিরো আলম