বরগুনায় অবকাঠামো উন্নয়নে ৭৫০ কোটি টাকার প্রকল্প
২৫ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:২৫
ঢাকা: দেশের দক্ষিণের জেলা বরগুনায় গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এজন্য ‘বরগুনা জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৭৫০ কোটি টাকা। এটি জেলার বেতাগী, আমতলী, পাথরঘাটা, বরগুনা সদর, বামনা ও তালতলী উপজেলায় বাস্তবায়ত হবে।
প্রস্তাবটি নিয়ে গত ২২ জানুয়ারি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) একেএম ফজলুল হক।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ৩ হাজার ৪১৩ দশমিক ৬৮ বর্গ কিলোমিটার জায়গা নিয়ে বরগুনা জেলা গঠিত। অনেক জ্ঞানী গুণী লোকের জন্মস্থান, ঐতিহ্যবাহী রাখাইন তাঁতের শাড়ি, শুভ সন্ধা সমুদ্র সৈকত, গোড়া পদ্মা পর্যটন কেন্দ্র, তালতলী ইকোপার্কের জন্য জন্য বিখ্যাত বরগুনা। এরপরও উন্নয়নের দিক থেকে অনেকটা পিছিয়ে এই জেলা। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে শিক্ষাক্ষেত্রে জেলাটি অনেক এগিয়ে গেলেও পাল্লা দিয়ে রাস্তাঘাট, ব্রিজ বা কালভার্ট, বাজার ও অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি।
পিইসি সভা সূত্র জানায়, সভায় পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উপজেলা সড়ক উন্নয়ন প্রতি কিলোমিটারের একক ব্যয় এক কোটি ৫৩ লাখ টাকা, ইউনিয়ন সড়ক উন্নয়ন প্রতি কিলোমিটারের একক ব্যয় এক কোটি ২২ লাখ টাকা, গ্রাম সড়ক বিসি উন্নয়নে টাইপ প্রতি কিলোমিটারের একক ব্যয় এক কোটি ২২ লাখ টাকা, ইউনিয়ন সড়ক উন্নয়ন প্রতি কিলোমিটারের একক ব্যয় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা, রাস্তা পুনর্বাসন প্রতি কিলোমিটারের একক ব্যয় ৬৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, ব্রিজ নির্মাণ প্রতি মিটরের একক ব্যয় ১২ লাখ টাকা টাকা ধরা হয়েছে। এসব ব্যয়ের বিষয়ে পিইসি সভায় প্রশ্ন তোলা হয়। শেষে বেশ কিছু ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনার সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।
এছড়া প্রকল্পে পাঁচজন কর্মকর্তা ও দুইজন কর্মচারীর সংস্থানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এরমধ্যে অর্থ বিভাগের জনবল কমিটির সুপারিশ পাওয়া গেছে। কাজেই অর্থ বিভাগের জনবল কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী নির্ধারিত জনবলের জন্য ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাড়ি ভাতা ৪৮ মাস বাবদ ৯৫ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়। এ বিষয়েও বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয় সভায়।
সূত্র আরও জানায়, পরামর্শক খাতে এক কোটি ৪২ লাখ টাকা, জরিপ খাতে ব্যয় বাবদ ৫০ লাখ টাকা, প্রচার ও বিজ্ঞাপন ব্যয় ৪০ লাখ টাকা, ১২টি কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক ক্রয়ের জন্য ১৫ লাখ টাকা, ২টি ল্যাপটপ কম্পিউটার ক্রয়ের জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২টি ফটোকপিয়ার ক্রয়ের জন্য ৮ লাখ টাকা, অফিস ভবন বাবদ ৪৮ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব খাতের ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠে পিইসি সভায়। শেষে যৌক্তিকভাবে কমাতে বলা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় একটি জীপ গাড়ি, ২টি পিকআপ, ১০টি মোটরসাইকেল, ৪টি রোড রোলার, ৪টি ভাটিক্যাল র্যামার, ২টি বিটুমিন স্প্রেয়ার মেশিন কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব নিয়েও পিইসি সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
একেএম ফজলুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘পিইসি সভা করাই হয় এসব খুঁটিনাটি বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য। আমরা বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে কথা বলেছি। পরে নানা সুপারিশ দিয়ে প্রকল্প প্রস্তাবটি সংশোধনীর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এখন সুপারিশ মেনে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) পুর্নগঠন করে দিলে আমরা একনেকে উপস্থাপনের প্রস্তুতি নেব।’
সারাবাংলা/জেজে/এনএস