Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কবিতা তেমন ‘চলে না’, বিক্রি বেশি উপন্যাসের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২৩:২৪

ঢাকা: মহান ভাষা শহিদদের স্মরণে বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলার অষ্টম দিন বৃহস্পতিবার। প্রথম কয়েকদিন বইমেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আনাগোনা কম থাকলেও সপ্তাহ শেষে তা বাড়তে শুরু করেছে বলে প্রকাশকরা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে বাড়ছে বইয়ের বিক্রিও। মেলায় সব ধরনের বইয়ের মোটামুটি চাহিদা রয়েছে তবে কবিতার বইয়ের চেয়ে উপন্যাসের বইয়ের কাটতি বেশি।

প্রথমা প্রকাশনের বিক্রয়কর্মী জহুরুল ইসলাম জানান, তাদের স্টলে গবেষণাধর্মী বইয়ের চাহিদা বেশি। এর পাশাপাশি রয়েছে উপন্যাসের চাহিদা। তবে কবিতার বইয়ের বিক্রি কম জানিয়ে জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘কবিতার বই তেমন চলে না।’

অনুপম প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী মো. ইমরান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের প্রকাশনীতে উপন্যাসের সংখ্যা বেশি। আমরা ৩০টির বেশি নতুন উপন্যাস করেছি। সেগুলোর বিক্রিও বেশি হচ্ছে।’

কবিতার বই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দুই একটি করে বিক্রি হয়। বেশি চাহিদা নেই।’

প্রকাশকরা জানান, মেলায় নতুন বইয়ের চাহিদা শুধু নয়, রয়েছে পুরনো বইয়েরও কদর।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেলা ঘুরে দেখা যায় মিজান পাবলিশার্সের স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একটি কলেজের শিক্ষক জহুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মেলায় বেশকিছু নতুন বই পছন্দ হয়েছে। তবে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পুরনো কিছু বই সংগ্রহ করার চিন্তাতে মেলায় এসেছি।’

মেলা থেকে এরইমধ্যে ১০টি বই কিনেছেন এই কলেজ শিক্ষক যার অধিকাংশ গত বছরে প্রকাশিত বলে জানান তিনি।

শব্দশৈলির বিক্রয়কর্মী সুদেব চন্দ্র সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এখানে মোটিভেশনাল বইয়ের চাহিদা বেশি। বিশেষ করে ক্যারিয়ার ও আত্ম-উন্নয়নমূলক বইয়ের চাহিদা বাড়ছে।’

অন্যপ্রকাশের বিক্রয়কর্মী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই স্টলে হুমায়ুন আহমদের বইয়ের কাটতি সবচেয়ে বেশি। নতুন বইয়ের পাশাপাশি হুমায়ুন আহমদের পুরনো বইও ভালো বিক্রি হচ্ছে। ’

এ ছাড়া কিছু তরুণ লেখকের বই বিক্রি হয়েছে অন্যপ্রকাশ থেকে। সেগুলোর চাহিদাও রয়েছে বলে জানান সাইফুল ইসলাম।

বিক্রেতা ও প্রকাশকরা জানান, মেলায় উপন্যাসের বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। প্রেমের উপন্যাসের বিক্রি বেশি বলে জানান তারা।

অমর একুশে বইমেলার অষ্টম দিনে কবিতার বই এসেছে ২৫টি। এ ছাড়া, ১০টি উপন্যাস, তিনটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক, দুইটি ইতিহাস-সংক্রান্ত বই সহ এইদিনে সর্বমোট বই এসেছে ৮০টি।

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমি থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ সব তথ্য জানানো হয়।

প্রকাশিত নতুন উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে—রওনক বিশাখা শ্যামলীর ‘তুমিই নয়নতারা’, ফয়েজ তৌহিদুল ইসলামের ‘শ্রেষ্ঠ রাঁধুনী পুরস্কার’, কাজী লাবণ্যের ‘অনশ্রু ঈশ্বর’। এ ছাড়া এম মাহবুব মুকুলের ‘জাগ্রত কর দেশপ্রেম’, জয়নুল আবেদীনের ‘শেষ বলে কিছু নেই’, আলতাফ হোসেন উজ্জলের ‘হলুদ সন্ধ্যায় চাঁদ’সহ সর্বমোট ২৫টি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে বইমেলার ৮ম দিনে।

এদিকে, মেলার ৮ম দিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ: আহমদ শরীফ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজীব সরকার।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে রাজীব সরকার বলেন, ‘আহমদ শরীফ ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি চিন্তাবিদ। রেনেসাঁর প্রতি তার ছিল গভীর অনুরাগ। আহমদ শরীফের ইহজাগতিক জীবনদর্শনের মূলে কাজ করেছে রেনেসাঁস চেতনা। মানুষের কল্যাণ সাধনই ছিল তার ব্রত। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মুক্তবুদ্ধির অবিচল অনুশীলন করেছিলেন তিনি। এ জন্য স্বাধীন মতপ্রকাশ করা থেকে নিজে কখনও বিরত থাকেননি।’

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, ‘অধ্যাপক আহমদ শরীফের চিন্তাজগৎ ছিল সুদূর প্রসারিত। জ্ঞান অন্বেষণের ধারাবাহিকতায় তার চিন্তাজগতে বিবর্তনও ঘটেছে। নতুন বিষয়কে সহজভাবে গ্রহণ করার ক্ষমতা ছিল তার। এই মহান চিন্তকের ইহজাগতিক ও রেনেসাঁ-চিন্তা আজও প্রাসঙ্গিক।’

সারাবাংলা/একে

অমর একুশে বইমেলা বইমেলা ২০২৪ বাংলা একাডেমি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর