Monday 02 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাইকোর্টের আদেশ লঙ্ঘন: অগ্রণী ব্যাংকের শীর্ষ ৫ কর্মকর্তার দণ্ড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:৫৬

ঢাকা: বার বার উচ্চ আদালত আদেশ লঙ্ঘনের ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংকের শীর্ষ পাঁচ কর্মকর্তাকে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।

অগ্রণী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল কবির, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক-১ ওয়াহিদা বেগম, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক-২ শ্যামল কৃষ্ণ সাহা, জেনারেল ম্যানেজার ফজলুল করিম এবং প্রিন্সিপ্যাল শাখার বর্তমান জেনারেল ম্যানেজার একেএম ফজলুল হককে তিনমাস করে (সিভিল জেল) দণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিজ্ঞাপন

মুন ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান/ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমানের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) এই সাজার আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন আইনজীবী মো. নুরুল আমীন। অগ্রণী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শামীম খালেদ আহমেদ।

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী মো. নুরুল আমীন বলেন, ‘রায় হাতে পাওয়ার এক মাসের মধ্যে তাদের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রে আদালতে আত্নসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।’ এ বিষয়ে রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পরে বিস্তারিত বলতে পারবেন বলে জানান এই আইনজীবী।

মামলার প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, রাজধানীর ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা দিলকুশায় ২২তলা মুন টাওয়ার নামে একটি ভবন নির্মাণ করা হয় অগ্রণী ব্যাংক থেকে ২৩১ কোট ৪৭ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে। এক পর্যায়ে ওই ভবনের ৯৮ হাজার ২৩৫ বর্গফুট (১২, ১৩ ও ১৪ তলা এবং ৬ষ্ঠ তলার ৫ হাজার বর্গফুট) কিনে নেয় অগ্রণী ব্যাংক। ঋণের বিপরীতে এই টাকা সমন্বয় করে ব্যাংকটি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বদলি হলে নতুন কর্মকর্তা এসেই মুন টাওয়ারের মালিকের কাছে ঋণের বিপরীতে ১৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা দাবি করে বসেন। এই টাকা পরিশোধ করতে ২০২১ সালে মুন ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান/ব্যবস্থাপনা পরিচালক চিঠি দেন। এই চিঠির বৈধতা নিয়ে ঢাকার নিম্ন আদালতে মামলা করেন মুন ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান/ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান। কিন্তু ওই আদালত মামলাটি খারিজ করে দেয়।

বিজ্ঞাপন

এরপর ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন মিজানুর রহমান। হাইকোর্ট শুনানি নিয়ে ওই চিঠির জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে আদেশ দেন। এক পর্যায়ে ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ওই চিঠির কার্যকারিতার ওপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন এবং ওই চিঠি কেন বাতিল করা হবে না এবং এজন্য তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। ওই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেওয়া হয়। এরপরও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তথা বিবাদীপক্ষ টাকার জন্য মিজানুর রহমানকে চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে মিজানুর রহমানের কাছে দাবি করা টাকাকে খেলাপি ঋণ হিসেবে দেখানো হয়।

এরপর মিজানুর রহমান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে পৃথক দুটি আবেদন করেন। ওই আবেদনে আগের আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ব্যবস্থা নিতে আরজি জানানো হয়। এর মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলে আসে। এই নির্বাচনে মিজানুর রহমান জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনয়নে বরগুনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য প্রার্থী হন। কিন্তু অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বরগুনার জেলা প্রশাসককে (ডিসি) চিঠি দিয়ে মিজানুর রহমানকে ঋণ খেলাপি হিসেবে উল্লেখ করেন।

এই চিঠি পাওয়ার পর মিজানুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল করে দেন জেলা প্রশাসক। পরে অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তার ওই চিঠির বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন মিজানুর রহমান। আজ হাইকোর্ট ওই তিন আবেদনের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট পাঁচ ব্যাংক কর্মকর্তাকে সাজা দিয়ে আদেশ দেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তা টপ নিউজ সাজা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর