Saturday 05 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রেজাউলের উচ্ছেদ করা হকারদের পাশে মাহতাব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:৪১ | আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২৩:০৪

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন হকাররা। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) উচ্ছেদ করা হকারদের পাশে দাঁড়িয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। তাদের পুনর্বাসনের জন্য সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর দামপাড়ায় মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর বাসভবনে হকার সংগঠনের নেতারা দেখা করতে গেলে মেয়রের প্রতি তিনি এ আহ্বান জানান।

মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর ফুটপাত ও মূল সড়কের ওপর বড় অংশে অবৈধ স্থাপনা, যত্রতত্র হকারদের উচ্ছেদের প্রয়োজন যেমন রয়েছে, ঠিক একইভাবে উচ্ছেদ করা হকারদের রুটি-রুজির সংস্থান ও পুনর্বাসনের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা মানবিক ও অত্যন্ত জরুরি।’

বিজ্ঞাপন

এ সময় হকার নেতারা বলেন, ‘মেয়র ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করার যে উদ্যোগ নিয়েছেন তার বিরোধিতা তারা করেন না। তবে তবে উচ্ছেদের আগে হকারদের পুনর্বাসন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বিষয়টিকে আমলে নেওয়া না হলে সেটি হকারদের পেটে লাথি মারার সামিল হবে। অভিযানের আগে হকার পুনর্বাসনের জন্য স্বল্প মাঝারি ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার বিষয়টিও মাথায় রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেন তারা।

হকার নেতারা বলেন, এ বিষয়টি আমাদের কাছে স্পষ্ট করে তুলে ধরতে পারলে তা যদি হকারদের গ্রহণযোগ্য হয়, তারা নিজে থেকেই ফুটপাত দখলমুক্ত করে দেবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো সাংঘর্ষিক পরিস্থিত তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘যারা ফুটপাতে হকার ব্যবসা করে রুটি-রুজির সংস্থান করছেন, তারা সমাজের অংশ এবং রাষ্ট্রের সম্মানিত নাগরিক। বেকারত্ব ও কর্মসংস্থানের অভাবেই তারা ফুটপাতে ব্যবসা করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এটাও ঠিক, হকারদের কারণে ফুটপাতগুলো পথচারীদের স্বাভাবিক চলাচলে সামান্য বিঘ্ন ঘটছে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে শৃঙ্খালাও বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই হকারদের নিয়মনীতি, শৃঙ্খলা ও আইনকানুন মেনে ব্যবসা করতে হবে এবং ফুটপাতের পাশেই যেসব দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে, তাদের স্বার্থও বিবেচনা করতে হবে।’

আওয়ামী লীগের এ নেতা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নগরীর ফুটপাতগুলোকে অবৈধ দখলকারীদের হাত থেকে রক্ষা ও হকার উচ্ছেদ অভিযানের পাশাপাশি উচ্ছেদ করা হকারদের পুনর্বাসনের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের রুটি-রুজি সংস্থানের নিশ্চয়তা দেওয়ার আহ্বান জানান।

উচ্ছেদের সময় সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতার হকারদের মুক্তি ও তাদের নামে যে মামলা করা হয়েছে সেগুলোও প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সফর আলী, চট্টগ্রাম হকার্স লীগের সভাপতি প্রবীণ কুমার ঘোষ, ফুটপাত হকার সমিতির সভাপতি নুরুল আমিন লেদু, সম্মিলিত হকার্স ফেডারেশনের সভাপতি মীর হোসেন মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম ভুঁইয়া ও সিটি হকার্স লীগের সভাপতি হারুন আর রশিদ ছিলেন।

এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর নগরীর নিউমার্কেট মোড় থেকে নতুন রেলস্টেশন, রিয়াজউদ্দিন বাজার, পুরাতন রেলস্টেশন, ফলমণ্ডি, তামাকমুণ্ডি লেইন ও আমতলসহ প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা থেকে হাজারেরও বেশি হকার উচ্ছেদ করে সিটি করপোরেশন।

এসব এলাকার ফুটপাত থেকে সড়কের একাংশ দখলে নিয়ে হকাররা পোশাক, মোবাইল, জুতা, তৈরি খাবারসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে আসছিলেন। ফুটপাত ও সড়কে বিভিন্ন অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের কারণে এসব এলাকায় নিয়মিত যানজট লেগে থাকত।

প্রথম দফায় সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ অভিযানের সময়ও হকাররা বিক্ষোভ মিছিল করেছিলেন। পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ নিয়ে হকাররা ক্ষোভ জানিয়েছিলেন। পরদিন হকারদের কেউ কেউ আবারও বসতে চাইলে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা গিয়ে তাদের সরিয়ে দেন।

এরপর আবারও হকাররা বসতে চাইলে পুনর্দখল ঠেকাতে চসিক মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেমের নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়। চসিকের তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট চৈতী সর্ববিদ্যা, শাহরিন ফেরদৌসী ও আরাফাত রহমান সানিসহ শতাধিক পুলিশ ও চসিকের কর্মী অভিযানে অংশ নেন। এ সময় হকারদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত এক হাজার ২০০ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে পুলিশ ও সিটি করপোরেশন।

সারাবাংলা/আইসি/টিআর

চট্টগ্রাম চসিক মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী হকার উচ্ছেদ

বিজ্ঞাপন

আজ ঢাকার বাতাস সহনীয়
৫ জুলাই ২০২৫ ১০:৩৭

আরো

সম্পর্কিত খবর