সরকার গঠনে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ নওয়াজ-বিলাওয়াল
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:২২
জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে জোট সরকার গঠনের বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে আসছে নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। তবে প্রাথমিকভাবে সরকার গঠনে একমত হলেও ভাক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে দরকষাকষি চলছে দুই দলের মধ্যে। এ পরিস্থিতিতে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত বৈঠকেও কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি দল দুটির নেতারা। যদিও আলোচনায় ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হওয়ার দাবি করেছে উভয় পক্ষই। খবর দ্য ডন।
দুই দলের কন্টাক্ট অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন কমিটির (সিসিসি) মধ্যে শনিবার অনুষ্ঠিত তৃতীয় বৈঠকটি কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। ক্ষমতা ভাগাভাগির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে আগামীকাল সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আবারও বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেতারা।
এই বৈঠকে পিএমএল-এন’র পক্ষে নেতৃত্ব দেন ইসহাক দার, সর্দার আয়াজ সাদিক, আজম নাজির তারার ও মালিক মুহাম্মদ আহমেদ খান। আর পিপিপি’র পক্ষে নেতৃত্ব দেন সিন্ধু প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহ, সাঈদ গনি, কামার জামান কাইরা, নাদিম আফজাল চান এবং নবাব সানাউল্লাহ জেহরি।
বৈঠক শেষে পিএমএল-এন’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে। আলোচনায় একটি ‘শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকারের’ প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে প্রথম বৈঠকে আলোচিত প্রস্তাবগুলো মূল্যায়নের জন্য আরও সময় চেয়েছিলেন উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা।
পিপিপি সরকার গঠন এবং পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে পিএমএল-এন’কে সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছে এই শর্তে যে, এর বিনিময়ে তারা প্রেসিডেন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদ নেবে। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে পিএমএল-এন’কে সমর্থন করলেও মন্ত্রিসভায় কোনো পদ নেবে না দলটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, পিএমএল-এন সাংবিধানিক অফিসগুলো নিয়ে আলোচনা করার আগে মন্ত্রিসভার গঠন ইস্যুতে পিপিপি’র সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য জোরালোভাবে চেষ্টা করছে। তবে দলটি এখন পর্যন্ত তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে অস্বীকার করেছে।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। যা শেষ হয় বিকলে ৫টায়। ক্রমবর্ধমান জঙ্গি হামলা, অর্থনৈতিক সংকট এবং রাজনৈতিক মেরুকরণের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তানে। এই নির্বাচনে দেশটির কোনো দলই এককভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন পায়নি। এরপর থেকেই সরকার গঠন নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ব্যাপক দরকষাকষি শুরু হয়।
দেশটির ২৬৬টি আসনে মধ্যে কারাবন্দি ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৯৩টিতে জয়লাভ করেন। এদিকে সেনাবাহিনীর সমর্থিত নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন মাত্র ৭৩টি আসন পায়। বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপিপি জিতেছে ৫৪টি আসন। জমিয়তে উলেমা-ই-ইসলাম (এফ) পেয়েছে ৩টি আসন। এছাড়া অন্যান্য দলগুলো পেয়েছে ৩৩টি আসন।
৩৩৬ আসনের দেশটির জাতীয় পরিষদে সরকার গঠন করতে ১৬৯টি আসনের প্রয়োজন। তবে ভোটাররা সরাসরি ২৬৬ জন সদস্যকে নির্বাচিত করতে পারেন। আর বাকি ৭০টি আসন সংরক্ষিত। এর মধ্যে ৬০টি নারী ও ১০টি অমুসলিমদের জন্য। নির্বাচনে প্রতিটি দলের জয়ী সদস্যদের সংখ্যার অনুপাতে এই সংরক্ষিত আসনগুলো বরাদ্দ করা হয়।
সারাবাংলা/এনএস
নওয়াজ শরিফ পাকিস্তান পাকিস্তান পিপলস পার্টি পাকিস্তান মুসলিম লীগ পিএমএল-এন পিপিপি বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি