সন্তান জীবিত ফেরত চেয়ে সংবাদ সম্মেলন
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:২৭
ঢাকা: জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে তুলে নিয়ে যাওয়ার পাঁচ মাস কেটে গেলেও রহমত উল্লাহকে পরিবারের কাছে ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত না থাকার দাবি জানিয়ে ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় ফেরতের দাবি জানিয়েছেন তার মা মমতাজ বেগম ও পরিবারের সদস্যরা।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ ও দাবি জানানো হয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের হাতে ‘গুম হওয়া’ রহমত উল্লাহকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
মমতাজ বেগম বলেন, ‘ধামরাই উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের বড়নালাই গ্রামে আমার বাড়ি। গত ২৯ আগস্ট রাত ১২টার দিকে র্যাবের পোশাক এবং সাদা পোশাক পরা একটি দল আমার বাড়িতে আসে। এসময় আমি এবং আমার বড় ছেলের বউ ও ছোট ছেলে রহমত উল্লাহ বাড়িতে ছিলাম। রহমত উল্লাহর শরীরে জ্বর থাকায় সে আমার পাশেই শুয়ে ছিল। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা বাড়ির দরজায় কড়া নাড়ে। আমি ঘরের দরজা খুলে বাইরে বের হলে তারা কয়েকজন ঘরের ভেতরে আসে। পরে রহমত উল্লাহকে (২০) জোর করে ধরে নিয়ে যায়। এ সময় আমি আমার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তারা রহমত উল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলেকে ধরে ঘরের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরাও বাইরে যাই। বাইরে গিয়ে র্যাবের একটি গাড়ি ও একটা হায়েস মাইক্রোবাস দেখতে পাই। এরপর তারা রহমত উল্লাহকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চলে যায়। পরের দিন সকালে আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রহমত উল্লাহর খোঁজে মানিকগঞ্জ র্যাব ক্যাম্পে গেলে তারা ধামরাই থানায় খোঁজ নিতে বলে। ধামরাই থানায় যাওয়ার পর পুলিশ কোনো তথ্য দেয়নি। এরপর নবীনগর র্যাব ক্যাম্প ও সাভার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে খোঁজ নেওয়া হয়। ধামরাই থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে প্রথমে পুলিশ জিডি না নিলেও পরে রহমত উল্লাহর গুমের বিষয়টি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে গত ৭ অক্টোবর থানা পুলিশ জিডি নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘র্যাব সদস্যদের হাতে গুম হওয়ার ৫ মাস পরও আমার ছেলের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা র্যাব অফিস, ডিবি অফিস ও কারাগারে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার ছেলের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। ছেলের দুশ্চিন্তায় আমি দিনদিন অসুস্থ হয়ে পড়ছি। আমার ছেলে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিল না। আমাদের জানামতে সে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও যুক্ত ছিল না। সে পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। সে যদি কোনো ধরনের অপরাধ করে থাকে, তাহলে দেশের আইন অনুযায়ী তাকে বিচারের সম্মুখীন করা হোক। কিন্তু তাকে গুম করবে কেন? আমি আমার ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত চাই।’
যারা রহমত উল্লাহকে গুম করার সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার দাবি করেন মা মমতাজ বেগম।
সারাবাংলা/ইউজে/একে