‘আপনাদের ভোটে এমপি-মন্ত্রী হয়েছি, বেইমানি করতে পারব না’
২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৫৪
ঢাকা: রূপগঞ্জের ভোটারদের ভোটেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, সরকারের মন্ত্রীও হয়েছেন। তাই রূপগঞ্জবাসীর সঙ্গে বেইমানি করতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে আমি মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, নিজ দেশবাসীর সঙ্গে বেইমানি করবে না। আপনারা আমাকে ভোট দিয়েছেন। এমপি বানিয়েছেন। আপনাদের ভোট পেয়ে এমপি হয়েছিলাম বলেই মন্ত্রিত্বও পেয়েছি। আপনাদের সঙ্গে আমি বেইমানি করিনি, কোনোদিন করব না ইনশাল্লাহ।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) রূপগঞ্জের কাঞ্চন বাজারে কাঞ্চন ভারত চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নানা অপপ্রচার চললেও সেগুলোতে কান না দিতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান গোলাম দস্তগীর গাজী। বলেন, একটি পক্ষ তাদের হয়ে থাকতে বলেছিল। তারা বলেছিল আমার পক্ষে কেউ থাকবে না। আমি একা হয়ে যাব। তাহলে কী করতে হবে? ওদের সঙ্গে থাকতে হবে। আমি বলেছি, আমি বেইমানি করতে পারব না জনগণের সঙ্গে।
ওয়ান-ইলেভেনের সময়কার ঘটনার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী বলেন, এক-এগারোর সময় সামরিক বাহিনী যখন ক্ষমতা নিয়েছিল, আমাকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে ২৭ দিন আটকে রেখেছিল। লাঠিপেটা করেছিল। বৈদ্যুতিক শক দিয়েছিল। নানাভাবে অত্যাচার করেছে। আমাকে বলতে বলেছিল, ৫ কোটি টাকা নিয়ে শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। কিন্তু আমি বলেছি, আমাকে টাকার বিনিময়ে নমিনেশন দেয়নি, আমাকে নমিনেশন দিয়েছে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। আমাকে যতই মারেন, আমি বেইমানি করতে পারব না। আমি আমি মীর জাফর হতে পারব না। আমি তার বিরুদ্ধে মামলা দেইনি। তাই আমি আপনাদের মাঝে ফিরে এসেছি।
গোলাম দস্তগীর গাজী আরও বলেন, আমি তাদের সঙ্গে যাইনি বলে তারা প্রার্থী দিয়েছে। তাকে তারা পুতুল এমপি বানাতে চায়। আপনারা সাবধান থাকবেন। যদি তাদের পক্ষে গিয়ে ভুল করেন, তাহলে মরেছেন। আপনাদের বাড়িঘর কিছুই থাকবে না। এখানে যারা আছেন তারা অন্যান্য ভোটারদের বলবেন— আমাদের ঘরবাড়ি বাঁচাতে হলে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর মার্কা নৌকা। বঙ্গবন্ধু কোনোদিন বাঙালির সঙ্গে বেইমানি করেননি। তার কন্যা শেখ হাসিনা কোনোদিন বেইমানি করেননি।
সবসময় রূপগঞ্জবাসীর পাশে আছেন জানিয়ে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, আমি সপ্তাহে তিন দিন রূপগঞ্জে থেকেছি। সকালে আপনাদের সঙ্গে দেখা করেছি, তারপর সচিবালয়ে গিয়েছি, তারপর আবার অফিস শেষ করে রূপগঞ্জে ফিরেছি। এখন রূপগঞ্জে আসতে ৪০ মিনিট সময় লাগে। এখানে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে আপনাদের সঙ্গে বিভিন্ন কাজে গিয়েছি। অনেকে ভেবেছিলেন, আমি মন্ত্রী হয়েছি, আমার সঙ্গে মনে হয় আর দেখা হবে না। কিন্তু আমি বলেছি, আমি মন্ত্রী হয়েছি, আরও বেশি আপনাদের সঙ্গে দেখা করব। কারণ আপনারা ভোট দিয়ে এমপি বানিয়েছেন বলেই আমি মন্ত্রী হতে পেরেছি। আপনারা ভোট দিয়েছেন বলেই আমি এখানে দাঁড়াতে পেরেছি। আমি যা ওয়াদা করেছি তা পালন করেছি। সড়ক সংস্কার ও নির্মাণ করেছি। নতুন সেতু নির্মাণ করেছি। সে কারণেই এখন রাজধানীর সঙ্গে রূপগঞ্জের দূরত্ব কমে এসেছে।
৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে এই আসনের জন্য বেছে নিয়েছেন। কারণ তিনি জানেন, এই গাজীকে দিয়ে কোনোদিন বেইমানি হবে না। গাজী রূপগঞ্জবাসীর সঙ্গে বেইমানি করবে না বলেই তিনি আমাকে নৌকা দিয়েছেন। আগামী ৭ তারিখে বঙ্গবন্ধুর মার্কা, শেখ হাসিনার মার্কা, বাংলাদেশের মার্কা, স্বাধীনতার মার্কা, জনগণের মার্কা নৌকা— সেই নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা ভুল করবেন না। তারা অস্ত্র দেবে, টাকা-পয়সা দেবে। তাদের অনেক টাকা। কিন্তু তারা আপনাদের জমিতে হঠাৎ করে সাইনবোর্ড ওঠায়। তাই না? কারা সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়? তারা আমাকে ভূমিদস্যু বলে। একটা মানুষকে টাকা দিয়ে আমার বিরুদ্ধে তারা এসব মিথ্যাচার করাচ্ছে, যেন আপনারা বিভ্রান্ত হোন। কিন্তু আপনারা এসব মিথ্যাচারে বিশ্বাস করবেন না। আপনারা কখনো দেখেছেন যে আপনাদের এক ইঞ্চি জমিতে আমি বালু ফেলেছি? এই মিথ্যাবাদীদের কথা বিশ্বাস করবেন না। এদের থেকে সতর্ক থাকবেন। আপনারা বঙ্গবন্ধুর মার্কাকে ভোট দেবেন।
এর আগে দুপুরে মুড়াপাড়া সরকারি কলেজ মাঠ এলাকায় গণসংযোগ করেন গোলাম দস্তগীর গাজী। সেখান থেকে একটি মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সেখানেও তিনি গত ১৫ বছরে রূপগঞ্জের নানা উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর
গোলাম দস্তগীর গাজী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) জাতীয়-নির্বাচন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নারায়ণগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ-১ নৌকার প্রার্থী