প্রকল্প সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ঠিকভাবে করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:৩৪
ঢাকা: পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম বলেছেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ফিজিবিলিটি স্টাডির উপর জোর এবং শক্তিশালী করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেননা এটি ঠিকমতো না হলে প্রকল্প বাস্তবায়নে নানাভাবে খরচ ও সময় বেড়ে যাবে।’
এছাড়া অনেক প্রকল্প পরিচালকের অভিজ্ঞতা কম থাকে ফলে প্রকল্পের বাস্তবায়ন দেরি হয়। এজন্য একটি পিডি পুল তৈরি করা যায় কিনা সেটিও ভাবতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক এসব নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ আট বছর পর অনুষ্ঠিত হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের এই বৈঠক। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও পরিকল্পনা কমিশনের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
এর আগে, ২০১৫ সালে সর্বশেষ কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম। ব্রিফিংয়ে পরিল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার। এসময় বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড.শাহনাজ আরেফিন, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, আব্দুল বাকী, একেএম ফজলুল হক এবং ড. কাউছার আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বৈদেশিক সহায়তাপুস্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এছাড়া এখন প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণে মূল ভূমিকা পালন করে পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট সদস্যরা (সচিব)। এখন আলোচনা হয়েছে প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণে একটি সচিব কমিটি করা যায় কিনা। এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার বলেন, ‘বৈদেশিক অর্থছাড় বাড়াতে ইতোমধ্যেই মূখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতি ২ মাস পরপর রিভিউ মিটিং করে বৈদেশিক প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা করবে। আগে জিডিপিতে সরকারি বিনিয়োগ ছিল ৫.৫ শতাংশ। সেটি এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৬ শতাংশ। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এটা স্বাধীন দেশ, নির্বাচিত একটি সরকার রয়েছে। এখানে যে কেউ ইচ্ছে করলে এসে মাতব্বরি করে যাবে এটা হতে পারে না। সরকার যে ঋণ নিচ্ছে সেক্ষেত্রে যারা ঋণ দিচ্ছে তাদেরও তো লাভ হয়। কাজেই ইচ্ছে করলেই তারা ঋণ বন্ধ করবে সেটি তো হতে পারে না।’
এবারের বৈঠকে আলোচ্য বিষয় ছিল সরকারি বিনিয়োগের গতিধারা পর্যালোচনা, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রক্ষেপনের সঙ্গে এডিপি বরাদ্দের অসামঞ্জস্যতা এবং সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন প্রক্রিয়াকরণ ও সংশোধন সংক্রান্ত নির্দেশিকা পরিমার্জন বা সংশোধন। এছাড়া নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের অগ্রগতি এবং সেক্টর বা বিভাগভিত্তিক উল্লেখযোগ্য বিষয়ও পর্যালোচনা করা হয়েছে।
বৈঠকে কমিশনের বিকল্প চেয়ারপারসন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, ভাইস চেয়ারপারসন পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এবং গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র জানায়, নতুন সরকার গঠনের পর পরিকল্পনা কমিশন ও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) পুনর্গঠন করা হয় ১৮ জানুয়ারি। এ বিষয়ে দু’টি প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
প্রজ্ঞাপনে পরিকল্পনা কমিশনের গঠন বিষয়ে বলা হয়, এর চেয়ারপারসন থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকল্প চেয়ারপারসন অর্থমন্ত্রী, ভাইস চেয়ারপারসন পরিকল্পনামন্ত্রী এবং সদস্য হিসাবে থাকছেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা। এছাড়া এই কমিশনের সদস্য সচিব থাকবেন পরিকল্পনা কমিশনের সচিব।
সারাবাংলা/জেজে/এমও