Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘স্মার্ট টমেটো’ চাষে কৃষকের বাজিমাত

রফিকুল আলম বকুল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪৬

মেহেরপুর: প্রতি বছরই আগাম জাতের সবজি চাষে বেশি মুনাফা অর্জন করলেও এবার আগাম ও উন্নত জাতের ‘স্মার্ট-১২১৭’ জাতের টমেটো চাষে বাজিমাত করেছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের কৃষক সজিব রহমান। ইতোমধ্যে দেড় লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন, আরও লক্ষাধিক টাকার টমেটো বিক্রি করবেন বলে তিনি আশাবাদী।

কৃষি অফিস জানিয়েছে, উন্নত জাত, সঠিক পরিচর্যা ও কৃষি বিভাগের প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেলে সবজি চাষিদের ভাগ্য বদলায়। মাঠ দিবসের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার কারণেই নতুন ও উন্নত জাতের ফসলের চাষ বাড়ছে।

বিজ্ঞাপন

মেহেরপুর জেলায় এবারই প্রথম ‘স্মার্ট-১২১৭’ জাতের টমেটো আবাদ করেছেন ভাটপাড়া গ্রামের আকবর আলীর ছেলে কৃষক সজিব রহমান। তিনি জানান, এক বীজ কোম্পানির মাঠদিবসে অংশ নিয়ে স্মার্ট-১৭ জাতের হাইব্রিড টমেটোর বিষয়ে জানতে পারেন তিনি। পরে পরীক্ষামূলক এক বিঘা জমিতে স্মার্ট-১২১৭ জাতের টমেটোর চারা রোপণ করেন। তিনমাস যেতে না যেতেই গাছে আসে ফুল ও ফল। প্রতিটি গাছের পাতার নিচে থোকায় থোকায় ঝুলতে দেখা যায় টমেটো। গাছ ঠেকাতে গাছের সঙ্গে বেঁধে দিতে হয় বাঁশের খুঁটি। ইতোমধ্যে তিনি দেড় লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। এখনও জমিতে লক্ষাধিক টাকার টমেটো রয়েছে।

কৃষক সজিব রহমানের টমেটো চাষে বাজিমাতের খবরে অনেকেই আসছেন তার কাছে পরামর্শ নিতে। সবজি চাষি শাহীন জানান, অন্যান্য জাতের টমেটো চাষে লাভ হয়, তবে স্মার্ট জাতের টমেটো চাষে প্রায় তিনগুণ লাভ সম্ভব। এবার দুই বিঘা জমিতে এ নতুন জাতের টমেটো আবাদ করবেন বলে জানান তিনি।

সবজি চাষি কাবিরুল ইসলাম জানান, শুধু স্মার্ট-১২১৭ জাতের টমেটো নয়, অনেক উন্নত জাত আছে যা চাষিরা জানে না। স্থানীয় কৃষি অফিস যদি ওইসব আবাদ সম্পর্কে ধারণা দেয়, তাহলে এই অঞ্চলে সব আবাদেই চাষিরা লাভবান হতে পারে। বিভিন্ন বীজ কোম্পানির উদ্যোগে চাষিরা আবাদ সম্পর্কে যে ধারণা পেয়ে থাকে শুধুমাত্র সেটুকুতেই সীমাবদ্ধ। স্থানীয় কৃষি অফিসার ও উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা যদি চাষিদের উন্নত জাত নির্বাচনে সহায়তা করে তাহলে নতুন নতুন আবাদের খোঁজ পাবেন চাষিরা। চাষি সজিবের মতো তিনিও এবার উন্নত ও আগাম জাতের টমেটো আবাদ করবেন এবং সে ব্যাপারে পরামর্শ নিচ্ছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

কৃষি অফিস জানিয়েছে, এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি আগাম জাতের টমেটো চাষ হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বারি টমেটো-৪, বারি টমেটো-৫, রোমা ভিএফএম রোমারিও, টিপু সুলতান, গ্রেট পেলে, ডেল্টা এফ-১, নিউ রুপালী এফ। এগুলো মৌসুমী জাত। শীতকালে স্বাভাবিক ভাবেই এসব জাতের টমেটো আবাদ হয়ে থাকে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে বীজ বপনের পর অক্টোবর-নভেম্বরে এসব জাতের টমেটোর চারা রোপণ করা হয়ে থাকে। এসব জাতের টমেটো গাছে ফুল ও ফল আসতে একটু দেরি করে, তাই ফলন নিয়েও হতাশায় থাকেন চাষিরা।

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ইমরান হোসেন জানান, চলতি বছরে ৬৫ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের টমেটো আবাদ হয়েছে। এতে ১৫০০ মেট্রিক টন টমেটো উৎপাদন হবে। যা জেলার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে চাষিরা লাভবান হবে।

তিনি আরও জানান, মেহেরপুর জেলার মাটিতে সব ধরনের ফসল উৎপাদন হয়। দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়ে এখানকার উৎপাদিত টমেটো ও সবজি সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদা ও দামও ভাল। সে কারণে কৃষক সজিব রহমানের মতো কৃষকদের পাশে থেকে মাঠ দিবসের মাধ্যমে বিভিন্ন ফসলের জাত সম্পর্কিত নানা পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

সারাবাংলা/এমও

টমেটো মেহেরপুর স্মার্ট টমেটো

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর