Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এলএনজি টার্মিনালে যান্ত্রিক ত্রুটি, চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:৫০

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম জুড়ে গ্যাস সরবরাহে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। আবাসিক ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাস সরবরাহ আকস্মিকভাবে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কক্সবাজারের মহেশখালিতে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) টার্মিনালে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত ২টা থেকে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে। এর ফলে একইসময়ে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

কেজিডিসিএল’র বিপণণ বিভাগের উপ মহাব্যবস্থাপক (দক্ষিণ) প্রকৌশলী অনুপম দত্ত সারাবাংলাকে বলেন, ‘এলএনজি টার্মিনালে টেকনিক্যাল ফল্টের কারণে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে। মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, দ্রুততার সঙ্গে এ সংকটের সমাধান হবে।’

আকস্মিক গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গৃহস্থালি খাতের গ্রাহকেরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন।

নগরীর বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা গৃহিণী নূপুর আক্তার সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত তিনমাস ধরে গ্যাসের কষ্টে আছি। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৪ ঘন্টাও চুলায় গ্যাস থাকে না। এখন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। রাতেও ছিল না। হোটেল থেকে এনে ভাত খেতে হয়েছে। সকালে নাস্তাও করতে পারিনি।’

আসকার দিঘীর পাড়ের বাসিন্দা সিতারা শামীম সারাবাংলাকে বলেন, ‘কখনও ভোর ৬টায়ও চুলায় গ্যাস পাই না। কখনও আসে সন্ধ্যায়। রাত ১২টায়ও আসে। এত ভোগান্তিতে আর কখনোই পড়িনি। এখন শুনছি, পুরো চট্টগ্রামে গ্যাসের সাপ্লাই নেই। আমাদের দুর্ভোগ নিয়ে কারও মাথাব্যাথা নেই।’

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মুস্তফা নঈম জানান, গ্যাসের অভাবে রান্না না হওয়ায় গত (বৃহস্পতিবার) রাতে পরিবারের সদস্যরা বিস্কুট ও খেজুর খেয়ে কাটিয়েছেন। সকালেও গ্যাস না থাকায় হোটেলে নাস্তা আনতে গিয়ে দেখেন, মানুষের দীর্ঘ লাইন। তখন জানতে পারেন, চট্টগ্রামসহ কেজিডিসিএল’র আওতাধীন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

কেজিডিসিএল’র প্রকৌশল ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, চট্টগ্রামে মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল ছাড়া বিকল্প কোনো উৎস থেকে গ্যাস সরবরাহের সুযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ভাসমান দুটি টার্মিনাল থেকে পাওয়া প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস নিয়মিত গ্রাহকদের সরবরাহ করে থাকে কেজিডিসিএল।

এর মধ্যে একটি টার্মিনাল জরুরি সংস্কার কাজের জন্য গত অক্টোবরে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। এজন্য গত তিনমাসেরও বেশিসময় ধরে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ১৭ জানুয়ারি সেটি ফেরত এসেছে। সেটি পুন:স্থাপন করতে গিয়ে যান্ত্রিক ত্রুটি সৃষ্টি হওয়ায় সরবরাহে বিপর্যয় তৈরি হয়েছে।

কেজিডিসিএল’র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্রাহক হিসেবে বিবেচনা করা হয় শিকলবাহা বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড ও কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানিকে। এ তিনটি খাতে গ্যাসের প্রয়োজন প্রায় ১২০ থেকে ১২৫ মিলিয়ন ঘনফুট। আরও ১৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বাকি গৃহস্থালি ও শিল্পখাতে সরবরাহ করে কেজিডিসিএল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে গৃহস্থালির পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্র, সার কারখানা, শিল্প কারখানা, সিএনজি স্টেশন, হোটেল-রেস্টুরেন্টেও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে।

সারাবাংলা/আরডি/এনইউ

টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

‘তুফান’ আসছে হিন্দি ভাষায়
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৯

সম্পর্কিত খবর