গোলাম দস্তগীর গাজীর মতো এমপি রূপগঞ্জবাসীর আশীর্বাদ
৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:২৯
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে: কিডনির চিকিৎসা করাতে গিয়ে জায়গা-জমি বিক্রি করতে হচ্ছিল। এমন অবস্থায় একজন আত্মীয় বলেন গোলাম দস্তগীর গাজীর (বীর প্রতীক) সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু চাইলেই কি একজন এমপি ও মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা যায়? তাও গেলাম। গিয়ে যা দেখলাম তা জীবনেও ভুলব না। চাইলেই রূপগঞ্জের মানুষ তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন খুব সহজে। সবার সঙ্গেই তিনি কথা বলেন। আর তারপর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় বিনা পয়সায় কিডনির ডায়ালাইসিস করাচ্ছি। গোলাম দস্তগীর গাজীর মতো এমপি থাকা রূপগঞ্জবাসীর জন্য আশীর্বাদ। অন্যদের মতো তিনি সরকার কী করবে বা সরকার কিছু করে দেবে- সেই আশায় না থেকে এলাকার মানুষের জন্য নিজেই করে ফেলেন।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভুলতা ইউনিয়নের মাছুমাবাদ গ্রামের তিন নং ওয়ার্ডের আশরাফ হোসেন মোল্লা সারাবাংলার প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এভাবেই নিজের চিকিৎসা বিষয়ে কথা বলছিলেন।
আশরাফ হোসেন মোল্লা বলেন, ‘কয়েক বছর আগে আমার কিডনি রোগ বিষয়ে জানতে পারি। তখন থেকে ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হয়। প্রথম দিকে শ্যামলী কিডনি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা নিতে শুরু করি। পরে ইউএস বাংলা হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করাই। কিন্তু আর্থিকভাবে কুলিয়ে উঠতে পারছিলাম না। পরে একজন জানালেন গাজী সাহেবের কাছে গেলেই নামমাত্র মূল্যে ডায়ালাইসিস সেবা পাওয়া যাবে। ওনার সঙ্গে দেখা করে একটা সই আনলেই ডায়ালাইসিস সেবা পাওয়া যাবে নামমাত্র মূল্যে।’
তিনি বলেন, ‘তখন ভাবছিলাম একজন এমপি ও মন্ত্রীর সঙ্গে কি চাইলেই দেখা করা সম্ভব? তাছাড়া এলাকার এমপি-মন্ত্রীরা তো নির্বাচনে জিতে গেলে আর এলাকায় থাকে না। কিন্তু একজন জানালেন গাজী সাহেব প্রায় প্রতিদিনই এলাকায় থাকেন। উনি সবার সঙ্গে দেখা করেন। সবার সমস্যা সমাধান করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘অবাক হয়ে গেলাম ওনার বাসায় গিয়ে। যিনি যান তিনিই দেখা করতে পারেন। আমিও তাই খুব সহজেই ওনার সঙ্গে দেখা করতে পারলাম। একটা দরখাস্ত করে সেটাতে ওনার সই নিয়ে চলে যাই যমুনা ব্যাংক ফাউন্ডেশন কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারে।’
আশরাফ হোসেন মোল্লা বলেন, ‘যমুনা ব্যাংক ফাউন্ডেশন কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারে ডায়ালাইসিসের জন্য যে খরচটা নেওয়া হয় তা নামমাত্র মূল্য না বলে বিনামূল্যেই বলা যায়। কারণ যে ৫০০ টাকা নিচ্ছে তা দিয়ে আমাদের যে সব সুঁই বা অন্যান্য কিছু দেওয়া হয় সেগুলো সম্পূর্ণ নতুনভাবে ব্যবহার করা হয়। এর পাশাপাশি ডায়ালাইজার, ব্লাড লাইনসহ অনেক কিছুর ব্যবহার হয়। এগুলো সবই নতুন দেওয়া হয়। অর্থাৎ এক রোগীর সুঁই বা ডায়ালাইসিসে ব্যবহার হওয়া কিছু অন্য কাউকে দেওয়া হয় না।’
তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে সপ্তাহে একটা ডায়ালাইসিস নিতে হতো। কিন্তু এখন সপ্তাহে দুইটা ডায়ালাইসিস নিতে হয়। সরকারিভাবে ও অন্যান্য স্থানেও এই ডায়ালাইসিস সেবা নিতে আমাকে প্রতিবার দুই হাজার ৮০০ থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হতো। ফলে দেখা যেত মাসেই আমার প্রায় ২০ হাজার টাকা উপরে খরচ হতো শুধুমাত্র ডায়ালাইসিস করানোর জন্য। ফলে আর্থিকভাবেও আমার পরিবার এখন অনেক উপকার পাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের অনেক এলাকার রোগীরা ঢাকায় গিয়ে দেখা যায় দীর্ঘ সিরিয়ালে ডায়ালাইসিসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু আমাদের রূপগঞ্জের যারা কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত, তারা এই দিকে অনেক ভাগ্যবান। আমাদের বেশি দূরে কোথাও যেতে হচ্ছে না। নিজের এলাকাতেই ডায়ালাইসিস সেবা নিতে পারছি। ফলে যাতায়াত খরচও আমাদের বেঁচে যাচ্ছে।’
আশরাফ হোসেন মোল্লা বলেন, ‘এখানে অন্য অনেক রোগীকে দেখি চিকিৎসা সেবা নিতে আসছে। তারাও আমার মতো। সবারই আসলে উপকার হচ্ছে এমন একটা প্রতিষ্ঠান থাকাতে। আল্লাহ… গাজী সাহেবকে বাঁচাইয়া রাখুক। তারে আল্লাহ আরও দেক। তার সাহায্যে আমি এখন অনেক ভালো আছি।’
তিনি বলেন, ‘গোলাম দস্তগীর গাজী সাহেবের মতো একজন সংসদ সদস্য থাকা রূপগঞ্জের মানুষের ভাগ্যের বিষয়। সত্যিকার অর্থে আমাদের রূপগঞ্জের মানুষের পরম সৌভাগ্য এটা। কোথায় আমি আগে তিন হাজার টাকায় ডায়ালাইসিস করাতাম আর এখন নামমাত্র মূল্যে কোনো সিরিয়াল পাওয়ার ভোগান্তি ছাড়াই। এটা আমাদের জন্য ভাগ্যের বিষয় না?’
তিনি আরও বলেন, ‘এলাকার মানুষের জন্য এতোটা ভাবনা অন্য কোনো এলাকার এমপিরা ভাবে না। এটা একটা বিরল বিষয়। সবাই করতে পারে না। টাকা থাকলেও অনেকে এমনটা পারে না। এর সঙ্গে মন ভালো হতে হয়, উদার হতে হয়। গাজীর মন-মানসিকতা ভালো, তাই উনি এলাকার মানুষের জন্য ভাবেন। এজন্য আমরা সেবা পাচ্ছি। আল্লাহ ওনারে ভালো রাখুক। উনি এমন প্রতিষ্ঠান আরও করবে বলেই আমার বিশ্বাস।’
আশরাফ হোসেন মোল্লা বলেন, ‘আমি গাজীর কাছে গেছি আর সেবা পেয়েছি। অন্যদেরও দেখেছি খালি হাতে কেউ ফিরে না তার কাছ থেকে। একটা বারও তিনি ভাবে নাই সই করার আগে। এটাও ভাবে নাই যে লোককে সাহায্য করছে সে কোন গ্রুপের বা কোন দলের। চোখ বন্ধ করে তিনি সই করে দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি দেশের অন্য এলাকায় আমার যত আত্মীয় আছে তাদের বলি গোলাম দস্তগীর গাজীর কথা। তারা খুব অবাক হয়ে শুনে। আসলে তিনি নিজে একজন ভালো মানুষ। অনেক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান তিনি করেছেন। ইনশাল্লাহ আরও করবেন তিনি, আমরা সেই দোয়া করি। আমাদের মতো গরিব রোগীরা অল্প পয়সায় চিকিৎসা নিতে পারব তখন।’
রূপগঞ্জে অবস্থিত যমুনা ব্যাংক ফাউন্ডেশন ডায়ালাইসিস সেন্টারের দায়িত্বরত ডা. বোরহান আহমেদ রানা সারাবাংলাকে বলেন, ‘একটা উপজেলা পর্যায়ের এলাকায় এমন একটা ডায়ালাইসিস সেন্টার আসলে এলাকার মানুষের জন্য আশীর্বাদ। কারণ এই এলাকায় অনেক রোগী আছে যাদের আসলে আর্থিকভাবে ডায়ালাইসিস করানোর জন্য যে টাকা-পয়সা প্রয়োজন তার সামর্থ নেই। কিন্তু এই এলাকার মানুষের সেগুলো নিয়ে ভাবতে হয় না। গাজী সাহেবের কাছে গেলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এখন আর তাদের টাকা খরচ করে ঢাকা যেতে হয় না। ফলে একদিকে যেমন গাড়ি ভাড়া বেঁচে যাচ্ছে অন্যদিকে সময়ও কিন্তু বাঁচছে। কিন্তু এই ডায়ালাইসিস সেন্টারে যে সেবা দেওয়া হচ্ছে তা দিয়ে আসলে একজন এলাকার মানুষ সবদিকেই উপকৃত হচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘ডায়ালাইসিস সেবা নিতে নিতে অনেকেরই আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। যেহেতু একটা অংক এখানে ব্যয় হয়ে যায়। এমনকি সরকারি প্রতিষ্ঠানেও প্রায় তিন হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে যায়। কিন্তু রূপগঞ্জের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী সাহেবের উদ্যোগে এই এলাকার মানুষ প্রায় বিনামূল্যে ডায়ালাইসিস সেবা নিতে পারছে। রোগীদের তিনি নামমাত্র মূল্যে ডায়ালাইসিস সেবা দিচ্ছেন। এজন্য এলাকার মানুষের সরাসরি উপকার পাচ্ছেন। আর এজন্য তারা এমপি সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
সারাবাংলা/এসবি/এনএস
আশরাফ হোসেন মোল্লা গোলাম দস্তগীর গাজীর বীর প্রতীক যমুনা ব্যাংক ফাউন্ডেশন ডায়ালাইসিস সেন্টার রূপগঞ্জ