অপুষ্টিতে ভুগছে গাজার শিশুরা, দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান ইউনিসেফ’র
৩ মার্চ ২০২৪ ০৯:৪৯
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে ১৪৮ দিন ধরে চলা যুদ্ধে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এমনকি দীর্ঘ সময় ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে না পারায় গাজায় খাদ্য ও ওষুধের সংকট তীব্র হয়েছে গাজায়। ইতোমধ্যে আনাহারে ১০ জন শিশুর মারা গেছেন। অনেক শিশু অপুষ্টিতে ভুগছেন। এ পরিস্থিতিতে দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। খবর আলজাজিরা।
এই আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ’র প্রধান ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন, ‘মারাত্মক’ অপুষ্টির সম্মুখীন গাজার শিশুদের জন্য এখন ‘প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
এদিকে পানিশূন্যতা ও পুষ্টিহীনতায় ভোগা নবজাতক শিশুদের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন গাজার চিকিৎসকরা। উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইমাদ দারদোনাহ বলেছেন, হাসপাতালের চিকিৎসকরা অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় ভোগা শিশুদের জন্য সর্বোচ্চ যা করতে পারে তা হলো— স্যালাইন বা চিনির দ্রবণ দেওয়া।
তিনি বলেন, মূলত খাদ্যের অভাবের কারণে এ অবস্থা হয়েছে। বিশ্বের কাছে আমার বার্তা হলো সব শিশুদের বাঁচানোর জন্য হস্তক্ষেপ করা। এই যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
রোববার (৩ মার্চ) মিশরে পুনরায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও যুদ্ধবিরতির কাছাকাছি থাকার দাবি করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এরপরও সম্ভাব্য ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির বিষয়টি এখনো অস্পষ্ট রয়ে গেছে।
গাজার রাফাহ, দেইর এল-বালাহ এবং খান ইউনিসে রাতভর বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে ইসরাইল। ওয়াফা নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানিয়েছে, গাজার রাফাহ শহরে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এ বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ছয়জন শিশুও রয়েছে।
ইসরাইলের হামলায় রাফাতে শরণার্থী শিবিরের তাঁবুতে বসবাসকারী ১১ জন নিহত হয়েছেন। এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, ইসরাইলি হামলা ছিল ‘আতঙ্কজনক এবং অবর্ণনীয়।’
এর আগে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গাজার হাসপাতালে অন্তত ১০ শিশু অনাহারে মারা গেছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। এই ঘটনাকে আরেকটি ‘দুঃখের শুরু’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ডব্লিউএইচও’র মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডমেয়ার।
গাজায় চলমান ইসরাইলের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩০ হাজার ৩২০ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে নারী ও শিশুদের সংখ্যাই বেশি। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ৭১ হাজার ৫৩৩ জন।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা আশ্চর্যজনকভাবে ইসরাইলে হামলা চালায়। এতে করে অন্তত ১ হাজার ২০০ ইসরাইলি নিহত হয়। এছাড়া ২৫৩ জনকে জিম্মি করে। এরপরই হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরাইল। তবে এই হামলায় নিরীহ ফিলিস্তিনিরাই নিহত হচ্ছেন।
সারাবাংলা/এনএস