Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৪৮ ঘণ্টার অপেক্ষায় এক যুগ পার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:২১

ঢাকা: ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের নিজ বাসায় নির্মমভাবে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুনি। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা হবে।’ কিন্তু এ যুগ পার হলেও সেই খুনের ঘটনার সুরাহা হয়নি। একের পর এক মামলার তারিখই কেবল পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। সুর বদলেছেন সংশ্লিষ্টরাও।

আদালতে এখনও সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদনই দাখিল করা হয়নি। এখন পর্যন্ত ১০৫ বার পিছিয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ।

বিভিন্ন বাহিনী ঘুরে বর্তমানে মামলার তদন্ত করছে র‌্যাব। মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আসামি ৮ জন। অপর আসামিরা হলো- বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।

মামলার বাদী মেহেরুন রুনির ছোট ভাই নওশের আলম রোমান সারাবাংলাকে জানান, ‘১০৫ বারেও মামলার প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারলে, এটা শুধু আমাদের ক্ষেত্রে নয়, সারাদেশের বিচার ব্যবস্থার জন্য লজ্জাজনক কথা। সরকার চাইলে সত্য ঘটনা বের করতে পারেন। সেখানে ১০০ বার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা, আর সেই সময়ও মঞ্জুর হচ্ছে। অথচ তারা এলিট ফোর্স দাবি করেন। সেখানে সাধারণ মানুষ কার কাছে বিচার চাইবে?’

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের বছর ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুনি নিজ ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ঘটনাস্থলে এসে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার করার কথা বলেছিলেন।

২০১২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তের জন্য প্রথম ডিবি উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলম তদন্ত ভার নেন। এরপর ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, ওই বছরের ৭ জুন, ২০১৬ সালের ২ অক্টোবর ও সর্বশেষ ২০১৭ বছরের ২১ মার্চ তদন্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। তদন্ত অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিটি প্রতিবেদনে প্রায় একই ধরনের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার ৮ আসামির দু’জন বাড়ির দারোয়ান পলাশ রুদ্র পাল ও কথিত বন্ধু তানভীর রহমান জামিনে আছেন। অপর ৬ আসামি মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু, বকুল মিয়া, কামরুল হাসান অরুন, রফিকুল ইসলাম, এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবিল ও আবু সাঈদ কারাগারে। এ মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার ৮ জনের কেউই এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেননি।

২০১৫ সালের জানুয়ারিতে সাগর-রুনির ভাড়া বাসার নিরাপত্তা প্রহরী এনামুল হক ও পলাশ রুদ্র পাল ১৬১ ধারায় জবানবন্দি দেন। ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মো. সাইদ, মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ ও নিহত দম্পতির বন্ধু তানভীর রহমান- এই ৫ জনকে মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক নারায়ণ চন্দ্র হত্যার ঘটনায় র‌্যাব ও ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। এখন পর্যন্ত মামলায় ১৫৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র‌্যাব।

সারাবাংলা/এমও

টপ নিউজ সাগর রুনি তদন্ত প্রতিবেদন সাগর-রুনি হত্যা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর