Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১২ কোটি ভোটারের প্রায় সকলেই নির্বাচন বর্জন করেছে: বিএনপি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৪:১৩

ঢাকা: ১২ কোটি ভোটারের প্রায় সকলেই নির্বাচন বর্জন করেছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। রোববার (৭ জানুয়ারি) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ দাবি করেন দলটির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো শুরু থেকেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছিল। সুষ্ঠূ নির্বাচনের দাবিতে বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী দলগুলোর আন্দোলন অব্যাহত থাকলেও শেখ হাসিনা নিজের মতো করে জাতীয় নির্বাচন করতে অনঢ় থাকেন এবং আন্দোলনরত জনগোষ্ঠীর আকাঙ্ক্ষাকে অগ্রাহ্য করে তামাশার নির্বাচন করতে উঠেপড়ে লাগেন। ফলে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো শেখ হাসিনার একতরফা নির্বাচন বর্জনের ডাক দেয়। নেমে আসে সরকারের জুলুম-নিপীড়ন-নির্যাতন। বন্দি করা হয় বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘বিরোধী দলগুলোর ডাকে সাড়া দিয়ে সংহতি জানায় সংগ্রামী জনগণ। আজকের জালিয়াতির নির্বাচন দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখান করে তারা এবং গণতন্ত্রকামী মানুষের বিজয় নিশ্চিত হয়। আজকের জালিয়াতির নির্বাচনে শাসকদল আত্মশ্লাঘা লাভ করলেও ভোট কেন্দ্রের চরম অনিয়ম ও সহিংসতা ঢাকতে পারেনি। এগুলো স্পষ্ট হয়েছে প্রার্থীদের জালিয়াতির অভিযোগে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের হিড়িকে। ভোট কেন্দ্রের ছবি ও ভিডিওতে নজীরবিহীন ভোট কেলেঙ্কারীর খবর প্রতিমুহুর্তে প্রকাশ পেয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকার বাইরেও ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের নিয়ে আসতে পারেনি সরকার, নির্বাচন কমিশন ও দলীয় ক্যাডারদের নানা কারসাজি, হুমকি ও কাকুতিমিনতি সত্ত্বেও। বিএনপিসহ ৬৩টি গণতন্ত্রমনা রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করা সত্ত্বেও দেশের প্রতিটি আসন ও কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ যেভাবে সংঘবদ্ধভাবে কারচুপি ও সংঘাত করেছে, একের পর এক যেসব ছবি, ভিডিও ও তথ্য আমরা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পেয়েছি তাতে এটিই প্রমাণিত, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক, প্রতিযোগিতামূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব নয়।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান স্বাধীন না হলে রাষ্ট্রের সমূহ ক্ষতি হয়। বর্তমান নির্বাচন কমিশন তার প্রমাণ। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের তল্পিবাহক হওয়ায় তারা নির্বাচনের নামে ছিনিমিনি খেলেছে। সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ভোট কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর এজেন্ট ছাড়া আর কাউকে দেখেননি। অথচ আরেকজন নির্বাচন কমিশনার বললেন ৫১ শতাংশ ভোট পড়বে। ভোট গ্র্রহণ শুরু থেকে কয়েক ঘন্টা পর নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়, ১৮ দশমিক ৫০ শতাংশ ভোট পড়েছে। পুলিশ প্রধান বলেছেন, যথেষ্ট ভোটার উপস্থিতির সংবাদ পাচ্ছি।’

‘এসব বক্তব্য আগাম প্রস্তুতি বলে মনে হয়। এগুলো নির্বাচন শেষে বেশি ভোট ঘোষণা করার পটভূমি। সকল স্বৈরাচারের রীতিই হল জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত ভোটে ভোটার বেশি দেখান। গণবিরোধী সরকারের পারিষদবর্গ ও আজ্ঞাবাহী রাষ্ট্রযন্ত্রের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে দেশের ১২ কোটি ভোটারের প্রায় সকলেই একযোগে এই প্রহসনমূলক নির্বাচনকে বর্জন করেছে’— বলেন রুহুল কবির রিজভী রিজভী।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের এই বীরোচিত অবস্থান গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য। গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি সমূহের চলমান সংগ্রামের প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগের জন্য গণদাবির সুদৃঢ় প্রতিফলন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধভাবে ও সাহসিকতার সাথে যেভাবে ডামি নির্বাচনকে প্রত্যাখান করেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি তার জন্য দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাচ্ছে।’

রোববার দেশের ২৯৯টি সংসদীয় আসনে ভোটগ্রহণ হয়। এদিন হরতাল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।

সারাবাংলা/এজেড/আইই

আওয়ামী লীগ নির্বাচন বিএনপি রুহুল কবীর রিজভী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর