রাখাইন দখলের পথে আরাকান আর্মি, রাজধানী ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ
২ মার্চ ২০২৪ ১১:৩৩
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের রাজধানী সিত্তয়ে’তে খুব শিগগিরই জান্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালাতে পারে আরাকান আর্মি (এএ)। এ খবরে শহর ও এর আশপাশের গ্রাম থেকে হাজার হাজার বাসিন্দা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালিয়ে যাচ্ছেন। খবর নারিনজারা।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘সিত্তয়ে’কে দখল করবে আরাকান আর্মি— এমন খবর শুনে তারা পালিয়ে যাচ্ছে। এখন আরও বেশি মানুষ মুক্ত এলাকায় চলে যাচ্ছে।’
রাখাইনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নারিনজারা জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই একটি মাইন হামলার মাধ্যমে ইয়াঙ্গুন-সিত্তয়ে মহাসড়কের আ মিন্ট কিয়ুন মিন চাউং ব্রিজ ধ্বংস করেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। যাতে এএ যোদ্ধারা সিত্তয়ে এলাকায় প্রবেশ করতে না পারে। যা জনসাধারণের উদ্বেগকে বাড়িয়ে তুলেছে।
বাসিন্দা আরও বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজটি ধ্বংস করার ফলে শহরের বাসিন্দাদের সফলভাবে আটকে রাখা হয়েছে। ফলে যুদ্ধ চলাকালে পালানোর বিষয়ে শঙ্কিত তারা। তাই এখন হাতে সময় নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা।’
শুধু বেসামরিক মানুষই নয়, সামরিক কর্মকর্তা ও অন্যান্য দফতরের কর্মকর্তাদের পরিবারও শহরটি ছেড়েছে চলে যাচ্ছেন। এদিকে আরাকান আর্মি’র যোদ্ধারা বর্তমানে পোন্নাগিউন শহর দখলের জন্য জান্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে। কামানের গোলা শহরের বিদ্যুতের সাবস্টেশনে আঘাত করে। এর ফলে সিত্তয়ে’র অনেক বাসিন্দা দীর্ঘসময় বিদ্যুৎ বিহীন ছিলেন।
অপর এক বাসিন্দা বলেন, ‘সিওয়ে শহরে ইন্টারনেট এবং ফোন সংযোগ সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। আমরা শুধুমাত্র মাইটেল পরিষেবার মাধ্যমে অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি। বিদ্যুৎ না থাকায় ফোন চার্জ করতে পারছি না। এছাড়া জ্বালানির দামও বাড়ছে। এখন আসন্ন সংঘাতের খবরে মানুষ পালাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই নৌকায় করে পালিয়ে গেছেন। নদীর ওপারে যেতে জনপ্রতি কমপক্ষে ৫০ হাজার কিয়াট ব্যয় করতে হয়েছে।’
তবে সিত্তয়ে থেকে পালাতে নাগরিকদের বাধা দিচ্ছেন জান্তা বাহিনী। সেনা ও পুলিশ সদস্যরা সিত্তয়ে’র পূর্ব দিকে কালাদান নদীর ধারে বাঙ্কার তৈরি করেছেন এবং নজরদারি বাড়িয়েছেন। তাই রাতের বেলা ছোট নৌকায় করে নদী পার হচ্ছেন বাসিন্দারা।
জান্তা সৈন্যরা সম্ভবত বাসিন্দাদের মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে এবং তাই তারা জনসাধারণের চলাচলে বাধা দিচ্ছে বলে ধারণা করছেন তারা।
রাখাইন অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে জান্তা বাহিনী ও এএ যোদ্ধারা যুদ্ধ চালিয়ে আসছে। এখন পর্যন্ত ৯টি শহরের পাশাপাশি জান্তার সামরিক ঘাঁটি, পুলিশ স্টেশন, কৌশলগত অপারেশন কমান্ড ঘাঁটি এবং ব্যাটালিয়নের নিয়ন্ত্রণ দখল করেছেন এএ যোদ্ধারা।
সারাবাংলা/এনএস