মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা
১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৫১
ঢাকা: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে প্রাধান্য দিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ২য় ষান্মাসিক (জানুয়ারি-জুন, ২০২৪) মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নেমে না আসা পর্যন্ত সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়াও এবারের মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার বাড়ানোর পাশাপাশি টাকার সরবরাহ কমানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫ম তলায় জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নররা উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএফআইইউ’র প্রধান কর্মকর্তা, চিফ ইকোনোমিস্ট, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও সহকারী মুখপাত্ররা।
মুদ্রানীতি ঘোষণার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নেমে না আসা পর্যন্ত সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে। এবারের মুদ্রানীতিতে চারটি বিষয় গুরুত্ব দিয়ে মনিটরিং পলিসি করা হয়েছে। সরকারের নির্বাচনি ইশতেহারের সঙ্গে এই মুদ্রানীতি সামঞ্জস্যপূর্ণ।’ এছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ কমলে অসুবিধা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, ‘আসছে জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭.৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ লক্ষ্যে নতুন মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার পয়েন্ট ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নীতি সুদহার ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অন্যান্য ব্যাংকগুলো যে টাকা ধার করবে, তার সুদহার বাড়বে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক আরও সংকোচনমূলক মুদ্রা সরবরাহের দিকে হাঁটছে।’
এ ছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রিভার্স রেপো (বর্তমান নাম স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি বা এসডিএফ) নিম্নসীমার সুদহার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে পয়েন্ট ৭৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। বাজারে উদ্বৃত্ত টাকা থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক রিভার্স রেপোর মাধ্যমে টাকা তুলে নেয়।
নীতি সুদহার করিডরের ঊর্ধ্বসীমা স্পেশাল রেপো বা এসএলএফের (স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি) সুদহার ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। এতে সংকটে পড়া ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে কিছুটা ব্যয় কমবে।
চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের (ডিসেম্বর পর্যন্ত) জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। কিন্তু মূল্যস্ফীতির মতো ঋণ প্রবৃদ্ধির এই লক্ষ্যও অর্জিত হয়নি। আর গত নভেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ, যা লক্ষ্যের চেয়ে ১ শতাংশ কম।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম