সিরাজগঞ্জ: জেলার তাড়াশ উপজেলায় ১৮ বছর বয়সী এক তরুণী পুরুষে রূপান্তর হয়েছেন। ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার আগে তার শারীরিক পরিবর্তন ঘটে। পরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকে দেখানোর পর বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হন ওই তরুণীর পরিবার।
পুরুষে রূপান্তর হওয়া ওই তরুণীর নাম তমা সরকার। তিনি উপজেলার বারুহাঁস ইউনিয়নের চৌয়াড়িয়া দক্ষিণ পাড়ার শ্রী সুধান্ন সরকারের মেয়ে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তমা ও তার মা শিখা রানী।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষ এক নজর দেখার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে তমাদের বাড়িতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বুধবার বিকেল থেকেই তরুণীর বাড়িতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। প্রতিবেশীরা গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে যান বাড়ির সামনের উঠানে। দূর-দূরান্ত থেকেও দলবেঁধে ছুটে আসেন উৎসুক জনতা। তমার বদলে যাওয়া জীবন নিয়ে প্রশ্নের যেন শেষ নেই তাদের। জনতার ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পরিবারটিকে।
তমা সরকার জানান, ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার ১০ থেকে ১৫ দিন আগে হঠাৎ করে তার শারীরিক পরিবর্তন শুরু হতে থাকে। লজ্জার ভয়ে বিষয়টি নিজের মধ্যেই চাপা রাখেন তিনি। এভাবে তার বেশ কিছুদিন কেটে যায়। পরে রাজশাহীতে আলহাজ্ব সুজা উদ-দৌলা সরকারি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন তমা। আর এরই মাঝে তার সহপাঠীকে বিষয়টি জানান তিনি। পরে তমার বাবা-মাকে বিষযটি খুলে বলে তার সহপাঠী।
তিনি আরও জানান, মা-বাবা বিষয়টি জানতে পেরে নিশ্চিত হন তমা ছেলেতে রূপান্তরিত হয়েছেন। তারপর তমাকে রাজশাহীর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছেলেতে রূপান্তরিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন তারা।
বাবা সুধান্ন সরকার জানান, স্থানীয় স্কুল থেকে ২০২৩ সালে এসএসসি পাশ করে তমা। এসএসসি পাশ করার পর রাজশাহীতে আলহাজ্ব সুজা উজ দৌলা সরকারি কলেজে ভর্তি হয়ে পড়ালেখা শুরু করেন। আর এ সময় তার সহপাঠী প্রথমে তমা পুরুষে রূপান্তর হওয়ার বিষয়টি তাকে অবগত করেন। পরে হরমোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হন তিনি।
মা শিখা রানী বলেন, ‘আমি তাকে অনাবৃত করে দেখেছি। তার শারীরিক পরিবর্তন ঘটেছে। নারী থেকে পুরুষে রূপান্তর হয়েছে তমা। একইসঙ্গে তার জীবনযাপন ও আচরণে পরিবর্তন এসেছে। হিন্দু ধর্মের কিছু রীতিনীতি থাকায় রূপান্তরিত তমা সরকারের নাম এখনো পরিবর্তন করে নতুন নাম রাখা হয়নি।’
বারুহাঁস ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মইনুল হক বলেন, ঘটনাটি অনেকদিন আগে ঘটলেও বিষয়টি আজকে জানাজানি হয়েছে। আমি নিজেও বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি।