Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাঁকোয়া টেক্সে বেতন বন্ধ, শ্রমিকরা আন্দোলনে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:৩৭

রাজশাহী: রাজশাহীর সোয়েটার কারখানা সাঁকোয়া টেক্সের কর্মীদের বেতন বকেয়া তিন মাস থেকে আট মাস পর্যন্ত। বেতনের দাবিতে টানা দুই দিন ধরে আন্দোলন করছেন সেখানকার শ্রমিকরা।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকেই সাঁকোয়া টেক্সের শ্রমিকরা কারাখানায় অবস্থান নেন। টানা সেখানেই অবস্থান করেন তারা। বুধবার দিবাগত রাত সেখানে কাটিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরেও তারা কারখানায় ছিলেন বেতনের দাবিতে।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহী নগরীর বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত কারখানাটি। রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হকের এনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। বর্তমানে প্রায় ৩০০ শ্রমিক এই সোয়েটার কারখানায় কর্মরত। সবারই কিছু না কিছু বেতন বকেয়া পড়েছে।

শ্রমিকরা জানান, তাদের কেউ তিন মাস, কেউ চার মাসের বেতন পাওনা রয়েছেন। পাঁচ, ছয়, সাত মাস তো বটেই, আট মাসের বেতন বকেয়াও রয়েছে কারও কারও। তিন-চার মাস ধরে প্রতি সপ্তাহেই তাদের বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হয়। সপ্তাহের সোমবার কিংবা বৃহস্পতিবার বেতন দেওয়া হবে বলে কারখানার কর্মকর্তারা জানান। কিন্তু সেই আশ্বাস আর আলোর মুখ দেখে না। মাসের পর মাস এভাবেই তাদের বেতন আটকে রাখা হয়েছে। বেতন ছাড়া শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

কারখানার লিংকিং অপারেটর আশা বেগম বলেন, ‘এখানে শ্রমিকেরা উৎপাদনের ওপর নির্ভর করে পারিশ্রমিক পান। মাসে গড়ে তারা ১৫ হাজার টাকা করে বেতন পান। কারখানার ২০০ শ্রমিকের কেউ সর্বনিম্ন তিন মাসের, সর্বোচ্চ আট মাসের বেতন পাবেন। আমি নিজে পাব চার মাসের বেতন। বাড়ি ভাড়া বাকি পড়েছে। দোকানে অনেক টাকা বাকি পড়েছে। এখন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছি না। নতুন বছরে বাচ্চাদের স্কুল ড্রেস করে দেওয়ার মতো টাকাও নেই। খুব বিপদে আছি।’

বিজ্ঞাপন

সম্পা খাতুন নামের আরেক নারী শ্রমিক বলেন, ‘কেউ বেতন চাইতে গেলে কারখানার কর্মকর্তারা দুর্ব্যবহার করেন। যারা বেতন চায়, তাদের নামের তালিকা করা হয়। পরদিন থেকে গেট দিয়ে আর ওই শ্রমিকদের কারখানায় ঢুকতে দেওয়া হয় না। তারপর তাদের ছাঁটাই করা হয়। সম্প্রতি এভাবে ১৫ থেকে ২০ জনকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এবার আমরা একজোট হয়ে আন্দোলন শুরু করেছি। আমাদের আর চাকরির দরকার নেই, বেতন দরকার।’

সেলিনা বেগম নামের আরেক নারীকর্মী বলেন, ‘বেতন চাইতে গেলে জোর করে সাদা কাগজে সই নেয়। বলে রিজাইনের কাগজ। বেতন দিয়ে দেবে। তারপর বের করে দেয়। ওই বেতন আর দেয় না। তিন মাসের বেতনও মেরে খেয়ে নেয়। এবার ঈদের দিন আমার এতিম বাচ্চাকে নিয়ে খালি মুখে দিন কাটিয়েছি। বেতন দেয়নি। এখানে কাজ করে শ্রমিকদের এই অবস্থা।’

শ্রমিকেরা তিন থেকে আটমাসের বেতন বকেয়া থাকার কথা বললেও এনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনামুল হক বলেন, ‘শ্রমিকদের মাত্র একমাসের বেতন বাকি আছে। সম্প্রতি কারখানার সোয়েটার রফতানি নিয়ে একটু ঝামেলা হওয়ায় শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা যায়নি। আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন দিয়ে দেওয়া হবে।’

তবে বৃহস্পতিবার রাতেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত কারখানাটির শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয়নি।

সারাবাংলা/টিআর

বকেয়া বেতন বেতন বকেয়া শ্রমিকদের আন্দোলন সাঁকোয়া টেক্স সোয়েটার কারখানা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর