অবৈধ অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষের প্রার্থীকে ভয় দেখাতো তারা
৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:২৮
ঢাকা: রাজধানীর গাবতলী বাসস্ট্যান্ড ও যাত্রাবাড়ী থানার কাজীরগাঁও এলাকায় পৃথক অভিযানে দুটি বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ তিন অস্ত্র বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আলমগীর হোসেন (৩৮), সৈয়দ মিলন (৪০) ও শেখ জিয়াউর রহমান জিয়া (৪২)। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
ডিবি জানায়, দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অবৈধভাবে অস্ত্র আনা হতো। তারা এই সব অস্ত্র ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতো। শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রতিটি টিম নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি-তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনাল টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা অবস্থান করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে দুই স্থানে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ দুজনকে গ্রেফতার করে।’
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুজন গোয়েন্দা পুলিশকে জানায়, তারা লালমনিরহাটের সীমান্ত এলাকা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে শেখ জিয়াউর রহমান জিয়ার মাধ্যমে অস্ত্র সরবরাহ করত। এই জিয়া মিডিয়াম্যান হিসেবে কাজ করছে।
অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, ‘অস্ত্র ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য ছিল লালমনিরহাটের সীমান্ত থেকে অস্ত্র এনে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে দেওয়া। আর এই সব অস্ত্র ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে সন্ত্রাসীরা কাজ করতো। নির্বাচনে প্রতিপক্ষের প্রার্থীকে ভয় দেখানো ও সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হতো। এমনকি তারা প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য হুমকি দিত। আমরা জিয়াকে গ্রেফতার করেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে, আর কতগুলো অস্ত্র এভাবে কার কার কাছে বিক্রি করা হয়েছে।’
গ্রেফতার অস্ত্রকারবারিদের রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, ‘গ্রেফতার আসামিদের এক সময়ের ছাত্রলীগ করা মিলন নামের একজন রয়েছে। তবে তার নামে নয়টি মামলা রয়েছে। একাধিকবার জেলও খেটেছেন তিনি। সুতরাং আমাদের চোখে তিনি একজন সন্ত্রাসী। ছাত্রলীগ করলেও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তারা কোন কোন প্রার্থীকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে সেটি আমরা তদন্তের মাধ্যমে আমার বের করব।’
নির্বাচনে তাদের মাধ্যমে কতগুলো অস্ত্র এসেছে জানতে চাইলে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘আলমগীর ও মিলন নামের দুই সন্ত্রাসী লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে অস্ত্র আনতেন। এর পর জিয়ার কাছে বুঝিয়ে দিতেন। এই জিয়া বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অস্ত্র বিক্রি করত। তবে কতগুলো অস্ত্র বিক্রি হয়েছে সেটি আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করব।’
থার্টিফাস্ট নাইট উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি ও নাশকতার হুমকি আছে কি না? জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, ‘ডিএমপির পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কী কী করা যাবে, কী কী করা যাবে না। পাশাপাশি আমরা খোঁজ রাখছি। কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য কাজ করছে। একদিকে বছর শেষে নতুন বছর আসছে। অন্যদিকে, নির্বাচন সামনে; সব মিলিয়ে আমরাদের পর্যাপ্ত ফোর্স মাঠে কাজ করছে।’
সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম