Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গাজীপুরে মধ্যযুগীয় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২০ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২০

দরদরিয়া আবিষ্কৃত প্রত্নতাত্ত্বিক দুর্গ ঘুরে দেখছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি।

গাজীপুর: জেলার কাপাসিয়া উপজেলার দরদরিয়া গ্রামে দুষ্প্রাপ্য ও তাৎপর্যপূর্ণ নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণাকেন্দ্র ‘ঐতিহ্য অন্বেষণ’। দরদরিয়া দুর্গে প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ ও খননে দেশে প্রথমবারের মতো মধ্যযুগের ইটে নির্মিত প্রত্নবস্তু আবিষ্কৃত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান।

২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর দরদরিয়া গ্রামের ‘দরদরিয়া দুর্গ বা রানির বাড়ি’ প্রত্নস্থানটিতে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও গবেষণা কাজ শুরু হয়। এ উপলক্ষে শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) দরদরিয়া দুর্গে প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ ও খননে আবিষ্কৃত প্রত্নবস্তুর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ অনুষ্ঠানে ঐতিহ্য অন্বেষণের সভাপতি ড. নুহ-উল-আলম লেনিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি।

সিমিন হোসেন রিমি বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি ও পর্যটনে আকৃষ্ট করার জন্য দরদরিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের অনেক দেশ পর্যটকদের মাধ্যমে বড় রাজস্ব আয় করছে। এটা বাংলাদেশের জন্য উল্লেখযোগ্য প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন আবিষ্কার। আজ আমরা একটা স্বপ্ন স্পর্শ করলাম। এটা বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে।

এসময় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আফরোজা খান মিতাসহ স্থানীয় বক্তিরা। পরে প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি এবং প্রত্নতত্ত্ববিদরা দুর্গ এলাকা ঘুরে দেখেন।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, বৈজ্ঞানিক ও ভূতত্ত্ব গবেষক জেমস টেলর তার ঢাকার টপোগ্রাফি এবং পরিসংখ্যানের একটি স্কেচ (১৮৪০) বইয়ে তোগমা বা টোক শহর ব্রহ্মপুরে তীরে অবস্থিত বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, তোগমা বা টোক শহর রাজা শিপালের সময়ে বন্দর ছিল। কাপাসিয়ার দরদরিয়ায় বানার নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত।

বইটিতে তিনি আরো উল্লেখ করেন, দুর্গটি বানিয়া রাজা কর্তৃক নির্মিত। দুর্গটির বাইরের প্রাচীর মাটি দ্বারা নির্মিত। প্রাচীরের উচ্চতা ১২-১৪ ফুট। প্রাচীরের পরিধি প্রায় ২ মাইল এবং এর প্রস্থ প্রায় ৩০ ফুট। দুর্গের ৫টি প্রবেশদ্বার ছিল, তবে ইট বা পাথর নির্মিত প্রবেশদ্বার বা তোরণের কোনো চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়নি। প্রাচীরটি অর্ধচন্দ্রাকার করে নির্মিত। এই প্রাচীরের কিছুটা দূরে আরেকটি প্রতিরক্ষা প্রাচীরের চিহ্ন রয়েছে। এটি ইট দিয়ে নির্মিত। অনুমান করা হয় যে, এই প্রাচীরে তিনটি প্রবেশদ্বার ছিল। দুর্গটি ‘রানির বাড়ি’ নামে পরিচিত।

বলা হয়, বানিয়া রাজাদের শেষ বংশধর রানী ভবানী ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে মুসলিম অভিযানের সময় এই দুর্গে বসবাস করেছিলেন। জেমস টেলরের মতে, এটিই ঐতিহাসিক একডালা দুর্গ। বাংলার দ্বিতীয় স্বাধীন সুলতান শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ ১৩৫৩ খ্রিষ্টাব্দে দিল্লির সুলতান ফিরোজশাহ তুঘলক কতৃর্ক আক্রান্ত হলে একডালা দুর্গে আশ্রয় নেন। দিল্লির সুলতান ফিরোজশাহ তুঘলক এ ২২ দিন অপেক্ষা করেন।

সারাবাংলা/টিকে/এনএস

গাজীপুর দরদরিয়া দুর্গ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর