Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাঘাইছড়িতে ইউপিডিএফ কর্মী খুন: বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:৫৫

নিপন চাকমার হত্যার প্রতিবাদে ইউপিডিএফের বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: সারাবাংলা

রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলীতে দলীয় কর্মী নিপন চাকমাকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। নিপন চাকমার মরদেহ কফিনে নিয়ে বঙ্গলতলী নুয়ো দোকান এলাকা থেকে দলটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। মিছিলটি পরে বটতলা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। সেখানেই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ইউপিডিএফ বাঘাইছড়ি ইউনিট এই কর্মসূচি পালন করে। এর আগে শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়নের বঙ্গলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন নিপন চাকমা।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে সোহেল চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ বাঘাইছড়ি ইউনিটের সংগঠক আর্জেন্ট চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের বাঘাইছড়ি উপজেলা সভাপতি বিরো চাকমা।

 

আর্জেন্ট চাকমা বলেন, শনিবার বঙ্গলতলীতে ‘ঠ্যাঙাড়ে নব্যমুখোশ-রাজাকার’রা নিপন চাকমাকে গুলি করে হত্যা করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে একের পর এক হত্যাকাণ্ড চলছে। নিপন চাকমা জনগণের স্বার্থে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাই জনগণকেই তার হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। অবিলম্বে নিপন চাকমার খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের বাঘাইছড়ি উপজেলা সভাপতি বিরো চাকমা বলেন, পাহাড়িরা আজ শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের শিকার। বঙ্গলতলীতে সহযোদ্ধা নিপন চাকমাকে হত্যা সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার সময় রাতের আঁধারে নব্যমুখোশ-রাজাকার সন্ত্রাসীরা সহযোদ্ধা নিপন চাকমাকে কাপুরুষের মতো গুলি করে হত্যা করেছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে ইউপিডিএফ কর্মী খুনের ঘটনায় রোববার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাঘাইছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আধাবেলা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে ইউপিডিএফ। উপজেলার বঙ্গলতলী, সাজেক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় ইউপিডিএফের নেতাকর্মীরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখেন।

নিপন চাকমার হত্যার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেন ইউপিডিএফ কর্মীরা ছবি: সারাবাংলা

শনিবার রাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিপন চাকমার নিহত হওয়ার ঘটনায় শ্যামল কান্তি চাকমার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফকে (গণতান্ত্রিক) দায়ী করেছে প্রসিত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্যামল কান্তি চাকমা বলেন, ‘এই অভিযোগ মনগড়া। এর পেছনে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। ওই এলাকায় আমাদের পার্টির কার্যক্রমও নেই।’

বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইশতিয়াক আহমেদ জানান, ‘ঘটনাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরের বটতলা এলাকা থেকে রোববার দুপুরে নিহত ইউপিডিএফ কর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।’

৩ মাসে ইউপিডিএফের ৯ জন খুন

গত বছরের ১১ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়নের অনিলপাড়ায় গুলি করে ইউপিডিএফের চার নেতাকে হত্যা করা হয়। ওই সময় প্রতিপক্ষের গুলিতে মারা যান ইউপিডিএফের সহযোগী সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সুনীল ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহসভাপতি লিটন চাকমা ও ইউপিডিএফ সদস্য রুহিন ত্রিপুরা।

পানছড়ির চার খুনের দেড় মাসের মাথায় গত ২৪ জানুয়ারি জেলার মহালছড়ি উপজেলায় আরও দুজনকে হত্যা করা হয়। তখন মারা যান ইউপিডিএফ সদস্য রবি কুমার চাকমা ও শান্ত চাকমা ওরফে বিমল। ১০ দিন পর ৪ ফেব্রুয়ারি রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় খুন হন ইউপিডিএফ সদস্য দীপায়ন চাকমা ও আশুক্য চাকমা ওরফে আশীষ (৪৫)।

সর্বশেষ শনিবার রাতে একই উপজেলায় ঘাতকের বুলেটে খুন হলেন ইউপিডিএফের আরেক কর্মী। এ নিয়ে তিন মাসের মধ্যেই খাগড়াছড়িতে ছয় ও রাঙ্গামাটিতে তিন কর্মীসহ ইউপিডিএফের ৯ নেতাকর্মী প্রাণ হারালেন।

সারাবাংলা/টিআর

ইউপিডিএফ ইউপিডিএফ কর্মী হত্যা গুলি করে হত্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর