Friday 09 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাল্টে যাচ্ছে ফুটবলার ‘বেচা-কেনার’ নিয়ম!


২১ মে ২০১৮ ২২:৪১ | আপডেট: ২১ মে ২০১৮ ২২:৪২

জাহিদ-ই-হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকাঃ ক্রিকেটে ক্যাটাগরি থাকলেও দেশের ফুটবলে কখনও গ্রেডিং পদ্ধতি চালু হয়নি। দলবদলে ফুটবলারদের কখনও গ্রেডিংয়ের আওতায় নেয়া হয়নি। তবে, গ্রেডিংয়ের পথে হাটতে চলেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)!

পেশাদার লিগে দলবদল হবে এই গ্রেডিংয়ের সিস্টেমের মধ্য দিয়েই। পাঁচটি স্তরে থাকবে এই গ্রেডিং পদ্ধতি। খেলোয়াড়দের নেয়া হবে গ্রেডিং পদ্ধতির আওতায়। সেখান থেকে পছন্দের ফুটবলারদের কিনে দল গোছাতে পারবে ক্লাবগুলো।

এমনই একটি চিন্তা করছে দেশের ফুটবল সর্বোচ্চ অভিভাবক। অবশ্য এ বিষয়ে পেশাদার লিগের সর্বোচ্চ ক্লাবগুলোর সম্মতি আছে বলে জানা যায়। সোমবার পেশাদার লিগ কমিটির বৈঠকে এ বিষয়টি প্রস্তাব হিসেবে ওঠে।

যদিও আসন্ন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ফুটবলে এ পদ্ধতি চালু হচ্ছে না। কমিটির চিন্তা- এই মৌসুমের পর পরবর্তী মৌসুমের জন্য এই গ্রেডিং পদ্ধতি চালু করার চিন্তা দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ অভিভাবকের।

এবার যদিও দলবদলের উইন্ডো শুরু হতে দেরি আছে। তার আগেই ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে দল অনেকটাই গুছিয়ে ফেলেছে ক্লাবগুলো। এর মাঝেই ফুটবলারদের চরম মূল্য হাঁকানোর বিষয়টি আলোচিত হয়।

ক্লাব কর্মকর্তাদের অভিযোগ- ফুটবলার সংকটের কারণে আকাশচুম্বি দাম হাঁকাচ্ছেন ফুটবলাররা। বাধ্য হয়ে দলে নিতে হচ্ছে তাদের। এতে দল গঠনে ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাচ্ছে দেশের প্রেক্ষাপটে। আবার ফুটবলারদের মান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে অনেকেই।

সেই চিন্তা থেকে গ্রেডিংয়ের চিন্তা করছে কমিটি। তাতে ‘হ্যা’ জানিয়েছে ক্লাবগুলোও। তবে, পাইপলাইনে ফুটবলার তৈরি না করে এমন গ্রেডিংয়ের কোনও মানে হয় না বলে মনে করেন কেউ কেউ।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী জানান, ‘দলবদলে খেলোয়াড়রা চরম মূল্য নিচ্ছে। তাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্লাবগুলো। সেদিক চিন্তা করেই ভারসাম্য আনতে গ্রেডিং করার চিন্তা।’

এছাড়াও কমিটিতে আরও অনেক প্রস্তাবনার অনুমোদন হয়। ঘরোয়া ফুটবলে গতবারের তুলনায় ভেন্যু বাড়ছে এটা পুরনো খবর। ‘রাজধানী ভিত্তিক প্রিমিয়ার লিগ আর নয়’ এ ধারণা থেকে বের হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। সঙ্গে আলোচনা চলছিলো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এগারতম আসর হতে যাচ্ছে ‘ভিন্ন’ মৌসুমেও। সেদিকে আপাতত পা দিচ্ছে না দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ অভিভাবক।

তবে, গতবারের বিপিএল থেকে ভিন্ন হচ্ছে এবারের আসর। বিদেশি খেলোয়াড় কোটায় এবার সংখ্যাটা বাড়ছে। গতবার কোনও কোনও দল তিনজন বিদেশি ফুটবলার নিবন্ধন করাতে পেরেছিল। এবার সে জায়গায় সংখ্যা বাড়ছে। চারজন বিদেশি ফুটবলার নিবন্ধন করাতে পারবে পেশাদার লিগের সর্বোচ্চ ক্লাবগুলো।

স্থানীয় খেলোয়াড়দের সুযোগ বাড়াতে গতবার দুইজন বিদেশি খেলোয়াড় মূল একাদশে নামানোর চিন্তা থেকেও সরে এসেছে বাফুফে। আসন্ন প্রিমিয়ার লিগে এবার মূল একাদশে থাকবে তিনজন। সঙ্গে বিপিএলে আরেকটি সংযোজনও করছে পেশাদার লিগ কমিটি। এশিয়ান কোটায় একজন বিদেশিকে দলে রাখার সুযোগ করে দিচ্ছে বাফুফে। এএফসির টুর্নামেন্টের জন্য সুবিধা পেতে পারে ক্লাবগুলো এমন চিন্তা থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টসূত্র জানিয়েছে।

এবার ভেন্যু বাড়ছে বিপিএলে। আগের মৌসুমে শুধু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রিমিয়ার লিগের সবকটি ম্যাচ আয়োজিত হয়েছিল। তাতে দর্শকের বিমূখতা লক্ষ্য করেছে বাফুফে। সঙ্গে বৃষ্টির মৌসুমে হওয়ায় এবং সারাবছর একই ভেন্যুতে শতাধিক ম্যাচ হওয়ার মাঠের বেহাল অবস্থা সংবাদের শিরোনাম হয়েছে অনেকবারই। সে পথে হাটতে চায় না ফুটবল ফেডারেশন। তাছাড়া এএফসির কড়া নির্দেশও আছে ভেন্যু বাড়ানোর ব্যাপারে।

বিজ্ঞাপন

এবার তাই ভেন্যু বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কমপক্ষে ৫টি ভেন্যু নির্ধারণ করতে চায় বাফুফে। সর্বোচ্চ আটটি। ক্লাবগুলোর সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠকে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে কমিটি। আর সবশেষ বিপিএলের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই ক্লাব ভেন্যু হিসেবে পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামকে।

কিন্তু ভেন্যু বাড়ানোর সিদ্ধান্তে কতদিন টিকে থাকতে পারে এটা প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে অতীত রেকর্ড দেখেই। এর আগে বারবার ভেন্যু বাড়ানোর কথা উঠলেও সে পথে হাটতে পারেনি বাফুফে। এতে ক্লাবগুলোর উদাসীনতাও ছিলো প্রশ্নাতীত!

এসময় বিপিএলে দলবদলের সময়ও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া মেয়েদের লিগ ও বয়সভিত্তিক লিগ নিয়েও সিদ্ধান্ত আসে।

প্রিমিয়ার লিগের দলবদল ২৫ জুলাই থেকে ৩০ আগষ্ট চলবে। দলবদল এর পর ৬ সপ্তাহ সময় দেয়া হবে দলগুলোর প্রস্তুতির জন্য। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ফেডারেশন কাপ দিয়ে মৌসুম শুরু হবে। এমনটাই জানান পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী।

সালাম মুর্শেদী জানান, ‘আগামি অনুর্ধ্ব-১৮ ফুটবলের আসরটি লিগ পর্যায়ে হবে। তবে অনূর্ধ্ব-১৭ হিসেবে। এবং আগামি পাইওনিয়ার লিগ অনূর্ধ্ব-১৬ এর বদলে অনূর্ধ্ব-১৫ আদলে হবে। তাছাড়া প্রিমিয়ার লিগের ভেন্যু নূন্যতম পাঁচটি করতে হবে। আর আগামি বছরে মেয়েদের লিগ হবে। ক্লাব ও করপোরেট দলগুলোর সমন্বয়ে।’

সিদ্ধান্ত হলেও অনেকবারই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে দেখা গেছে বাফুফেকে। এবার তার ব্যত্যয় হবে কিনা এটাই এখন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সারাবাংলা/জেএইচ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর