প্রস্তুতি দেখে বোঝার উপায় নেই কাল বইমেলা শুরু!
৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৪০
ঢাকা: রাত পেরুলেই ১ ফেব্রুয়ারি। ‘পড়ো বন্ধু গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’— এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কাল শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা ২০২৪। বেলা ৩টায় মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই হিসাবে ২৪ ঘণ্টাও বাকি নেই আর। তবে মেলা প্রাঙ্গণ দেখে তা বোঝার উপায় নেই! মেলার সিংহভাগ এলাকা জুড়ে দেখা গেছে প্রস্তুতির খরা। কোনো স্টলই পূর্ণাঙ্গরূপে প্রস্তুত হয়নি।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে মেলার বাংলা একাডেমি অংশের কাজ অনেকটাই এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আসবেন বলে একদিন আগেই রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে একাডেমি প্রাঙ্গণ।
বাংলা একাডেমি সূত্র জানায়, একাডেমি প্রাঙ্গণ ও ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মিলে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গা জুড়ে এবার আয়োজন করা হয়েছে অমর একুশে বইমেলা। গতবছরের চেয়ে এবার স্টলের সংখ্যা বেড়েছে। এবার অতিরিক্ত ৩৪টি প্রতিষ্ঠান স্টল বরাদ্দ পেয়েছে। এবারের মেলায় থাকছে ৬৩৫টি স্টল এবং ৩৭টি প্যাভিলিয়ন। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি ইউনিটসহ মোট ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৯৩৭টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণের কাজ শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে। কিন্তু বিকেল ৫টা নাগাদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে এমন একটি স্টলও পাওয়া যায়নি যেটি সম্পূর্ণ রূপে প্রস্তুত হয়েছে। এছাড়া কেবল কাঠামো তৈরির কাজ চলছে এমন স্টলের সংখ্যা অনেক। বাতিঘর, মিজান পাবলিশার্স, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র’র মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর স্টল তৈরির কাজ এখনও মাঝপথে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টলের এক নির্মাণকর্মী জানান, শেষের দিকে এসে তাদের কাজ শুরু হয়েছে। অল্প সময়ে দ্রুত কাজ করতে হচ্ছে।
এবার লিটল ম্যাগ চত্বরের স্থান পরিবর্তন করে মুক্তমঞ্চের পার্শ্ববর্তী জায়গা বরাদ্দ করা হয়েছে। মেলার এই অংশে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের কাঠামো ছাড়া তেমন কোনো কিছুই প্রস্তুত হয়নি। অর্ধেক অংশে ত্রিপলের ছাউনি থাকলেও বাকি অংশে তাও দেওয়া হয়নি। চত্বরে নেই কোনো লোকজন।
মন্দির গেইটসংলগ্ন শিশুচত্বরেও এখনও চলছে স্টল তৈরির কাজ। আর খাবারের দোকানগুলোর স্থান পরিবর্তন করে নেওয়া হয়েছে মূল মেলা থেকে দূরে উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ারং ইন্সটিটিউশন সংলগ্ন গেইটের কাছাকাছি। এই অংশে এখনও চলছে কাঠামো তৈরির কাজ। সাজসজ্জা কিংবা বসার জায়গা ঠিক হয়নি কিছুই।
উদ্যান অংশে ঘুরতে আসা মাহফুজুল হাবিব সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার একটু বেশিই কাজ বাকি থেকে গেছে। কাল যে মেলা শুরু, পরিস্থিতি দেখে বোঝার উপায় নাই। প্রস্তুতি না থাকলে মেলা সৌন্দর্য হারাবে।’
এদিকে, মেলা শুরুর যেখানে ২৪ ঘণ্টাও বাকি নেই, সেখানে এমন নড়বড়ে প্রস্তুতি নিয়ে জানতে বাংলা একাডেমির প্রশাসন মানবসম্পদ উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক এবং মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. কে এম মুজাহিদুল ইসলামকে ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, এবারের মেলাটি অধিবর্ষের বইমেলা। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত ৮টা ৩০ মিনিটের পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। এ ছাড়া ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
সারাবাংলা/আরআইআর/পিটিএম