Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উত্তরাঞ্চলে হাড় কাঁপানো শীতে সীমাহীন ভোগান্তি, জনজীবনে ছন্দপতন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:৫৯

রংপুর: পৌষের শেষদিকে এসে তীব্র শীতে কাঁপছে পুরো উত্তরাঞ্চল। চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। হাড় কাঁপানো শীতের সঙ্গে বেড়েছে কুয়াশার দাপট। উত্তরের হিমেল বাতাসে মানুষ এখন শীতে কাবু। স্বাভাবিক জীবন বিপর্যস্ত। সন্ধ্যার পর থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা কয়েকদিন থেকে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। দিনের অধিকাংশ সময়ই অন্ধকারাচ্ছন্ন। তবে আবহাওয়া অফিস বলছে, সপ্তাহখানেক এমন পরিস্থিতি থাকবে, তারপরেই ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়বে।

বিজ্ঞাপন

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, রোববার সকাল ৯ টায় উত্তরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায় তাপমাত্রা ৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুরে ১০. ৩ ডিগ্রি, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১০.২ ডিগ্রি, ডিমলায় ১০.২ ডিগ্রি, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১২ ডিগ্রি, দিনাজপুরে ৮.৬ ডিগ্রি, গাইবান্ধায় ১১.৮ ডিগ্রি, লালমনিরহাটে ১১.৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ধেয়ে আসা হিমেল বাতাসের কারণে এই অঞ্চলে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। তাছাড়া কুয়াশার কারণে সূর্যের তাপ ভূপৃষ্ঠে না পৌঁছায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। আগামী ৭ দিন এই আবহাওয়া বিরাজ করবে।

এদিকে শীতের কারণে ঠাণ্ডা-কাশিসহ শীতজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শীতজনিত রোগে সকাল থেকে শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। আর মেডিসিন ওয়ার্ডেও বৃদ্ধ ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের চিকিৎসক আব্দুল আহাদ জানান, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগীও বাড়তে শুরু করেছে। বেশিরভাগ শিশু ও বয়স্করা শীতে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসকের পরামর্শ, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে শিশু ও বয়স্কদের বের না হওয়াই ভালো।

রোববার সরেজমিন নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহ ধরে শৈত্যপ্রবাহ আর কনকনে ঠাণ্ডায় জনজীবন ছন্দপতন ঘটেছে। মেঘলা আকাশ আর কুয়াশার কারণে এক সপ্তাহ থেকে সূর্যের দেখা নেই। হাট-বাজার ও রাস্তা-ঘাটে জনসমাগম কমে গেছে। প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। বিশেষ করে শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষজন সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছেন। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। গরম কাপড় কিনতে নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষেরা ভিড় করছেন মার্কেটগুলোতে।

রংপুর অঞ্চলে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে জেঁকে বসা শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের উষ্ণতা নিতে গিয়ে কোথাও কোথাও ঘটছে অগ্নিদগ্ধের ঘটনাও। কেউ কেউ শীত নিবারণে গরম পানি ব্যবহার করতে গিয়েও দগ্ধ হচ্ছেন। অধিকাংশ দুর্ঘটনা অসাবধানতার কারণে ঘটছে। এমন দুর্ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে গতকাল দুপুরে রংপুরের পীরগাছায় আলেয়া বেগম (৬৫) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।

হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের দায়িত্বে নিয়োজিত চিকিৎসক ফারুক আলম জানান, চিকিৎসাধীন রোগীরা আগুন পোহানোসহ গরম পানি ব্যবহার করতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। বার্ন ইউনিটে ১২টি শয্যার মধ্যে ১১ জন চিকিৎসাধীন। রোগীদের শরীরের ১০ থেকে ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আ ম আখতারুজ্জামান জানান, কয়েক দিন থেকে রংপুর অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। শীতজনিত রোগে অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। শীত থেকে বাঁচতে গ্রামের মানুষ খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ ও গরম পানির ব্যবহারও বেড়ে যায়। অসাবধানতার কারণে দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে।  সাধ্যমতো দগ্ধ ও শীতজনিত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি রোগীদের আগুনের ব্যাপারে সচেতনও করা হচ্ছে।

সারাবাংলা/আইই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে খালে ভাসছিল অর্ধগলিত লাশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৩

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

সম্পর্কিত খবর