Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নৌকাকে হারাতে কাঁচি প্রতীককে সমর্থন ঈগল প্রার্থীর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:১৬

রাজশাহী: রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীকে হারাতে কাঁচি প্রতীককে সমর্থন দিয়েছেন ঈগল প্রতীকের প্রার্থী। রাজশাহী-১ আসন থেকে এই দুই প্রার্থী স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচন করছিলেন। তবে একজন সরে দাঁড়ালেন।

এই আসন থেকে চারজন প্রার্থী স্বতন্ত্র হয়ে প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করছিলেন। কাঁচি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছিলেন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মুণ্ডুমালার সাবেক পৌর মেয়র গোলাম রাব্বানী। ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আখতারুজ্জামান আক্তার।

অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সর্বোচ্চ আদালত থেকে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছিলেন রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামান। কয়েক দিন আগেই প্রচারের জন্য তাকে ঈগল প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছিলেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

গতকাল শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেন। এ সময় নৌকাকে হারাতে প্রতিদ্বন্দ্বী অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রাব্বানীক প্রকাশ্যেই সমর্থন জানান তিনি।

আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলাম। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়, নির্বাচন কমিশন এবং হাইকোর্টে আমার মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্টে আমার মনোনয়ন ফেরত পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি কার্যক্রম শুরু করি। আমার নির্বাচনি প্রতীক ঈগল। তবে নির্বাচনি কার্যকলাপে গিয়ে আমার উপলব্ধি হয়েছে যে, আমার উদ্দেশ্য এবং গোলাম রাব্বানী (যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন) আমাদের একটিই উদ্দেশ্য। আর সেটি হলো- গোদাগাড়ী-তানোরকে ‘রাহুমুক্ত’ করতে হবে। সেই জায়গায় আমার উপলব্ধি হয়েছে, আমরা দুইজন যদি প্রতিযোগিতা করতে যাই তাহলে রাহুমুক্ত হওয়া সম্ভব নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গোলাম রাব্বানীর সাথে দীর্ঘদিনের একসঙ্গে পথচলা। তিনি আমার বয়সে বড় এবং গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি মনোয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। সেক্ষেত্রে আমার উপলব্ধি হয়েছে, আমি তাকে ছেড়ে দিলে তিনি এমপি হতে পারবেন। যেহেতু উনি আমার বড় ভাই, দীর্ঘদিন ধরে তিনি এটা প্রত্যাশা করে আছেন। তাই আমার উপলব্ধি হয়েছে তাকে সম্মান জানিয়ে আমার এই জায়গা থেকে সরে আসা দরকার। সেই পরিপ্রেক্ষিতে গোদাগাড়ী-তানোরবাসীর চাহিদা মোতাবেক আমি আজকে নির্বাচন থেকে সরে আসলাম। আমার সর্বোচ্চ, মেধা, শ্রম ও আমার নেতাকর্মীসহ গোলাম রাব্বানীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে তাকে জয়যুক্ত করার জন্য চেষ্টা করব। বিশ্বাস করি, গোদাগাড়ী-তানোরবাসী আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আগামী ৭ জানুয়ারি গোলাম রাব্বানীর কাঁচি প্রতীকে ভোট দিয়ে তাকে জয়যুক্ত করবে।’

আখতারুজ্জামান বলেন, ‘প্রতীক বরাদ্দের পর আর কোনো প্রার্থী আইনগতভাবে প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। তাই আমার নির্বাচন থেকে সরে এসে কাঁচি প্রতীকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে (গণমাধ্যম) সবার সামনে তুলে ধরলাম।’

এসময় উপস্থিত থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আখতারের থেকে সুযোগ চেয়েছি, তিনি আমাকে সমর্থন ও সম্মান দিয়েছেন। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব ৭ তারিখে আমাদের জয় হবে ইনশাআল্লাহ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আয়েশা আখতার জাহান ডালিয়া যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী তাকেও আমাকে সমর্থন দিয়ে আমার পক্ষে কাজ করার জন্য অনুরোধ করেছি, আশা করছি তিনিও নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়িয়ে আমাকে সমর্থন দিয়ে একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিবেন এবং আমাদের জয় হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ বলেন, ‘১৭ ডিসেম্বরের পর অফিসিয়ালি আর কোনো প্রার্থীর নির্বাচন থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। কোনো প্রার্থী কারও সমর্থনে প্রার্থীতা থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিলে সেটি তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে নির্বাচনি ব্যালটে তার নাম ও প্রতীক থাকবে।’

এর আগে, গত ২১ ডিসেম্বর সুপ্রিমকোর্ট থেকে নির্বাচনে প্রার্থীতা ফেরত পান আওয়ামী লীগ নেতা মো. আখতারুজ্জামান। পরদিন ২২ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা রিটার্নিং অফিসার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তাকে ঈগল প্রতীক বরাদ্দ দেন। আর ওই দিন থেকেই আখতারুজ্জামান প্রচার শুরু করেছিলেন।

মো. আখতারুজ্জামান রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক। রাজশাহীর গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি পরপর তিন মেয়াদে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সবশেষ গত বছর জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে লড়েছিলেন। মাত্র ৩২ ভোটে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবালের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, তানোর-গোদাগাড়ী আসনের সংসদ নির্বাচনে বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিসহ ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামান সড়ে যাওয়ায় এ আসনে এখন প্রার্থী সংখ্যা টিকে থাকল ১০ জন।

সারাবাংলা/এমই/এনএস

টপ নিউজ রাজশাহী-১ আসন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর