আদালতে বসানো লোহার খাঁচা অপসারণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট
২৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:২৬
ঢাকা: অধস্তন আদালত কক্ষে স্থাপন করা লোহার খাঁচার অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবীর পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন।
রিটকারী সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী হলেন, জি এম মুজাহিদুর রহমান, মোহাম্মদ নোয়াব আলী, সাদ্দাম হোসেন, আব্দুল্লাহ সাদিক, মিজানুল হক, মুজাহিদুল ইসলাম, মেসবাহ উদ্দিন, মো. জোবায়দুল ইসলাম, আজিম উদ্দিন পাটোয়ারী ও সাজ্জাদ সারোয়ার।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘বাংলাদেশের অধস্তন আদালত ও ট্রাইবুনালে এই ধরনের লোহার খাঁচা অতীতে ছিল না। বর্তমানে প্রায় শতাধিক আদালতে এই ধরনের খাঁচা বিদ্যমান। এর সিংহভাগ ঢাকায় অবস্থিত। এই ধরনের খাঁচা ব্যবস্থাপনা সংবিধানের ৩১, ৩২ ও ৩৫(৫) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ৩৫(৫) এ বলা আছে কারও সঙ্গে নিষ্ঠুর-অমানবিক আচরণ করা যাবে না। অথচ এই খাঁচা ব্যবস্থার মাধ্যমে নাগরিকদের সঙ্গে নিষ্ঠুর অমানবিক ও বর্বর আচরণ করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সার্বজনীন মানবাধিকার সনদ, নির্যাতনবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদসহ অন্য কোন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক দলিল এই ধরনের আচরণ অনুমোদন করে না। অন্ধকার যুগে মানুষকে খাঁচায় বন্দি করে রাখা হতো। এই ধরনের নিষ্ঠুর আচরণ করা হতো।’
বর্তমানে নিম্ন আদালতে এই খাঁচা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মূলত নিষ্ঠুর আচরণ করা হচ্ছে। এমনকি জামিনে থাকা আসামিদের হাজিরার জন্যও এই খাঁচা ব্যবহার করা হয়। তাদের সাক্ষ্য গ্রহণের সময়ও খাঁচায় ঢুকিয়ে রাখা হয় বলেও জানান তিনি।
এসবের প্রতিকার চেয়ে গত বছরের ১৬ অক্টোবর এই ১০ আইনজীবীর পক্ষে নোটিশ পাঠান আইনজীবী শিশির মনির। নোটিশের জবাব না পেয়ে এই রিট দায়ের করা হয়।
রিটে আদালত কক্ষে লোহার খাঁচা স্থাপনের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ইতোমধ্যে স্থাপিত লোহার খাঁচা অপসারণ করে কাঠের ডক কেন প্রতিস্থাপন করা হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি যে সমস্যায় আদালত ও ট্রাইবুনালে লোহার খাঁচা স্থাপন করা হয়েছে তার একটি তালিকা আদালতে দায়ের করা এবং রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিনে থাকা আসামিদের আদালত কক্ষে লোহার খাঁচায় না ঢুকানোর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চাওয়া হয়েছে।
আগামী সপ্তাহে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানান আইনজীবী শিশির মনির।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও