সম্পত্তিতে নারীর সমঅধিকার নিশ্চিতের দাবি বিএনপিএসের
৭ মার্চ ২০২৪ ২২:১১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বৈষম্যমূলক উত্তরাধিকার আইনের কারণে নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না বলে মত এসেছে চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এক আলোচনা সভায়।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) চট্টগ্রাম কেন্দ্র আয়োজিত আলোচনা সভায় উত্তরাধিকারের সমতা প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হয়।
‘বৈষম্য-দারিদ্রের অবসান ও মানবাধিকার সুরক্ষাসহ উন্নয়নের গতি বৃদ্ধিতে চাই নারীর জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগ’— এ প্রতিপাদ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সংগঠনটি এ দিন সকালে নগরীর পাঁচলাইশে কারিতাস কার্যালয়ের মাঠে গণজমায়েতের আয়োজন করে। ‘নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধ করো’, ‘নারীর চলাফেরায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করো’, ‘সম্পদ-সম্পত্তিতে নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত করো’— এমন নানা স্লোগানে লেখা ফেস্টুন নিয়ে সেখানে জমায়েত হন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নারীরা।
সেখান থেকে বের হয় বর্ণাঢ্য র্যালি। এতে জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, এনজিও প্রতিনিধি, কমিউনিটি নেতা এবং তৃণমূলের নারীসহ শতাধিক লোক অংশ নেন। পরে কারিতাসের হলরুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ ও বাংলাদেশের সংবিধানে নারীর সমান অধিকার উল্লেখ আছে। কিন্তু বিদ্যমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, বৈষম্য ও পরিবেশগত বিপর্যয় নারীকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পতিত করছে। লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠা, নারীদের দারিদ্র্য ও বৈষম্য মোকাবিলায় বিএনপিএস প্রগতিশীল ব্যক্তি ও নানা সংগঠনকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘আমরা সম্মিলিতভাবে মনে করি, বাংলাদেশে এখনো বৈষম্যমূলক যে উত্তরাধিকার আইন বিদ্যমান, তার কারণে নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না। উত্তরাধিকারে সমতা প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সফল হবে না। উত্তরাধিকারে সমতা প্রতিষ্ঠিত হলে নারী পায়ের নিচে মাটি পাবে এবং তাদের প্রতি সমাজের সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।’
বিএনপিএস চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ফেরদৌস আহম্মদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন আকাশ কমিউনিটি ফোরামের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর মোস্তফা, রঞ্জন রশ্মি বড়ুয়া, প্রভাতি কমিউনিটি ফোরামের সভাপতি আনোয়ারা আলম, সদস্য রীনা বেগম, শ্যামলী শীল, প্রত্যাশা কমিউনিটি ফোরামের উপদেষ্টা শাহরিয়া রিয়াদ, বিএনপিএসের উন্নয়ন কর্মকর্তা এরশাদুল করিম, কর্মসূচি সংগঠক তপন কান্তি দে, তানজিনা নূর ও বিপ্লব দাশ।
এর আগে, একই স্থানে রূপান্তরিত যুব সদস্যদের অংশগ্রহণে ‘বাল্যবিবাহ রুখবই আমরা, যৌন হয়রানিকে না বলুন ও গৃহস্থালি কাজে পুরুষেরা অংশগ্রহণ করব’— এ বিষয়ে বক্তব্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৭ জন রূপান্তরিত যুব ও নারী সদস্য অংশ নেন। যুব সদস্য রিয়াজুল জান্নাহ মারজান প্রথম স্থান, সুমি আকতার দ্বিতীয় এবং জান্নাতুল ফেরদৌস বৃষ্টি তৃতীয় স্থান অর্জন করেন।
এরপর যুব দলের সদস্যদের অংশগ্রহণে বাল্যবিয়ে ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধ বিষয়ে নাটক প্রদর্শিত হয়।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর