‘নতুন ফ্লোর প্রত্যাহারেও বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কের কিছুই নেই’
২৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:০৬
ঢাকা: পুঁজিবাজারের নতুন করে আরও ২৩টির কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন সীমা) তুলে নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গতকাল সোমবার (২২ জানুয়ারি) এই ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। ফলে আজ মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) থেকে শুধুমাত্র ১২টি কোম্পানির ওপর ফ্লোর প্রাইস বহাল থাকছে।
অধিক সংখ্যক কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেওয়া হলেও বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মনে করে দেশের শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন সিইও ফোরাম।
পুঁজিবাজারের শীর্ষ এ সংগঠনটি মনে করে, বর্তমানে পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি সার্বোক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। বাজারের প্রয়োজনে যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সিইও ফোরাম পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। বিনিয়োগকারীদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রিভিউ আলোচনায় বসবে সিইও ফোরাম। গত রোববার (২১ জানুয়ারি) ও সোমবার (২২ জানুয়ারি) সংগঠনটির অনুষ্ঠিত বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা পর্যালোচনা করা হবে। পাশাপাশি সিইও ফোরামের সদস্যদের যার যার অবস্থান থেকে পুঁজিবাজারকে কি ধরনের সাপোর্ট অব্যাহত রাখা যায়, সে বিষয়ে আলোকপাত করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিইও ফোরামের প্রেসিডেন্ট ও ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছায়েদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারের স্বার্থে সিইও ফোরাম কাজ করে যাচ্ছে। আজকে সকাল সাড়ে ১১টায় রিভিউ মিটিং রয়েছে। আজকেও পুঁজিবাজার ইতিবাচক প্রবণতায় রয়েছে। পুঁজিবাজারকে সার্বোক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হবেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাদের জানিয়েছি, বাজারকে সার্বোক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। বাজারের প্রয়োজনে যে ধরনের ইনেশিয়েটিভ নেওয়ার দরকার সেটা নেওয়া হবে। সিইও ফোরাম পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। বিনিয়োগকারীদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই।’
এদিকে, গত রোববার সিইও ফোরামের বৈঠকে সিদ্ধন্ত হয়— পুঁজিবাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় ডিলার অ্যাকাউন্টে ১ থেকে ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। ডিলার অ্যাকাউন্ট থেকে কোনো শেয়ার বিক্রি করা হবে না। বিনিয়োগকারীদের ইতিবাচকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করা হবে। যেসব শেয়ারের ক্রেতা থাকবে না সেখানে বিক্রির আদেশ বসানো হবে না। ট্রেডারদের এ বিষয়ে সতর্কতা আবলম্বন করতে বলা হবে। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের কারণে যাতে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত না হন বা বাজারে বিক্রির চাপ তৈরি না করেন সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখা হবে।
প্রসঙ্গত, ফ্লোর প্রাইস আরোপের প্রায় দেড় বছর পর গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) এক আদেশে তা তুলে দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। ফলে গত রোববার (২১ জানুয়ারি) থেকে ৩৫টি ছাড়া বাকি সব কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটগুলো ফ্লোর প্রাইস ছাড়াই লেনদেন হয়। এর দুই কার্যদিবসের মাথায় ওই ৩৫টির মধ্য থেকে ১২টি বাদে ২৩টি কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেয় কমিশন।
মঙ্গলবার সকালে লেনদেন শুরুতে সূচক কিছুটা পতনমুখী হলেও তা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে ফিরে আসে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ডিএসইএক্স সূচক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছিল ৬২৯২ পয়েন্টে। আর এ সময় পর্যন্ত ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪৩০ কোটি টাকা।
সারাবাংলা/ জিএস/এনএস