রূপগঞ্জে আমরা রোহিঙ্গা হতে চাই না: রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান
৩ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:১৬
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে: দেশের শীর্ষ একটি শিল্পগোষ্ঠীর দিকে অভিযোগের তীর ছুড়ে ‘রূপগঞ্জে আমরা রোহিঙ্গা হতে চাই না’ বলে মন্তব্য করেছেন রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া সরকারি কলেজ মাঠে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর (বীর প্রতীক) নির্বাচনি জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
দুপুর ৩টায় শুরু হওয়া এই সমাবেশে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মিছিল আসতে থাকে। এ সময় ‘গাজী গাজী, নৌকা নৌকা’ স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে পুরো মাঠ। ৪টার পর পরই মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। কলেজ মাঠ পূর্ণ হয়ে গেলে আশেপাশের বিভিন্ন রাস্তাতেও অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। ৫ টায় সভা শেষেও চলতে থাকে নেতাকর্মীদের স্লোগান।
রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. তোফায়েল হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্য দেন নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক), তারাব পৌরসভার মেয়র হাছিনা গাজীসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা।
এ সময় রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রূপগঞ্জ থেকে আমরা ভূমিদস্যুদের উৎখাত করব। আপনারা জানেন গোলাম দস্তগীর গাজীর নির্বাচনি প্রতিপক্ষ কেটলি মার্কার শাহজাহান ভূইয়া। আসলে কিন্তু সে নয়, আমরা লড়ছি এক ভূমিদস্যুর সঙ্গে। পেছন থেকে যত অবৈধ অর্থ আছে শাহজাহানকে দিয়ে সহযোগিতা করছে তারা। তারা বিভিন্ন সন্ত্রাসী ও লুটেরাদের অর্থ দিচ্ছে। কারণ, সে (ওই গ্রুপ বা ব্যক্তি) জানে, গোলাম দস্তগীর গাজী যদি এমপি-মন্ত্রী হয় তাহলে রূপগঞ্জে আর তাদের কোনো অবস্থান থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘রূপগঞ্জে অবস্থান পাকাপোক্ত করার জন্য শাহজাহানের মতো পুতুল এমপি বানানোর পাঁয়তারা করছে তারা। আমরা রূপগঞ্জের মানুষ, এই রূপগঞ্জ ছেড়ে যাব না, কোনোদিন আমরা রোহিঙ্গা হতে চাই না। আমরা দেশ ছেড়ে, এই মাটি ছেড়ে কোথাও যাব না ইনশাল্লাহ।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা রূপগঞ্জকে গিলে খেতে চায়, তারা অনেক টাকা পয়সা খরচ করেছেন। তাদের অনেক অবৈধ টাকা পয়সা। তাই তারা গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা খরচ করে করছে। আগামী ৭ তারিখ আমরা রূপগঞ্জের মানুষ দেখিয়ে দিতে চাই, নৌকাকে আমরা বিগত তিনবার বিজয়ী করেছি, এবার তার চেয়েও বেশি ভোটে ফের বিজয়ী করব।’
রফিকুল বলেন, ‘ভূমিদস্যুদের আমরা রূপগঞ্জ থেকে বিতাড়িত করব ইনশাল্লাহ। ভোটের মাধ্যমে, ব্যালটের মাধ্যমে গোলাম দস্তগীর গাজীকে আমরা বিজয়ী করে ফের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনব।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) বলেন, ‘আপনারা ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন। আমার মার্কা, বাংলাদেশের মার্কা নৌকা। আমার একজন গুরু আছেন। আমার গুরু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি নৌকার গুরু। কেটলি মার্কার গুরু কে? কেটলির গুরু হচ্ছে ভূমিদস্যু। তাই গুরু দেখে ভোট দেবেন।’
শীর্ষ একটি শিল্পগ্রুপের দিকে ইঙ্গিত করে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ‘সাইনবোর্ড কারা লাগায় আপনারা জানেন। হঠাৎ করে দেখবেন আপনার বাড়ির সামনে সাইনবোর্ড, বাড়ির সামনে যে জমি আছে তা বালুতে ভরে গেছে। দশটা পোলাপান লাগাবে, আপনাকে পিটুনি দেবে, মারধর করে আপনার জমি ছাড়া করবে। আজ তারা নানারকম মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে, যাতে আপনারা আমার প্রতি বিরক্ত হন। কিন্তু আপনারা বিশ্বাস করেছেন, তো মরেছেন। তারা মিথ্যাবাদী। তারা এটা করেই খায়। জমির পর জমি, গ্রামের পর গ্রাম, মাঠের পর মাঠ দখল করে খায়। তারা দখলবাজ। আপনারা উপযুক্ত জবাব দেবেন। ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে জবাব। আর কোনো ভূমিদস্যুতা যেন রূপগঞ্জে না থাকে।’
এদিন সমাবেশে নারী-পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ, কৃষক শ্রমিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে সমাবেশের মাঠ জনসমুদ্রে রূপ নেয়। সমাবেশে নারীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। কোলের শিশুকে নিয়েও এসেছিলেন নারীরা।
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম
গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) চেয়ারম্যান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ভূমিদস্যু রংধনু গ্রুপ হাছিনা গাজী